লালমনিরহাট সদর উপজেলার একটি ভুট্টাখেতে পড়ে ছিল অজ্ঞাতনামা এক নারীর মাথাছাড়া লাশ। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার মোগলহাটের ফুলগাছের বামনটারী এলাকার ভুট্টাখেত থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। তবে নিহত নারীর মাথার খোঁজ পাওয়া যায়নি।

নিহত নারীর বয়স ২৫ বছর হবে বলে পুলিশের ধারণা। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে মোগলহাটের ফুলগাছের বামনটারী শ্মশান কালীমন্দির এলাকায় ভুট্টাখেতে মাথাবিহীন অজ্ঞাতনামা এক নারী লাশ পড়ে ছিল। তাঁর পরনে সবুজ পায়জামা, কালো রঙের বোরকা ও লাল রঙের কামিজ ছিল। পাশেই ছিল দুই জোড়া স্যান্ডেল। খবর পেয়ে দুপুরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।

লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ নুরনবী বলেন, মস্তকবিহীন অজ্ঞাতপরিচয় নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নিহত নারীর মাথা খুঁজে পাওয়া যায়নি। মাথার খোঁজে অনুসন্ধান চলছে। এ ঘটনায় লালমনিরহাট সদর থানায় একটি হত্যা মামলা হবে। আর লাশটির ময়নাতদন্ত করা হবে।

মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ গ্রামের বাসিন্দা মাসুদ রানা বলেন, নিহত নারীর মস্তক খুঁজে না পাওয়ায় পরিচয় শনাক্ত করা যাচ্ছে না। এলাকার লোকজন কোনো নারী নিখোঁজের বিষয়েও কোনো তথ্য পাননি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী

কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।

একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’

কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।

এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ