দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি বেসামরিক এলাকায় যুদ্ধবিমান থেকে ভুলবশত আটটি বোমা ফেলার পর সাতজন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে চারজনের অবস্থা গুরুতর। উত্তর কোরিয়ার সীমান্তবর্তী পোচিওন শহরে, স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৪ মিনিটে, বিমান বাহিনীর কেএফ-১৬ বিমান থেকে বোমাগুলো পড়ে।

দেশটির বিমান বাহিনীর যুদ্ধবিমান প্রশিক্ষণ মহড়ার সময় ভুলবশত ভুল স্থানে আটটি বোমা ফেলা হয়।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

আরো পড়ুন:

দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন গ্রেপ্তার

‘কমরেড’ পুতিনকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে যা বললেন কিম

পোচিওন কর্তৃপক্ষ বিবিসিকে জানিয়েছে, আটটি বোমার মধ্যে কেবল একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল বাকি সাতটি অবিস্ফোরিত বোমা নিরাপদে নিষ্ক্রিয় করার জন্য কাজ করছে। এলাকার কাছাকাছি বসবাসকারী বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

বিবিসিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে দক্ষিণ কোরিয়ার বিমানবাহিনী জানিয়েছে, “আমাদের কেএফ-১৬ (জেট ফাইটার) ভুলবশত এমকে-৮২ বোমার ৮টি শেল ফেলেছে। এটি ফায়ারিং রেঞ্জের বাইরে পড়েছিল।”

বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করে তারা আরো জানিয়েছে, “এ ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে।”

আসান ইনস্টিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজের একজন সামরিক বিশেষজ্ঞ এবং গবেষণা ফেলো ইয়াং উক বিবিসিকে বলেছেন, “পরিকল্পনার চেয়ে কম উচ্চতায় বোমা ফেলা হলে, বোমা বিস্ফোরিত নাও হতে পারে।”

ঘটনার ফলে একটি গির্জা ভবন এবং বেশ কয়েকটি ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারের প্রশিক্ষণটি মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে একটি যৌথ মহড়ার অংশ ছিল। দক্ষিণ কোরিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১০ মার্চ থেকে ২০ মার্চ পর্যন্ত যৌথ মহড়া পরিচালনা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ