বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির পরীক্ষা ও বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (বিজেএস) পরীক্ষার ফি কমানো এবং বিজেএসে নন-ক্যাডার পদ চালুর দাবিতে মানববন্ধন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আইন অনুষদের শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে আইন অনুষদের দুই বিভাগের (আইন বিভাগ, ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগে) শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

শিক্ষার্থীরা বলেন, বার কাউন্সিল পরীক্ষার প্রায় সাড়ে ৪ হাজার টাকা এবং বিজেএস পরীক্ষার ১ হাজার ২০০ টাকা ‘ফি’ সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল নয় এমন অনেক শিক্ষার্থী টিউশনি ও খণ্ডকালীন চাকরির মাধ্যমে পড়াশোনার খরচ চালান। এ ধরনের ‘উচ্চ ফি’ তাদের জন্য বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে। এটি আইন পেশায় প্রবেশের ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ ছাড়া, বিজেএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের জন্য বিসিএস পরীক্ষার মতো নন-ক্যাডার পদের সুযোগ চালুরও দাবি জানান শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে আইন বিভাগের শিক্ষার্থী নিপা রাণী বলেন, ‘আমাদের অনেক শিক্ষার্থী টিউশন বা পার্ট-টাইম (খণ্ডকালীন) চাকরির মাধ্যমে নিজেদের খরচ চালান। সাড়ে চার হাজার টাকা ফি দিয়ে পরীক্ষা দেওয়া আমাদের জন্য কঠিন। এই বৈষম্যমূলক ফি দ্রুত কমিয়ে ২০০ টাকার মধ্যে আনতে হবে।’

আইন বিভাগের শিক্ষার্থী মোশতাক আহমেদ বলেন, ‘অন্যান্য চাকরির পরীক্ষার মতো বিজেএসের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর প্রকাশ করতে হবে। এ ছাড়া নন-ক্যাডার পদের মাধ্যমে সাব-রেজিস্ট্রার, মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য আইনি সংস্থায় নিয়োগের সুযোগ তৈরি করতে হবে।’

শিক্ষার্থীরা বলেন, ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার স্বার্থে বার কাউন্সিলের পরীক্ষা ও বিজেএস পরীক্ষার ফি অবশ্যই কমাতে হবে। অন্যথায় পরীক্ষা বর্জনের মতো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

আরও পড়ুনবার কাউন্সিল পরীক্ষার ফি ৩০০ টাকা করার দাবি রাবির আইন অনুষদের শিক্ষার্থীদের১৩ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ র ফ আইন ব ভ গ

এছাড়াও পড়ুন:

‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) দ্রুত তফসিল ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার (৩০ জুলাই) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ‘হয় মোদের চাকসু দে, নইলে গদি ছাইড়া দে’, ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’, ‘চাকসু মোদের অধিকার, রুখে দেওয়ার সাধ্য কার’—এমন স্লোগান দেন। 

আরো পড়ুন:

আনাতোলিয়ান রোভার চ্যালেঞ্জে বিশ্বে তৃতীয় ইউআইইউ

জবির প্রভাবশালী আওয়ামীপন্থি ‘ক্যাডার’ শিক্ষকরা যেখানে আছেন

আইন বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাব্বির হোসেন রিয়াদ বলেন, “জুলাই মাসে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ হওয়ার ঘটনাগুলো আমাদের জানা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীও সে সময় শহীদ হয়েছিলেন। এই বিশ্ববিদ্যালয়েই সবার আগে চাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা ছিল, কিন্তু এখনও কোনো অগ্রগতি নেই। অথচ ডাকসু, রাকসু, জাকসুর তফসিল ঘোষণা হয়েছে।”

তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা অনুমোদনের বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এরপর আগস্টের প্রথম সপ্তাহেই তফসিল ঘোষণার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। “যদি তা না হয়, তাহলে আমরা দুর্বার ছাত্রআন্দোলনের দিকে যাব,” বলেন তিনি।

বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, “দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এরইমধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এতদিন রোডম্যাপ চেয়েছিলাম, এখন আর রোডম্যাপ নয়—তফসিল চাই।”

তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সমস্যার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সক্রিয় ছাত্র সংসদ। তাই আগামী আগস্টের প্রথম সপ্তাহে তফসিল এবং সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন চাই।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, “আগামী ১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভায় চাকসুর নীতিমালা চূড়ান্ত হলে নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণা করবেন।” 

চাকসু গঠনের ধারণা মূলত এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসুর আদলে। বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রসংসদ গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়।

১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম কেবিনেট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সর্বশেষ নির্বাচন হয় ১৯৯০ সালের ৮ মে। এই নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল বিজয়ী হয়েছিল। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে আর কোনো চাকসু নির্বাচন হয়নি।

২০২৫ সালে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হওয়ায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকসুর মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও চাকসু নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করছেন। 

ঢাকা/মিজানুর রহমান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অনশনের পর ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পেলেন ছয় সমন্বয়ক
  • জকসুর পথরেখা ও সম্পূরক বৃত্তির দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের আলটিমেটাম
  • জকসুর রোডম্যাপ ও সম্পূরক বৃত্তি দাবি শিক্ষার্থীদের
  • সোনারগাঁয়ে মাদ্রাসায় কমিটি গঠনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
  • রূপগঞ্জে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
  • ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন : হুশিয়ারী
  • না’গঞ্জে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মানববন্ধন, হুশিয়ারী
  • ‘ডাকসু হলো, রাকসু হলো, চাকসু কেন থেমে গেল’