ঢাকার দোহারে জমিসংক্রান্ত ঘটনার জেরে প্রতিপক্ষের বাড়িতে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আটটায় উপজেলার মুন্সিকান্দা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবার।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সুতারপাড়া ইউনিয়নের মুন্সীকান্দা মৌজায় আবদুর রব মোল্লা প্রায় ৩০ বছর ১২ শতাংশ খাসজমি দখল করে আসছিলেন। গত বছর স্থানীয় শেখ চুন্নু মিয়াসহ ৯ জন বাদী হয়ে ওই জমি দখলমুক্ত করতে একটি রিট করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন জমি দখলমুক্ত করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গতকার রাতে আবদুল কামাল, আবু কালাম, রাহিম, সুমন মোল্লা, রিফাত, আসলামসহ ২০-২৫ জনের একটি দল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শেখ চুন্নু মিয়ার বাড়িতে অতর্কিত হামলা করে। এ সময় তাঁর পরিবারের লোকজনকে মারধর ও বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়।

ভুক্তভোগী চুন্নু মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন বলেন, হামলাকারীরা ঘরের আলমারি থেকে টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় তিনি রব মোল্লাসহ ১১ জনের নাম উল্লেখ করে দোহার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

এ বিষয়ে জানতে জানতে অভিযুক্ত আবদুল কামালের সঙ্গে যোগযোগ করা হলেও তিনি মুঠোফোন ধরেননি। তাঁর স্ত্রী ফারজানা আক্তার বলেন, ‘কামাল এসব করেনি। তারা নিজেরাই এ ঘটনা ঘটিয়ে মামলার ষড়যন্ত্র করছে।’

দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ওই ঘটনায় চুন্নু মিয়ার ছেলে জাকির বাদী হয়ে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য গ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দরে বসতবাড়ি নির্মাণ কাজে বাধা ও প্রাননাশের হুমকি
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব