Prothomalo:
2025-06-16@09:02:01 GMT

রমজানের প্রথম ১০ দিনে করণীয়

Published: 8th, March 2025 GMT

দ্বিতীয় হিজরিতে পবিত্র কোরআনের আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ উম্মতের ওপর রমজানের রোজা ফরজ করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘রমজানের প্রথম দশক রহমতের, মধ্য দশক মাগফিরাতের আর শেষ দশক নাজাতের।’ প্রথম দশকে আল্লাহ বান্দার প্রতি রহমত নাজিল করেন। রমজান মাসের রহমতের দশকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। কপটতা না করে, মানুষের দোষত্রুটি অন্বেষণ না করে, রহমত-বরকত-মাগফিরাতের মাসে বেশি নেক আমল করতে হবে।

রহমতের মাস রমজানজুড়ে পাপ কাজ থেকে বিরত থাকা এবং নেক কাজে নিয়োজিত থাকা অনেক সহজ। তাই রমজানের রহমতের দশকে আল্লাহর অনুগ্রহ পেতে রোজাদারের করণীয় হলো: ১.

দিনের বেলা একনিষ্ঠতার সঙ্গে রোজা পালন করা। ২. জামাতে নামাজ আদায় করা। ৩. রাতের তারাবিহ ও তাহাজ্জুদের নামাজ পড়া। ৪. কোরআন তিলাওয়াত করা। ৫. দান-সদকা করা। ৬. ফিতরা ও জাকাত দেওয়া। ৭. আল্লাহর জিকির করা, তাকওয়া অর্জনে সচেষ্ট হওয়া।

রমজানে রহমত বা অনুগ্রহ পাওয়ার ঘোষণা রয়েছে, ‘যে ব্যক্তি বিশ্বাসের সঙ্গে সওয়াব বা প্রতিদান পাওয়ার নিয়তে রমজান মাসে রোজা রাখবে, তার বিগত জীবনের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।’

আরও পড়ুনঅবাধ্যতার শাস্তি১৩ মার্চ ২০২৪

রোজাদার যেন একাগ্রচিত্তে মহান আল্লাহর ইবাদত করতে পারেন, সে জন্য রমজানের প্রথম রাতেই অর্থাৎ প্রথম দশকে শয়তানকে বন্দী করা হয়। রহমতস্বরূপ রোজাদারেরা শুরু থেকে কোনো রোজা তাঁর জন্য কষ্টসাধ্য মনে হয় না। হজরত আবু হুরায়রা (রা.)–এর বর্ণনায় আছে যে রাসুল (সা.) বলেছেন, রমজানের প্রথম রাতে শয়তান ও অবাধ্য জিনগুলোকে বন্দী করা হয়। জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করা হয়। কোনো দরজা খোলা রাখা হয় না। জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। কোনো দরজা বন্ধ রাখা হয় না।’ (তিরমিজি, হাদিস: ৬৮২)।

জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়ার অর্থ হলো নেক আমল করা সহজ হয়ে যাওয়া। আর জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়ার অর্থই হলো বদ আমলের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়া। আর শয়তানকে শিকল দিয়ে বেঁধে ফেলার অর্থই হলো রমজানের আগে তারা স্বাধীনভাবে যথেচ্ছ বিচরণ করেছে এবং বান্দাকে কুমন্ত্রণা ও প্ররোচনা দিয়ে যে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে; রমজানের প্রথম রাতেই তাদের বন্দী করা হয়, যেন রোজাদারকে ধোঁকা ও প্রতারণা দিয়ে বিভ্রান্ত করতে না পারে।

আরও পড়ুনরমজানে ছয়টি অভ্যাস১৪ মার্চ ২০২৪রহমতের ১০ দিনে করণীয়

রমজান মাসের প্রথম ১০ দিন রহমতের বা দয়ার। সুতরাং এই ১০ দিন করণীয় হলো আল্লাহর দয়ামায়াসংক্রান্ত নামগুলো জেনে মুখস্থ করা। নামের বৈশিষ্ট্য জেনে আত্মস্থ করার চেষ্টা করতে হবে।

আল্লাহর দয়া, করুণা ও রহমতসুলভ নামগুলো হলো:

আর রাহমানু (অসীম দয়ালু), আর রাহিমু (পরম করুণাময়), আল ওয়াদুদু (প্রেমময়), আর রউফু (স্নেহশীল), আল আজিজু (মমতাময়), আল কারিমু (অনুগ্রহকারী), আস সালামু (শান্তিদাতা), আল মুমিনু (নিরাপত্তাদাতা), আল মুহাইমিনু (রক্ষাকর্তা), আল বাসিতু (করুণা বিস্তারকারী), আল মুইজজু (সম্মানদাতা), আল লাতিফু (করুণাকারী), আল মুজিবু (প্রার্থনা কবুলকারী), আর রাজ্জাকু (রিজিক দানকারী), আল ওয়াসিউ (দয়া প্রসারকারী), আল ওয়ালিয়্যু (পরম বন্ধু), আন নাফিউ (কল্যাণকারী), আল হাদিউ (পথের দিশারি), আন নাসিরু (সাহায্যকারী), আল হান্নানু (করুণাশীল), আল মান্নানু (দয়ার্দ্র) ইত্যাদি।

রমজানের প্রথম ১০ দিনে বা রহমতের ১০ দিনে করণীয় হবে ওই সব গুণ অর্জন করা এবং আচরণে ও ব্যবহারে এর প্রকাশ ঘটানো।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তুমি জগদ্বাসীর প্রতি দয়া করো, তবে আল্লাহও তোমার প্রতি দয়া করবেন।’ (বুখারি, মুসলিম ও তিরমিজি)

আরও পড়ুনরোজার প্রস্তুতি যেভাবে নেবেন১২ মার্চ ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: রমজ ন র প রথম র দরজ গ ল রহমত র ১০ দ ন আল ল হ করণ য়

এছাড়াও পড়ুন:

ফেলনা জিনিসের পণ্য রপ্তানি করে সাফল্য রহমতুল ইসলামের

কয়েক বছর আগেও পেঁপেগাছের ডালপালা বা নল ছিল ফেলনা। কাঁচা বা পাকা পেঁপে সংগ্রহের পর ছেঁটে দেওয়া ডালপালা পড়ে থাকত বাগানে। ফেলে দেওয়া এই ডাল এখন মূল্যবান রপ্তানি পণ্য। শুধু পেঁপের নলই নয়, আমগাছ ও নিমগাছের ফেলে দেওয়া চিকন ডাল, পাটচুন ঘাস, নীলকণ্ঠ ফুলের মতো ফেলনা জিনিস দিয়ে তৈরি হচ্ছে পোষা প্রাণীর খাবার ও খেলনা। এসব বিশেষায়িত পণ্য রপ্তানির বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রাও।

ফেলনা জিনিসকে রপ্তানি পণ্য বানানোর পথ দেখিয়েছেন দেশেরই একজন উদ্যোক্তা। এই উদ্যোক্তা হলেন রহমতুল ইসলাম। পোষা প্রাণীর খাবার ও খেলনা তৈরির জন্য মাগুরার প্রত্যন্ত গ্রাম জাগলায় কারখানা গড়ে তুলেছেন তিনি। সেখানে এসব পণ্য তৈরি করছেন গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত নারীরা। বোল্ড পার্টনারস লিমিটেড নামের এই কারখানায় প্রত্যক্ষ–পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থান হয়েছে ৫০০ জনের।

গ্রামের এই ব্যতিক্রমী কারখানা দেখতে নিয়মিতই আসছেন বিদেশি ক্রেতারা। সংখ্যা কত হবে? রহমতুল ইসলাম জানালেন, গত আট বছরে কারখানা দেখতে আসা বিদেশি প্রতিনিধিদলের সংখ্যা চার শ জনের কম হবে না। মুঠোফোনে কথা বলার সময় তিনি জানালেন, দক্ষিণ কোরিয়া থেকে একটি ক্রেতাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদল এখন তাঁর কারখানা ঘুরে দেখছে।

যেভাবে শুরু

মাগুরার সন্তান রহমতুল ইসলাম উচ্চমাধ্যমিক শেষ করে পড়াশোনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। সেখানে পড়াশোনা শেষ করে ব্যবসা শুরু করেন। একসময় যুক্তরাষ্ট্র থেকে জাপানে থিতু হন। তবে নিজের এলাকায় ব্যতিক্রমী কিছু করার তাড়না থেকে যায়। শুরুতে পোষা প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা থেকে প্রাণীর খাবার ও খেলনা তৈরির চিন্তা মাথায় আসে। এরপর দেশে ফিরে ২০১৮ সালে মাগুরার জাগলা গ্রামে চার–পাঁচজন কর্মী নিয়ে কাজ শুরু করেন। পোষা প্রাণীর দুই ধরনের খেলনা তৈরির মাধ্যমে শুরু হয় কারখানার কর্মযজ্ঞ। ওই বছর ফেব্রুয়ারিতে জাপানে প্রথমবারের মতো তিন হাজার মার্কিন ডলারের পোষা প্রাণীর খেলনা রপ্তানি করে প্রতিষ্ঠানটি।

চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় ধীরে ধীরে রপ্তানিও বাড়তে থাকে। প্রয়োজন পড়ে নতুন কর্মীর। কিন্ত তাঁদের দক্ষ করে তোলার জন্য দরকার প্রশিক্ষণ। প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করা হয় কারখানায়। কর্মী হিসেবে প্রাধান্য দেওয়া হয় সুবিধাবঞ্চিত নারীদের। কর্মযজ্ঞ বৃদ্ধির পর জাপান ও সিঙ্গাপুরের দুটি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ করে এই কারখানায়। প্রায় ২০ একর জমিতে কারখানার পাশাপাশি খাবার ও খেলনা তৈরির কাঁচামালের জন্য ঘাস ও গাছ রোপণ করেন তিনি। চাহিদা পূরণ না হওয়ায় এখন কাঁচামাল সরবরাহের জন্য প্রচারণাও শুরু করেছেন। ফেলনা জিনিস এনে বিক্রি করলেই নগদ টাকা দেওয়া হয়। এমন উদ্যোগে গ্রামের লোকজন ফেলনা জিনিস কুড়িয়ে বিক্রি করতে শুরু করেন কারখানায়। এমন সরবরাহকারীর সংখ্যাও এখন প্রায় ১০০।

পেঁপের নল, গাছের চিকন ডাল ও নানা রকমের ঘাস থেকে পোষা প্রাণির খাবার ও খেলনা তৈরি করছে মাগুরার বোল্ড পার্টনারস লিমিটেড। এসব পণ্য রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফেলনা জিনিসের পণ্য রপ্তানি করে সাফল্য রহমতুল ইসলামের