কথা বললেই রিমান্ড ও মামলার সংখ্যা বাড়ে বলে অভিযোগ করেছেন সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

সোমবার (১০ মার্চ) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন তিনি।

এদিন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় জুনাইদ আহমেদ পলককে দুপুর ১২টার পর কাশিমপুর কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। সেখান থেকে দুপুর পৌনে ২টার দিকে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে হাজির করা হয় জুনাইদ আহমেদ পলককে। তাকে হাজতখানায় রাখা হয়েছে।

শুনানিকালে জুনাইদ আহমেদ পলককে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালতে তোলা হবে।

প্রিজন ভ্যান থেকে হাজতখানায় নেওয়ার পথে জুনাইদ আহমেদ পলক সাংবাদিকদের বলেছেন, “কথা বললেই রিমান্ড আর মামলার সংখ্যা বাড়ে। পেছনে হ্যান্ডকাফ দিয়ে আটকে রাখে। কথা বলার অধিকার কি আমাদের আছে?”

জুনাইদ আহমেদ পলক এখন পর্যন্ত ৭৮টি মামলার আসামি বলে জানিয়েছেন তিনি। গত ৬ ফেব্রুয়ারি জুনাইদ আহমেদ পলককে দুদকের দায়ের করা এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

গত ১২ ডিসেম্বর জুনাইদ আহমেদ পলক ও তার স্ত্রী আরিফা জেসমিনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৯ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। মামলার তথ্য অনুযায়ী, জুনাইদ আহমেদ পলকের ২৪টি ব্যাংক হিসাবে ঘুষ, দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে ৩২ কোটি ৪ লাখ ৯৫ হাজার ৩১৪ টাকা জমা হয়। এর মধ্যে ২৯ কোটি ৮৪ লাখ ৭২ হাজার ৯৫ টাকা তুলে নেওয়া হয়। ২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত এসব টাকা লেনদেন হয়েছে।

গত বছরের ১৫ আগস্ট জুনাইদ আহমেদ পলককে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাকে বিভিন্ন সময়ে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার মামলায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

ঢাকা/মামুন/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

চলন্ত অবস্থায় বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম সড়ক চালু ফ্রান্সে

জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ছে। তবে এসব গাড়ি বাসা বা নির্দিষ্ট স্থানেই শুধু চার্জ করা যায়। ফলে দূরে ভ্রমণের সময় গাড়ির চার্জ শেষ হয়ে গেলে বিপদে পড়েন অনেকেই। এ সমস্যা সমাধানে তারের সংযোগ ছাড়াই বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করতে সক্ষম ১ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক’ চালু করেছে ফ্রান্স। প্যারিসের উপকণ্ঠে চালু হওয়া সড়কটিতে চলাচলের সময় বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক গাড়ি, বাস ও ভারী ট্রাকের ব্যাটারি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জ হয়ে যাবে।

বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার জন্য সড়কটিতে নিরবচ্ছিন্নভাবে ২০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। প্রয়োজনে সেটি ৩০০ কিলোওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, যা টেসলার ভি থ্রি সুপারচার্জারের মতো বিশ্বের দ্রুততম চার্জারগুলোর সমান শক্তি সরবরাহ করতে সক্ষম। এই সড়কের নিচে স্থাপন করা হয়েছে অসংখ্য তামার কুণ্ডলী। এসব কুণ্ডলী চৌম্বক ক্ষেত্র তৈরি করে, যা বিশেষ রিসিভারযুক্ত বৈদ্যুতিক গাড়িতে শক্তি স্থানান্তর করে। পদ্ধতিটি অনেকটা ওয়্যারলেস চার্জিং প্রযুক্তির মতো, যেখানে পাওয়ার ব্যাংক বা চার্জিং প্যাডে মোবাইল ফোন রেখে চার্জ নেওয়া হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে বিদ্যুৎ স্থানান্তর হওয়ায় ভারী বৃষ্টি, বরফ বা তুষারপাতেও চার্জিং প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যাঘাত ঘটে না। দ্রুত চার্জিং সুবিধার ফলে গাড়ি ও ট্রাক এখন দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে পারবে, মাঝপথে চার্জ নিতে থামার প্রয়োজন হবে না। ফলে গাড়িতে বড় ও ভারী ব্যাটারি বহনের প্রয়োজনীয়তা অনেক কমে যাবে।

এরেনা ইভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই স্বয়ংক্রিয় চার্জিং সড়কে মাত্র কয়েক মিনিট চললেই বৈদ্যুতিক গাড়ির রেঞ্জ বা চলার সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে। ফলে বৈদ্যুতিক গাড়ির দীর্ঘ যাত্রায় চার্জ ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা সমাধানে প্রযুক্তিটি নতুন সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। প্রযুক্তিটি যদি ব্যাপকভাবে চালু করা যায়, তবে তুলনামূলকভাবে হালকা, সাশ্রয়ী এবং কম ব্যাটারিসমৃদ্ধ বৈদ্যুতিক গাড়ি তৈরি করা সম্ভব হবে। এতে গাড়ির উৎপাদন খরচও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রিওনের তৈরি সড়কটির নকশাতেও রয়েছে বাড়তি সুবিধা। বৈদ্যুতিক গাড়ি চার্জ করার প্রযুক্তি রাস্তার ভেতরের অংশে থাকায় ক্ষয়ক্ষতির ঝুঁকি কম। ফ্রান্সের পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশজুড়ে প্রায় ৯ হাজার কিলোমিটার ওয়্যারলেস চার্জিং সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে, যাতে বৈদ্যুতিক যানবাহন চলাচল আরও সহজ, কার্যকর ও পরিবেশবান্ধব হয়ে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ