রিমান্ডে দুই আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ, অন্য দুজন এখনো পলাতক
Published: 10th, March 2025 GMT
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বা এক নারীকে (২০) দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার দুই আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। তবে দুই দিন অতিবাহিত হলেও এজাহারভুক্ত অন্য দুই আসামি এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।
এদিকে আজ সোমবার সকালে ভুক্তভোগী নারীর ফরেনসিক পরীক্ষা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) সমন্বয়কারী চিকিৎসক সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, তাঁর চিকিৎসা চলছে।
গত শনিবার দিবাগত রাতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পানগাঁও ঋষিপাড়া এলাকায় পরিত্যক্ত একটি বাড়িতে সাড়ে চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারীর চিৎকার শুনে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই বাড়িতে ছুটে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার ও জড়িত দুজনকে আটক করেন। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে কৌশলে পালিয়ে যান অভিযুক্ত আরও দুজন। এ ঘটনায় গতকাল রোববার সকালে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। এতে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের পানগাঁও বটতলা এলাকার আশরাফুল ইসলাম ওরফে সিয়াম (২০), জীত সরকার (১৯), মো.
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের জাজিরা পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন মিয়া বলেন, গ্রেপ্তার দুই আসামিকে রিমান্ডে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে ‘সারা দেশে নারীদের শ্লীলতাহানি ও হয়রানি বৃদ্ধি এবং মাগুরায় শিশু ও কেরানীগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে’ মানববন্ধন করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেরানীগঞ্জ উপজেলা। আজ বেলা ১১টার দিকে কেরানীগঞ্জের রামেরকান্দা এলাকায় সরকারি ইস্পাহানী কলেজ সড়ক এলাকায় এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এ ছাড়া সকালে কেরানীগঞ্জের আটি ভাওয়াল সড়ক এলাকায় পৃথক মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন আটি ভাওয়াল উচ্চবিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এল ক য়
এছাড়াও পড়ুন:
শিবচরে তরুণকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা, বিচারের দাবিতে মানববন্ধন
মাদারীপুরের শিবচরে জামিনে থাকা আসামি রাকিব মাদবরকে (২৫) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এতে ২২ জনকে এজাহারভুক্ত ও অজ্ঞাত আরও ৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় মামলাটি করেন।
এর আগে গত রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের প্রধান সড়কে একটি ব্যাংকের সামনে রাকিব মাদবরকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। রাকিব শিবচর উপজেলার চরশ্যামাইল এলাকার নাসির মাদবরের ছেলে। তিনি সরকারি বরহামগঞ্জ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক শেষ বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
দুই দিন পার হয়ে গেলেও এই ঘটনায় কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এর প্রতিবাদে আজ দুপুরে শিবচর পৌর বাজারের সদর রোডে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন। এ সময় বক্তারা বলেন, প্রকাশ্যে শত শত মানুষের সামনে হত্যাকাণ্ড কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। একটা সভ্য স্বাধীন দেশে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড হতে পারে না। হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার না করা হলে ভবিষ্যতে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবেন তাঁরা।
মামলার বাদী নিহত ব্যক্তির চাচি পারুল আক্তার বলেন, ‘রাকিবরে এতগুলো মানুষের সামনে কুপাইয়া মাইরা ফালাইলো। কেউ বাঁচাতে এগিয়ে আসলো না। যারা খুন করছে, তারা রাকিবের পূর্বশত্রু। আবুল কালাম সরদারের নির্দেশে তার লোকজন এই খুন করেছে। পুলিশ এ ঘটনায় কোনো আসামি এখন অবধি গ্রেপ্তার করে নাই। আসামিগো গ্রেপ্তার চাই, ফাঁসি চাই।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়নের চরশ্যামাইল গ্রামের আবুল কালাম সরদারের লোকজনের সঙ্গে নিহত রাকিব মাদবরের লোকজনের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত ৬ মে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে প্রতিপক্ষের হামলায় আবুল কালাম সরদারের ছেলে ইবনে সামাদ নিহত হন। ইবনে সামাদ হত্যা মামলার আসামি রাকিব সম্প্রতি জামিন নিয়ে জেল থেকে বের হয়ে এলাকায় আসেন। রোববার রাত আটটার দিকে শিবচর পৌর বাজারের একটি সড়কে দাঁড়িয়ে ছিলেন রাকিব। এ সময় ৪ থেকে ৫ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাকিবের মৃত্যু হয়।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রকাশ্যে হত্যার ঘটনায় ২২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্বজন ও স্থানীয় লোকজন মানববন্ধন করে এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবি করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
আরও পড়ুনশিবচরে হত্যা মামলায় জামিনে থাকা আসামিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫