কুষ্টিয়ার কুমারখালীর পদ্মা নদীতে সন্ত্রাসীদের হামলায় দুই এএসআই নিহতের ঘটনার প্রধান আসামি ইয়ারুল শেখকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে নিজ বা‌ড়ি থে‌কে পু‌লিশ তা‌কে গ্রেপ্তার ক‌রে। কু‌মারখালী থানার ও‌সি মো. সোলাইমান শেখ এ তথ্য জানান। 

গ্রেপ্তার ইয়ারুল শেখ কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বেড় কালোয়া গ্রামের মৃত বদর উদ্দিন শে‌খের ছে‌লে।

আরো পড়ুন:

বানিয়াচংয়ে নয় হত্যা মামলায় আ.

লীগ নেতা গ্রেপ্তার

নাটোরে অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ উদ্ধার

আরো পড়ুন: পদ্মায় নিখোঁজ আরেক পুলিশ সদস্যের মরদেহ উদ্ধার

পুলিশ জানায়, গত বছ‌রের ২৮ অ‌ক্টোবর (সোমবার) ভোরে আসামি ধর‌তে কুমারখালীর বেড় কালোয়া এলাকায় যান পুলিশ সদস্যরা। এসময় সন্ত্রাসীদের হামলায় নৌকা থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে নিখোঁজ হন কুমারখালী থানার এএসআই সদরুল আলম ও এএসআই মুকুল হোসেন। প‌র‌দিন দুপু‌রে সদরুল আলমের লাশ ঘটনাস্থল থেকে দুই কিলোমিটার দূরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এক‌দিন পর সকালে পাবনার সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ এলাকার পদ্মা নদী থেকে মুকুল হোসেনের লাশ উদ্ধার করে নাজিরগঞ্জ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা।

আরো পড়ুন: পদ্মায় নিখোঁজ এএসআইয়ের মরদেহ উদ্ধার, অভিযান অব্যাহত

এ ঘটনায় কুমারখালী থানার এসআই নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ইয়ারুল শেখসহ ৮ জনকে এজাহারভুক্ত আসামি করা হয়। একই ঘটনায় অ‌ভিযা‌নে পু‌লি‌শের সঙ্গে থাকা কয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ছানোয়ার হোসেন সেলিম বাদী হয়ে ৩৭ জনকে এজাহারনামীয় আসামি করে কুমারখালী থানায় আরেকটি মামলা করেন। দুটি মামলাতেই আরো ২০-২৫ জনকে নাম না জানা আসামি করা হয়েছে।

আরো পড়ুন: পদ্মায় দুর্বৃত্তদের হামলায় ২ পুলিশ কর্মকর্তা নিখোঁজ

কু‌মারখালী থানার ও‌সি মো. সোলাইমান শেখ ব‌লেন, ‍“ইয়ারুল দুই পু‌লিশ হত্যা মামলার ওয়া‌রেন্টভুক্ত প্রধান আসামি। তিনি বা‌ড়ি‌তে অবস্থান কর‌ছে এমন সংবা‌দের ভি‌ত্তি‌তে অ‌ভিযান চা‌লি‌য়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হ‌য়ে‌ছে। তার বিরু‌দ্ধে নাশকতাসহ আরো পাঁচ‌টি মামলা র‌য়ে‌ছে।”

ঢাকা/কাঞ্চন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ

সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়। 

গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’ 

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।

টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন। 

এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’ 

সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ