বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) এক শিক্ষার্থীকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীর নাম প্রাণেশ চৌধুরী। তিনি যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২০২১–২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। গত রোববার স্টুডেন্ট ডিসিপ্লিন কমিটির সদস্যসচিব ও ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তরের পরিচালক মো.

মাহবুবুল আলম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। এর আগে গত বৃহস্পতিবার স্টুডেন্ট ডিসিপ্লিন কমিটির ২৮৫তম সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে তৃতীয় বর্ষের টার্ম–২ থেকে চতুর্থ বর্ষের টার্ম–১ পর্যন্ত সব একাডেমিক কার্যক্রমে বহিষ্কার করা হলো। পাশাপাশি চুয়েটের সব যানবাহন ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাঁকে আজীবন বহিষ্কার করা হলো। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী যদি তাঁর আইনসম্মত অভিভাবকের উপস্থিতিতে ২০ মার্চের মধ্যে ৩০০ টাকার নন–জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কাজে অংশগ্রহণ না করার মর্মে মুচলেকা দেন, তবে চতুর্থ বর্ষের টার্ম–১–এর বহিষ্কারাদেশ স্থগিত থাকবে। কিন্তু ভবিষ্যতে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কোনো কাজে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে এ বহিষ্কারাদেশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী চাইলে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে একাডেমিক কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বরাবর শাস্তির বিষয়ে আপিল করতে পারবেন।

জানা যায়, গত বছরের ১১ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাতামুহুরি নামের বাসে এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি করেন প্রাণেশ চৌধুরী। এ ঘটনায় অভিযুক্তের শাস্তি দাবি করে ছাত্রকল্যাণ অধিদপ্তর বরাবর আবেদন করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর ষ র

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ