ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের পথনকশা (রোডম্যাপ) ২০ মার্চের মধ্যে ঘোষণার দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে উপাচার্যের কাছে দেওয়া স্মারকলিপিতে এ দাবি জানানো হয়।

এর আগে আজ বেলা তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। সেখানে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন আয়োজনের দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ডাকসু নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গড়িমসির অভিযোগ করেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার। তিনি বলেন, ‘আমরা যারা শিক্ষার্থীদের নিয়ে কাজ করি, তারা শিক্ষার্থীদের দাবি নিয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে কথা বলেই আসছি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ নিয়ে গড়িমসি দেখছি। কখনো জানুয়ারি আবার ফেব্রুয়ারিতে ডাকসু নির্বাচনের কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণা করা হয়নি।’

চার স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংগঠনগুলোর সহাবস্থান রয়েছে উল্লেখ করে বাকের মজুমদার এই চার বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানান।

এ সময় সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব জাহিদ আহসান, ঢাবি শাখার আহ্বায়ক আবদুল কাদের বক্তব্য দেন। পরে সেখান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

স্মারকলিপিতে ২০ মার্চের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা ও এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে ডাকসুর তফসিল ঘোষণার দাবি জানানো হয়। পথনকশা ঘোষণা করা না হলে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করা হয় স্মারকলিপিতে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ম রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ