পাচারকালে নারী ও শিশুসহ ১৮ রোহিঙ্গা উদ্ধার, দালাল আটক
Published: 13th, March 2025 GMT
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ায় সাগরপথে মালয়েশিয়া পাচারের সময় নারী ও শিশুসহ ১৮ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় নেজাম উদ্দিন (২০) নামে এক দালালকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার (১২ মার্চ) রাত ৮টার দিকে মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া ইউনিয়নের মধ্যম কচ্ছপিয়া এলাকায় এ অভিযান চালিয়ে এদের উদ্ধার করা হয় বলে জানিয়েছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।
আটক নেজাম উদ্দিন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের হাজমপাড়ার মোহাম্মদ হোসেন ওরফে লাল মোহাম্মদের ছেলে।
উদ্ধার হওয়া ১৮ জন রোহিঙ্গার মধ্যে ৫ জন শিশু, ১১ জন নারী ও ২ জন পুরুষ রয়েছেন। তারা উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ওসি গিয়াস উদ্দিন বলেন, “পুলিশ গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে, সংঘবদ্ধ দালাল চক্রের সদস্যরা কিছু রোহিঙ্গাকে সাগরপথে মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে জড়ো করছে। এরপর পুলিশের একটি দল সেখানে অভিযান চালায়।”
তিনি আরও বলেন, “অভিযানকালে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ১০-১৫ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তি পালানোর চেষ্টা করে। পুলিশ ধাওয়া দিয়ে একজনকে আটক করে এবং ১৮ জন রোহিঙ্গাকে উদ্ধার করে।”
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা তাদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে সেখানে নিয়ে আসে। পরে বুধবার রাতে তাদের সাগরপথে মালয়েশিয়া পাঠানোর জন্য ট্রলারে উঠানোর পরিকল্পনা করেছিল দালাল চক্রটি।
আটক ব্যক্তিসহ তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি।
ঢাকা/তারেকুর/টিপু
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে মাদক চোরাচালানের জন্য কক্সবাজার সীমান্ত প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মধ্যে উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দীন আহমেদ।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার শহরের বিজিবি সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব তথ্য তুলে ধরেন।
আরো পড়ুন:
টেকনাফে সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার ২
জাকসু নির্বাচনের ২ দিন আগে ডোপ টেস্ট নিয়ে যা বলছেন প্রার্থীরা
সংবাদ সম্মেলনে কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘‘নাফ নদী ও সাগরপথ হয়ে মহেশখালী, বাঁশখালী, কুতুবদিয়া, আনোয়ারা ও কুয়াকাটা দিয়ে ইয়াবা, ক্রিস্টাল মেথসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক দেশে প্রবেশ করছে। ধারণা করা হয়, মোট মাদকের প্রায় ৮০ শতাংশ আসছে সাগরপথে। আগে এটি শুধু অনুমান ছিল, বর্তমানে ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টের মাধ্যমে এ রুট ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তে বিজিবির কড়া নজরদারির কারণে বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহার বাড়ছে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত। তবে দুর্গম ভূখণ্ড ও দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা এ সীমান্তে নজরদারি কঠিন করে তুলেছে। গত ১৫ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত কক্সবাজার রিজিয়নের অধীনস্থ ব্যাটালিয়নসমূহ বিশেষ অভিযানে ২৮ লাখেরও বেশি পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৮১৬ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ, ১৬৮ ক্যান বিয়ার, প্রায় ৩৬৬ লিটার বাংলা মদ এবং ২ কেজি ৪২৫ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করেছে।’’
তিনি জানান, এ সব অভিযানে ১৮৮ জন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। উদ্ধারকৃত মাদকের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৮৯ কোটি টাকা।
তিনি আরো জানান, শুধু মাদক নয়, এ সময়ে বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদও উদ্ধার করেছে বিজিবি। এর মধ্যে রয়েছে দেশীয় এক নলা বন্দুক ৬টি, একে-৪৭ রাইফেল, এসএলআর, জি-৩ রাইফেল, বিদেশি রিভলবার ও গ্রেনেডসহ বিভিন্ন অস্ত্র রয়েছে। আটক হয়েছে ৫ জন অস্ত্রধারী আসামি। এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদের মূল্য ২২ লাখ টাকার বেশি।
বিজিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘‘সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত টহল, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে মাদক ও চোরাচালান দমনে বহুমাত্রিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’’
সংবাদ সম্মেলনে টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান, রামু ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী মাহতাব উদ্দিন আহমেদসহ বিজিবির অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/তারেকুর/বকুল