রোজা রেখে ইনহেলার ব্যবহার করা যাবে?
Published: 14th, March 2025 GMT
অনেকের শ্বাসকষ্টজনিত কারণে ইনহেলার ব্যবহার করতে হয়। ইনহেলারের মাধ্যমে মুখে যে স্প্রে করা হয়, এটি রোগীর পেটে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। কিন্তু এ কারণে রোজা ভঙ্গ হয় কিনা? ইসলামী চিন্তাবিদরা বলছেন, ‘‘ইনহেলার যদিও একটি গ্যাস বা বাতাসের মতো মনে করা হয়। তারপরেও এর অস্তিত্ব রয়েছে। যার ফলে দেখা যায় যে একটি কাঠের ওপর স্প্রে করলে সেটা ভিজে যায়। অতএব কেউ যদি ইনহেলার মুখের মুখের ভেতর স্প্রে করেন তাহলে গলা হয়ে মুখের ভেতরে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। তবে এতো সামান্য পরিমাণে যাবে যে সেটা নির্ণয় করা কঠিন। সুতরাং রোজা রেখেও ইনহেলার ব্যবহার করা যাবে।’’
লাইফস্প্রিং এর কনসালটেন্ট ডাঃ নওসাবাহ্ নূর একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে ইনহেলার ব্যবহারের সঠিক নিয়ম সম্পর্কে বলেন, প্রথমে দুইটি আঙুল দিয়ে ধরে মাউথ পিসটা খুলে নিতে হবে। এরপর তিন থেকে পাঁচবার ঝাঁকিয়ে নিতে হবে। ইনহেলারটা যদি রেসেন্টলি কেনা হয়ে থাকে তাহলে চাপ দিয়ে দেখবেন ওষুধ বের হচ্ছে কিনা। এরপরে বসে মাথাটা একটি পেছনের দিকে হেলিয়ে নেবেন। এরপরে শ্বাস ছেড়ে ইনহেলারটি মুখে নিতে হবে।’’
নাওসাবাহ্ আরও বলেন, ‘‘ইনহেলারটি মুখের ভেতর এমনভাবে নিতে হবে যাতে দুই দাঁতের ফাঁকের ভেতর থাকে। কিন্তু দাঁত দিয়ে এটা কামড়ে ধরবেন না। ঠোঁট দিয়ে সুন্দর করে মাউথপিসটা ধরবেন। এমনভাবে ধরবেন যাতে ওষুধ এবং বাতাস বাইরে বের হয়ে যেতে না পারে। এরপর ধীরে ধীরে বুক ভরে শ্বাস নেবেন। এতে করে পুরো ওষুধ আপনার ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়বে। ১০ সেকেন্ড শ্বাস ধরে রাখার পর ছেড়ে দেবেন।’’
আরো পড়ুন:
সংকট নিরসনে বিশেষ বিসিএসে নিয়োগ হবে ২ হাজার চিকিৎসক
রোজা রেখে কি চোখে ড্রপ দেওয়া যাবে?
ইনহেলার ব্যবহারের পরে অবশ্যই ভালো করে কুলি করে নেবেন। সঠিক নির্দেশনা পেতে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
ঢাকা/লিপি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে
মাদারীপুরে মেয়ে সুমাইয়া আক্তারের প্রেমের টানে চীনের নাগরিক শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসেছেন। বিয়ে করে বর্তমানে মাদারীপুরে শশুরবাড়িতে আছেন। ভিনদেশি যুবককে দেখার জন্য ওই বাড়িতে মানুষ ভিড় করছেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুরের সদর উপজেলার পাঁচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার বাসিন্দা সাইদুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার (১৯)। সুমাইয়া মাদারীপুর শহরের সরকারি সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা তিন বোন। সুমাইয়া বড়। মেঝ সাদিয়া আক্তার (১২) মাদ্রাসায় পড়ে। ছোট বোন আরিফা (৬)।
চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং এর ছেলে শি তিয়ান জিং (২৬)। তারা দুই ভাই। বড় শি তিয়ান জিং। তার চীনের সাংহাই শহরে রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে।
আরো পড়ুন:
‘একজন ছেলে মানুষ আমাদের পরিবারের বৌ হয়েছিল’
এক বিয়ের বরযাত্রী খেয়ে ফেলল অন্য বিয়ের খাবার
শি তিয়ান জিংকে টিকটকে দেখেন সুমাইয়া। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা আদান-প্রদান হয়। উভয়ই গুগলের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের ভাব আদান- প্রদান করেন। এক পর্যায় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। মাত্র চার মাসের প্রেমের সম্পর্কের সূত্র ধরে গত ২৪ জুলাই চীন থেকে বাংলাদেশ আসেন শি তিয়ান জিং। এরপর এক দিন ঢাকার একটি হোটেলে থাকেন। ২৬ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন।
সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম ও তার দুইজন আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে শি তিয়ান জিংকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইলে অনুবাদ করে কথা আদান-প্রদান করেন শি তিয়ান জিং। এরপর ২৭ জুলাই তারা বিয়ে করেন। এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সুমাইয়ার বাড়িতে মানুষ ভিড় করতে থাকে।
সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘‘টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউচ্যাটের মাধ্যমে কথা হয়। পরে দুজনেই প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ি। মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনো ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসছি। আমি বিশ্বাস করিনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি।’’
সুমাইয়া আক্তার আরো বলেন, ‘‘ও ওর মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। তারাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই শি তিয়ান জিং বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছেন।’’
সুমাইয়া বলেন, ‘‘এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। শি তিয়ান জিং এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এর মধ্যে আমার কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’
শি তিয়ান জিং বলেন, ‘‘বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে। তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।’’
সুমাইয়ার বাবা সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘‘শি তিয়ান জিং আমাদের এখানে আছে। ও খুব ভালো ছেলে। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। আমরা খুব খুশি।’’
পাঁচখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রুবেল হাওলাদার জানান, প্রথমে আদালতের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয়। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছু দিনের মধ্যে সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যাবে।
ঢাকা/বকুল