পাকিস্তানি অলরাউন্ডার আমির জামালকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে বিশাল জরিমানা করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। এই অলরাউন্ডার সহ বিভিন্ন সময়ে কোড অব কন্ডাক্ট লঙ্ঘনের দায়ে মোট ৮ জন ক্রিকেটারের জরিমাণা করেছে দেশটির ক্রিকেট বোর্ড।

এই আট জন ক্রিকেটারের মোট ৩০ লক্ষ রুপি জরিমানা করা হয়েছে। তবে আমিরের জরিমানার পরিমানটা অত্যন্ত বেশি। তাকে ১৩ লাখ রুপি জরিমানা বাবদ দিতে হবে। মজার ব্যাপার হচ্ছে এই অর্থ দন্ড হচ্ছে কেবল একটা সংখ্যার জন্য। সংখ্যাটা হচ্ছে ‘৮০৪’।

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানে সোনার দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ

৭৫ শতাংশ কমানো হলো পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি

জামাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট চলাকালীন এক সাক্ষাৎকার দেন। সেই সময় তার হ্যাটে ‘৮০৪’ লেখা ছিল। এই সংখ্যাটি পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খানের কয়াদি নাম্বার বা বন্দী শনাক্তকরণ নাম্বার। এই কিংবদন্তি অলরাউন্ডার বর্তমানে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে আটক আছেন রাজনৈতিক কারণে।

২০২৪ সালের নভেম্বরে পাকিস্তানের অস্ট্রেলিয়া সফরের সময় দলীয় হোটেলে দেরি করে পৌঁছানোর জন্য ৫ লাখ রুপি করে জরিমানা করা হয়েছে আরও তিনজন খেলোয়াড়কে। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় দলের সাদা বল সিরিজ চলাকালীন কারফিউ নিয়ম লঙ্ঘনের জন্য জরিমানা করা হয়েছে চারজন ক্রিকেটার, সালমান আলী আগা, সাইম আইউব, আবদুল্লাহ শফিক এবং আব্বাস আফ্রিদিকে।

পিসিবি জানিয়েছে যে, শৃঙ্খলা সংক্রান্ত পদক্ষেপগুলো একটি অভ্যন্তরীণ বিষয়, যা খেলোয়াড়দের খ্যাতি ও মর্যাদা রক্ষার স্বার্থেই করা হয়েছে। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ২০২৫ থেকে আগেভাগে পাকিস্তান বাদ পড়ার পরই এই ব্যাপারগুলো সামনে এসেছে। তারা ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হয়েও, একটি ম্যাচও জিততে পারেনি। নিউজিল্যান্ড এবং ভারতের কাছে পরাজিত হয়েছিল। অন্যদিকে বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের শেষ গ্রুপ পর্বের ম্যাচটি বৃষ্টিতে ভেসে যায়।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইমর ন খ ন

এছাড়াও পড়ুন:

গোপালগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন নামঞ্জুর

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পথসভাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে ১৮ জন শিশু রয়েছে। এর মধ্যে গত চার দিনে ১২ শিশুর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।

গতকাল বৃহস্পতিবার সাত শিশুর জামিন আবেদনের শুনানি হয়। গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) সৈয়দ আরাফাত হোসেন তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। এর আগে সোম ও মঙ্গলবার পাঁচ শিশুর জামিন আবেদন করা হয়। তাদের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। ওই পাঁচজনের জামিন আবেদন করা হয়েছিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে।

কারাগার সূত্র জানায়, গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের পর ১৭ ও ১৮ জুলাই জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ১৮ শিশুকে আটক করে পুলিশ। ১৮ জুলাই তাদের আদালতে হাজির করে গোপালগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। পরে ২১ জুলাই তাদের যশোরের পুলেরহাট শিশু-কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

আদালতের নথি অনুযায়ী, গ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বয়স, ঠিকানা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ নেই। তবে গতকাল পর্যন্ত ১২ শিশুর নাম ও পরিচয় শনাক্ত হয়েছে। প্রথম আলোর পক্ষ থেকে চার পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। অভিভাবকদের অভিযোগ, তাদের সন্তানদের কোনো ধরনের তদন্ত ছাড়াই আটক করা হয়েছে।

আরও পড়ুনগ্রেপ্তার হওয়া শিশুদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ২৭ জুলাই ২০২৫

একজন শিশুর বাবা বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটন, নিজেরাই সংসার চালাইতে পারি না। আমার কষ্ট দেখে ছেলে রাজমিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। সে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার রমজান শেখ নামের একটা রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করে। কাজের সময় পুলিশ তাদের ধরে নিয়ে যায়।’

আরেক শিশুর ভ্যানচালক বাবা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ, কোথাও কোনো কাইজের মধ্যে নেই। তিনডা ছেলে, বড়টা একটা মাদ্রাসার শিক্ষক। ছোট দুইডা এখনো পড়ে। যারে ধরছে, সে সবার ছোট। ওই দিন সকালে আমার মাদ্রাসায় গেছে, পরীক্ষা ছিল। পরে দুপুরের আগে আমি নিজে যাইয়ে নিয়ে আসছি। সেদিন বাড়িতেই ছিল। পরের দিনও সারা দিন বাড়ি ছিল, সেদিন তো কারফিউ ছিল। আসরের নামাজের পর আমার কাছ থেকে ২০ টাকা নিয়ে গেছে চটপটি খাইতে। পাশে মাদ্রাসার সামনেই চটপটির দোকান বসে। সেই হান দে ওরে ধইরে নিছে।’

ওই ব্যক্তি আরও বলেন, ‘ধরার ঘণ্টাখানেক পর থানা থেইকা ফোন দিছে, কয় ছেলে ধরা হইছে। আমরা থানায় গিয়া অনেক কইছি, ও তো কোথাও যায় না, কোনো গ্যাঞ্জামের ছেলে না। মাদ্রাসায় পড়ে। কিন্তু কেউ কিছুই শুনল না। ছেলেরে ছাড়ায় আনতে অনেক জায়গায় দৌড়াইছি।’ তিনি জানান, এ ঘটনার পর থেকে তাঁদের প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

এ ছাড়া জামিনের আশ্বাস দিয়ে কয়েকজন লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন একজন অভিভাবক।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় আরও একটি মামলা, আসামি ৪৭৭ জন৩১ জুলাই ২০২৫

গ্রেপ্তার এক শিশুর আইনজীবী ফিরোজা বেগম বলেন, ১৬ জুলাই সহিংসতার ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় এই শিশুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ১৭৩ ধারায় দ্রুত তদন্ত করে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

এ বিষয়ে সরকারি কৌঁসুলি তৌফিকুল ইসলাম বলেন, শিশুরা অল্প সময় আগে গ্রেপ্তার হয়েছে, এখনো তদন্ত চলছে। তাই হয়তো বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেছেন। এ মামলায় এখনো কারও জামিন হয়নি।

আরও পড়ুনগোপালগঞ্জে সংঘাতের ইঙ্গিত ছিল স্পষ্ট, নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন ১৮ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ