বসন্তের প্রকৃতি সেজেছে পলাশ, শিমুলসহ নানা ফুলের রঙে। এর সাথে রং লেগেছে রক্তকাঞ্চনেও। মৌলভীবাজার-ফেঞ্চুগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের পাশে রাজনগর উপজেলার নন্দীউড়া গ্রামের হীরা সেনের বাড়িতে শোভাবর্ধণের জন্য পথের ধার ঘেঁষে রোপণ করেন রক্তকাঞ্চনের গাছ। চলতি বসন্তে রঙিন হয়ে ফুটেছে কাঞ্চন। নজর কাড়া সেই ফুল দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন প্রকৃতি প্রেমীরা।

রক্তকাঞ্চনের বৈজ্ঞানিক নাম Bauhinia variegate.

Gi cwievi Fabaceae ইংরেজী নাম Camelos foot Tree. এটি গ্রীষ্মমন্ডলীয় বৃক্ষ। গাছ ১০ থেকে ১২ ফুট লম্বা হয়। মূল কাণ্ডের সাথে একাধিক কাণ্ড দেখা যায়। পাতাগুলো দেবকাঞ্চনের চেয়ে আকারে ছোট, গড়ন গোলাকার, আগার দিকে বিভক্ত। বীজ ও কলমে চাষ হয়। 

এর আদি আবাস ভারতীয় উপমহাদেশে। বাড়িতে এ বৃক্ষ শোভাবর্ধনকারী হিসেবে সমাদৃত। তবে পার্ক ও সড়কের দুধারেও লাগানো হয় ওই গাছ। ফুল ফুটলে এ কাঞ্চনের রূপে বিমোহিত হয় মানুষ। বসন্তে প্রায় নিষ্পত্র গাছ গোলাপি-বেগুনি রঙের ফুলে ছেয়ে থাকে। তার পাঁচটি পাপড়ির মধ্যে একটি বড় ও গাঢ় রঙের, তাতে রয়েছে কারুকার্যতা এর ফল শিমের মতো।

রক্তকাঞ্চনের একটি সাদা ফুলের জাতও আছে, ভারি সুন্দর। এলাকায় গেলে দেখা হয় পথচারী কামরান আহমদের সাথে তিনি বলেন, “বসন্তে নানা ফুলে প্রকৃতি সাজে। এর মধ্যে রক্তকাঞ্চন ফুলটা আলাদা ধরনের, দেখতে মনোহরী।”

এসময় কথা হয় এলাকার জুয়েল মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, “হরেক রকম ফুল প্রকৃতিতে দেখা যায়। কিছু কিছু ফুল মানুষের মন ভরে দেয়। নন্দীউড়া গ্রামের হীরা সেনের বাড়ির প্রবেশ পথ দিয়ে যেতে যেতে পাশে চোখ পড়লে মনে হবে অতিথিকে অর্ভ্যথনা জানাতে রক্তকাঞ্চনের দু’টি গাছ দাঁড়িয়ে আছে।”

হীরাসেন বলেন, “বাড়ির শোভাবর্ধনের জন্য দু’টি গাছ কয়েক বছর আগে রোপন করি। এবার রক্তকাঞ্চনের ফুল ফুটেছে। এছাড়াও আমার বাড়িতে আরো অনেক জাতের ফুল গাছ রয়েছে। বিভিন্ন পূজা-পার্বণে বিভিন্ন ধরনের ফুল প্রয়োজন হয়, তাই অনেক জাতের ফুল গাছ লাগাই। রক্তকাঞ্চন অনেকটা বিলুপ্তির পথে। আগের মত এর দেখা মেলে না।”

ঢাকা/আজিজ/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বসন ত

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ