কমলগঞ্জে একে একে পাহাড়ি টিলা কেটে সাবাড় হচ্ছে। টিলা কেটে মাটি বিক্রি, বসতবাড়ি নির্মাণ, আবাদি জমি ও রাস্তাঘাট তৈরিসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে। টিলা কাটা ছাড়াও কৃষিজমির উর্বর মাটি কাটার হিড়িক চলছে। টিলাকাটা ও মাটি পরিবহনের কাজ বেশি চলছে রাতে।
সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের পাহাড়ি টিলাঘেঁষা বরচেগ গ্রাম। এই গ্রামের কেউ কেউ টিলা কেটে বসতবাড়ি নির্মাণ করেছেন। আবার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা টিলা কেটে লাল মাটি বিক্রি করছেন। টিলা কেটে সমতল অংশে কেউ বসতঘর তৈরি করছেন, কেউ করছেন রাস্তা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, টিলা কেটে মাটি বিক্রি করায় বসতঘর ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় ১২টি পরিবার। স্থানীয় বাসিন্দা ওয়াতির মিয়া বসতঘর তৈরির জন্য টিলার প্রায় চার শতক ভূমিতে মাটি কেটেছেন।
তবে ওয়াতির মিয়ার দাবি, এই টিলা তাঁর। 
নিচে ঘর নির্মাণের জন্য তিনি টিলার সামান্য  অংশ কেটেছেন। তবে এখন আর টিলা কাটা হচ্ছে না। তিনি না বুঝে টিলার কিছু অংশ কেটেছেন, আর কাটবেন না। যেটুকু অংশ কেটেছেন, তা ভরাট করে দেবেন।
স্থানীয়রা বলছেন, আইন লঙ্ঘন করে ওয়াতির মিয়া তাঁর টিলা থেকে মাটি কেটে বিক্রি করছেন। তিনি যেভাবে টিলার মাটি কেটেছেন, তা ঠিক হয়নি। যে কোনো সময় মাটি ধসে পড়তে পারে। ব্যক্তি মালিকানাধীন টিলা হলেও পরিবেশ আইন অমান্য করে কেউ টিলা কাটতে পারে না।
এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার জেলা অফিসের সহকারী পরিচালক মো.

মাঈদুল ইসলাম বলেন, ‘এসব বিষয়ে আমার জানা নেই। ইউএনওর সঙ্গে কথা বলেন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন, তহশিলদারকে সরেজমিন পাঠানো হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: করছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক। 

 এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”

বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।” 

চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”

ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।” 

হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে। 

গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।

কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”

ঢাকা/রাঙামাটি/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বন্দরে বসতবাড়ি নির্মাণ কাজে বাধা ও প্রাননাশের হুমকি
  • ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব