Samakal:
2025-05-01@09:26:09 GMT

শঙ্খচিলের বাড়ি কই

Published: 17th, March 2025 GMT

শঙ্খচিলের বাড়ি কই

লাল-নীল আলোকবাতির শহর। সূর্যের আয়ু ফুরানোর আগেই এ শহর আলোকিত হয় নানা রঙে। দিবারাত্রি এক করে অসহ্য ছুটে চলা। শিকড়হীন এই ছুটে চলা। যেখানে সবটাই অনিশ্চিত। উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরুতেই সুপ্ত স্বপ্নগুলো গা-ঝাড়া দিয়ে ওঠে। হাজার কাঠখড় পুড়িয়ে একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নিজের পরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত করা। যুক্ত তো হলো, এবার বাড়ি ছাড়ার পালা। একবার যে এই বাড়ি ছাড়ল, তার আর বাড়ি ফেরা হলো না। নতুন শহর, হাজারো নতুন মানুষের ভিড়ে নিজেকে বড্ড অসহায় অনুভব হতে থাকে। তারপর ক্যাম্পাসে আসতেই সিনিয়র-জুনিয়র ফ্যাক্ট। পরিবার-পরিজন ছেড়ে নতুন শহরে আসা মানুষটার অসহায়ত্বে যেন দূর থেকে চোখ রাঙানো। 
দিন যায়, মাস যায় শঙ্খচিল নিজেকে মানিয়ে নিতে থাকে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে। কর্মব্যস্ত দিনগুলোর শেষাংশে সে যেন সূর্যের দীর্ঘায়ু কামনা করতে থাকে। কারণ দিনশেষে মেস, হোস্টেল কিংবা হলের প্রাচীন দেয়ালগুলো তাকে বড্ড কোণঠাসা করে তোলে। একাকিত্বের চরম উপলব্ধি অনুভব করায় কর্মব্যস্ত দিন, দিনের পর রাত এক বাধ্যতামূলক ছুটে চলা। হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তখন মায়ের স্নেহের আঁচল, বাবার যত্ন, পরিজনের অতিরিক্ত করা ব্যাপারগুলোর অবাধ প্রয়োজনীয়তা অনুভব হয় আর নিজেকে জগতের সবচেয়ে অসহায়বোধ হতে থাকে। চলতি পথে সঙ্গী হয় অনেকে কিন্তু আপনজন পাওয়া এই চাকচিক্যে মুশকিল। অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ একসঙ্গে নিয়ে চলা। উপলব্ধির বয়সে মানসিক চাপে জর্জরিত হয়ে পড়ে সবাই। কখনও কখনও বোধ হয় নিঃশ্বাসটাও যেন রুটিনের গ্যাঁড়াকলে পড়েছে। হতাশা, ক্লান্তি, মানসিক চাপের সঙ্গে যুক্ত হয় অর্থনৈতিক চাপ– সর্বোপরি লোকসমাগমে থেকেও একাকিত্বের যে ব্যাপারটা।
অনিশ্চিত এক ঘরের খোঁজে শঙ্খচিল হয় বাড়িছাড়া। সেই কাঙ্ক্ষিত ঘর কি সে পাবে? নাকি সহস্রের মতো ঝরে পড়বে সভ্যতার অতল গহ্বরে? এই উত্তর কেউ জানে না। 
এভাবেই দিবারাত্রি এক হয়ে যায় অনিশ্চিত ঘরের খোঁজে। শঙ্খচিলের আর বাড়ি ফেরা হয় না। v
সুহৃদ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

গানের ভুবনে লিজার অন্তহীন পথচলা

শীর্ষ তারকা হওয়ার দৌড়ে কখনও অংশ নিতে দেখা যায়নি তাঁকে। যদিও ২০০৮ সালে ‘ক্লোজআপ ওয়ান: তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় সেরা শিল্পীর মুকুট মাথায় উঠেছিল, তবু ধীরলয়ে পথ হেঁটে গেছেন। নিজের কাজে অতিমাত্রার উচ্ছ্বাসও দেখাননি কখনও। নীরবে নিভৃতে কাজ করে গেছেন সবসময়। গানে গানে কুড়িয়ে চলেছেন শ্রোতার ভালোবাসা। এ কারণে সমসাময়িকদের চেয়ে আলাদা করে তাঁকে চিনে নেওয়া যায়। বলছি, কণ্ঠশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজার কথা। গানের ভুবনে অন্তহীন পথচলায় যিনি এরই মধ্যে পেরিয়ে এসেছেন প্রায় দেড় যুগের পথ। সমান জনপ্রিয়তা নিয়ে এ দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার রহস্যটা কী? শুরুতে যখন এ প্রশ্ন লিজার সামনে তুলে আনা হলো, তখন দেখা গেল, লিজা নিজেই এর উত্তর খুঁজতে বসে গেছেন। এ পর্যায়ে হেসে বললেন, ‘না, এর উত্তর সত্যি জানা নেই। আসলে আমি তো গান গাই শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণ আর ভালোবাসা কুড়ানোর জন্য। হ্যাঁ, শিল্পীসত্তাকে খুশি রাখতে গানের চর্চা ধরে রেখেছি বললে ভুল হবে না। তারপরও প্রতিটি আয়োজনে শ্রোতার ভালোলাগা, মন্দলাগাকে প্রাধান্য দিয়েছি। এতে করে কতটুকু জনপ্রিয়তা পেয়েছি। সেই জনপ্রিয়তা শুরু থেকে একই রকম আছে কিনা– সেটি তো শ্রোতারা ভালো বলতে পারবেন।’ লিজার এ কথা থেকে বোঝা যায়, যাদের কারণে শিল্পীজীবন বেছে নেওয়া, সেই শ্রোতা তাঁর দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। সেখানে তাঁর গানগুলো ছিল চালিকাশক্তি। তবে ১৭ বছরের সংগীতের এ পথচলায় লিজার কণ্ঠে মেলোডি গান বেশি শুনতে পাওয়া গেছে। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই দেড় যুগে নানা ধরনের গান গেয়েছি, তবু কেন জানি শ্রোতারা আমাকে মেলোডি গানের শিল্পীদের দলে রেখে দিয়েছেন। অস্বীকার করব না যে, আমার কণ্ঠে যে ধরনের গান ভক্তরা বেশি শুনতে চান, সে ধরনের গান বেশি গাই। এটিও ঠিক যে, মেলো কিংবা স্যাড-রোমান্টিক গানের প্রতি শ্রোতার ভালোলাগা সবসময় ছিল। এখনও অনেকে মেলোডি ছাড়া গানের কথা ভাবতে পারেন না। এজন্য নিরীক্ষাধর্মী কাজ করলেও আমি চাই না মেলোডি থেকে কখনও দূরে সরে থাকতে। তাই মেলোডি গান যেমন গাইছি, তেমনি গানের নিরীক্ষাও চালিয়ে যাচ্ছি।’ লিজার এ কথা যে মিথ্যা নয়, তা সর্বশেষ প্রকাশিত গানগুলোর শুনলে প্রমাণ মেলে। ক’দিন আগে বিটিভির ‘বৈঠকখানা’ অনুষ্ঠানে ক্লোজআপ ওয়ান তারকা মুহিনের সঙ্গে গাওয়া ‘তোমার নামে’ গানে যে লিজাকে শ্রোতা আবিষ্কার করবেন, তার সঙ্গে মেলানো কঠিন হবে সামজ ও রিজানের সঙ্গে ‘তিতা কথা’ গানের লিজাকে। আরেকটু পেছন ফিরে তাকালে দেখা যাবে, ‘খুব প্রিয় আমার’, ‘তুমি এলে’, ‘পূর্ণিমা চাঁদ’ গানগুলোয় লিজা অতীতের গায়কীকে ছাপিয়ে কীভাবে আরও নতুন হয়ে নিজ কণ্ঠ তুলে এনেছেন। 

মাঝে কিংবদন্তি শিল্পীদের বেশ কিছু কালজয়ী গানের রিমেকে কণ্ঠ দিয়েও প্রশংসা কুড়িয়েছেন সংগীতবোদ্ধাদের। স্টেজ শো, রেডিও, টিভির আয়োজন থেমে শুরু করে সিনেমার প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে প্রমাণ দিয়েছেন, তিনি অন্যদের চেয়ে কোনোভাবে পিছিয়ে নন। এককথায়, বহমান সময়টিকে সুরেলা করে রেখেছেন অনিন্দ্য কণ্ঠ জাদুতে। 

আগামীতেও লিজার কণ্ঠ বাতাসে ভেসে বেড়াবে– এ অনুমান করা যায়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মিষ্টি মেয়ের গল্প
  • চেন্নাইয়ের ঘরে বিষাদের বাজনা, ধোনির চোখে বিদায়ের আভা
  • গানের ভুবনে লিজার অন্তহীন পথচলা
  • চিনি-লবণের অনুপম পাঠ
  • শততম ম্যাচটি স্মরণীয় করে রাখতে চান ইয়ামাল
  • নির্মাতার ঘোষণার অপেক্ষায় চিত্রাঙ্গদা
  • শিশুর মাথা ঘামে কেন
  • কাঠফাটা রোদ্দুরে তপ্ত হাওয়া