‘হয়নি যাবারও বেলা’, ‘সরলতার প্রতিমা’, ‘আবার দেখা হবে’র মতো অসংখ্য জনপ্রিয় গানের শিল্পী খালিদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১৮ মার্চ। একেবারে নিরবে নিভৃত কাটছে তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী। গত এই দিনে বছর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।
খালিদের জন্ম ১ আগস্ট ১৯৬৫ গোপালগঞ্জে। জন্ম নেওয়া শিল্পী খালিদ ১৯৮১ সালে গানের জগতে যাত্রা করেন। ১৯৮৩ সালে ‘চাইম’ ব্যান্ডে যোগ দেন। খালিদ মূলত দুই সত্তার একজন চাইম ব্যান্ডের খালিদ, আরেকজন ব্যক্তি খালিদ। খালিদের প্রথম অ্যালবামটি বের হয়েছিল, সেটি নাম ছিল ‘চাইম’।
তাতে গান ছিল ‘নাতিখাতি বেলা গেল’, ‘তুমি জানো না রে প্রিয়’, ‘কীর্তনখোলা নদীতে আমার’, ‘এক ঘরেতে বসত কইরা’, ‘ওই চোখ’, ‘সাতখানি মন বেজেছি আমরা’, ‘আমার জন্য রেখো একটা গান’সহ আরও দুটি ইংরেজি গান। সেই অ্যালবামের ‘নাতিখাতি বেলা গেল’ গানটি ছিল যশোরের কবি হাফিজুর রহমানের লেখা। সুর সংগ্রহ করা হয়েছিল অন্য জায়গা থেকে। সে সময় গানটি তুমুল জনপ্রিয়তা পায়; আর খালিদ হয়ে ওঠেন তরুণ প্রাণের ক্রেজ।
খালিদের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে ফেরদৌস ওয়াদি বলেন, ‘খালিদের মায়াবী কণ্ঠ যে এত তাড়াতাড়ি নিস্তব্ধ হয়ে যাবে তা কখনই ভাবনার মধ্যে ছিল না। কী সুন্দর একটা মিষ্টি কণ্ঠ হারিয়ে গেল। তাঁকে আল্লাহ শান্তিতে রাখুক-এ দেয়াই চাইছি’।
জীবনের শেষ প্রান্তে এসে খালিদ একেবারেই গান থেকে যেন দূরে সরে যান। বেছে নেন প্রবাস জীবন। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস করতেন। তাঁর এক ছেলে সেখানে পড়াশোনা করেন। খালিদ মাঝেমধ্যে দেশে এলেও একাই থাকতেন। নিজের গণ্ডির বাইরে খুব একটা বের হতেন না। কিছুদিন থাকতেন, ফের উড়াল দিতেন প্রবাসে। এবারও এলেন, কিন্তু আর প্রবাসে ফেরা হলো না। চলে গেলেন অনন্তের পথে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
স্বামী-সন্তানের সঙ্গে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন, মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে বাসের চাকায় মৃত্যু নারীর
চট্টগ্রামের পটিয়ায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ার পর বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম ফজিলাতুন নেসা (২৮)। তিনি মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থানার মহেশপুর গ্রামের আলিমুজ্জামান সুজনের স্ত্রী।
পুলিশ জানায়, স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে গতকাল রোববার চট্টগ্রামে বেড়াতে আসেন ফজিলাতুন নেসা। তাঁদের ছয় বছর বয়সী সন্তানও সঙ্গে ছিল। গতকাল চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটের একটি বাসায় তাঁরা রাত্রিযাপন করেন। সকালে সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে তাঁরা বান্দরবানের উদ্দেশে রওনা দেন। আলিমুজ্জামান মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন এবং তাঁর পেছনে ছয় বছর বয়সী সন্তান হুমায়ের হাম্মাদ, এরপর ফজিলাতুন নেসা বসে ছিলেন।
সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ার নয়াহাট এলাকায় পৌঁছায় মোটরসাইকেলটি। সেখানে সামনে থাকা একটি লেগুনা হঠাৎ সড়কে থেমে গেলে তাৎক্ষণিক মোটরসাইকেলটির ব্রেক কষেন আলিমুজ্জামান। এ সময় ফজিলাতুননেসা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। এর পরপরই পেছন থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস ফজিলাতুন নেসাকে পিষ্ট করে। তাঁকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল রাতে চট্টগ্রাম নগরের যে বাসাটিতে ফজিলাতুন নেসা ছিলেন, সেটি তাঁর স্বামী আলিমুজ্জামানের বন্ধু রবিউল ইসলামের। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রবিউল ইসলামের বোন আশরিফা আহমদ ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ফজিলাতুন নেসার স্বামী নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক। পরিবার নিয়ে পাহাড় দেখতে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন তিনি। বেড়াতে যাওয়ার পথেই স্বামী-সন্তানের সামনে দুর্ঘটনায় তাঁর প্রাণহানি হয়েছে।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট ওয়াসিম আরাফাত দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিহত নারীর লাশ আইনি–প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। লেগুনা ও বাসের চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি।