চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ছুরিকাঘাতে নিহত এক যুবকের জানাজা শেষে এ ঘটনায় হওয়া মামলার প্রধান আসামির ঘরে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। আগুন দেওয়ার আগে ঘরটিতে ব্যাপক ভাঙচুরও করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার পরৈকোড়া ইউনিয়ন পূর্ব কৈন্যারা গ্রামের ভেন্ডারঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার রাতে ছুরিকাঘাতে নিহত হন মোহাম্মদ মানিক নামের এক ব্যক্তি। এ ঘটনায় গতকাল বিকেলে আনোয়ারা থানায় তাঁর ভাই মোহাম্মদ বাবুল বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় মো.

রাসেল (৩৬) নামের এক ব্যক্তিকে প্রধান আসামি করা হয়।

এ ছাড়া মোহাম্মদ নয়ন (৩২) নামের আরেকজনের নামোল্লেখ করে আসামি করা হয় অজ্ঞাতপরিচয় দু-তিনজনের বিরুদ্ধে। নিহত ব্যক্তির ময়নাতদন্ত ও মামলার পর সন্ধ্যা সাতটার দিকে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা আসামি রাসেলের ঘরে গিয়ে ভাঙচুরের পর আগুন লাগিয়ে দেন। ঘটনার সময় রাসেলের ঘরে তাঁর পরিবারের কোনো সদস্য ছিলেন না।

আনোয়ারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, মামলার এক আসামির ঘর পুড়িয়ে দেওয়ার খবর শুনে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছেন। ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগের আলোকে এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদপুরে জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা, হাসপাতাল বন্ধ

চাঁদপুর পৌর কবরস্থানে নবজাতক দাফনের সময় নড়ে ওঠা এবং পরবর্তীতে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তার হয় শহরের তালতলা দি ইউনাইটেড হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় ফারুক হোসেন গাজী (৪৫)। এই ঘটনায় আগামী দুই দিনের মধ্যে রোগীদের অন্যত্র স্থানান্তর করে হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় দি ইউনাইটেড হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন হাসপাতালটিতে নানা অবৈধ কার্যক্রম চলে আসছে। ওই নবজাতকের জন্মও হয় এই হাসপতালে। জীবন্ত নবজাতক দাফনের চেষ্টা করার ভিডিও ভাইরাল হলে বিষয়টি নজরে আসে প্রশাসনের এবং পুলিশ সুপারের নির্দেশে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) নবজাতককে কবরস্থানে নিয়ে আসা ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজীকে গ্রেপ্তার করে।

এই ঘটনায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা করেন পৌর কবর স্থানের কেয়ারটেকার মো. শাহজাহান মিয়াজী।

এদিকে দি ইউনাইটেড হাসপাতালে এ ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বাপ্পি দত্ত রনি বলেন, “হাসপাতালে এসে ব্যবস্থাপনায় জড়িত কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করেও কোন সাড়া মিলেনি। চিকিৎসক নেই, হাসপাতালের প্যাথলজি ও ওটির সঠিক পরিবেশ নেই। একই সাথে পোস্ট অপারেটিভ রোগীর জন্য কোন সুব্যবস্থা নেই এবং হাসপাতালের কাগজপত্রও নবায়ন নেই।”

তিনি আরো বলেন, “প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা এবং ওটি, প্যাথলজি ও সংশ্লিষ্ট কক্ষ সীলগালা করা হয়েছে। একই সাথে রোগীদেরকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্য স্থানে সেবার ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমাদের অভিযানে পরিচালিত কার্যক্রম সিভিল সার্জন বরাবর প্রদান করা হবে। সিভিল সার্জন হাসপাতালের নিবন্ধন বাতিলসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে পারবেন।”

এ ভ্রাম্যমাণ আদালতে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান। অভিযানে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন।

অপরদিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত শেষে হাসপাতালের ড্রাগ সনদসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরীক্ষা করে দেখেন জেলা মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মু. মিজানুর রহমান।

ঢাকা/অমরেশ/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ