নরসিংদীর চরাঞ্চলে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন নিহত
Published: 21st, March 2025 GMT
নরসিংদীর রায়পুরার চরাঞ্চলে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার ভোরে উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নে মোহিনীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পূর্ব বিরোধের জেরে দুই পক্ষ আগ্নেয়াস্ত্র ও টেঁটা নিয়ে পরস্পরের ওপর হামলা করে।
নিহত দুজন হলেন উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নে মোহিনীপুর গ্রামের খোরশেদ মিয়ার ছেলে আমিন মিয়া (২৩) ও আবদুল বারিকের ছেলে বাশার মিয়া (৩৫)।
এ সম্পর্কে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদিল মাহমুদ বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। তাঁদের লাশ রায়পুরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হচ্ছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা খান নুরউদ্দীন মো.
স্থানীয় সূত্র জানায়, মোহিনীপুর গ্রামে দীর্ঘদিন ধরেই আধিপত্য বিস্তার ঘিরে স্থানীয় ইউপি সদস্য সামসু মিয়ার সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালামের বিরোধ চলে আসছে। প্রায়ই দুই পক্ষের অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এর আগে সংঘর্ষে আবদুস সালামের অনুসারীরা হেরে গিয়ে এলাকা ছাড়েন। ঈদ সামনে রেখে আজ শুক্রবার ভোরের দিকে তাঁরা এলাকায় ফিরছিলেন। এ সময় ইউপি সদস্য সামসু মিয়ার লোকজন তাঁদের বাধা দেন। এ সময় দুই পক্ষই আগ্নেয়াস্ত্র ও টেঁটা-বল্লম নিয়ে সংর্ঘষে জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে আবদুস সালাম পক্ষের দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
আবদুস সালাম বলেন, ‘গত ছয় মাস প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে আমার অনুসারীরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করছিলেন। আজ তাঁরা বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় সামসু মেম্বারের লোকজন দেশি অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে আমার পক্ষের দুজন নিহত হয়েছেন।’
এ বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য সামসু মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ল ব দ ধ হয় আবদ স স ল ম স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী
কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।
কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।
একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’
কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।
এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।