যে ইনিংসে ইনজামামকে চিনেছিল ক্রিকেট বিশ্ব
Published: 21st, March 2025 GMT
১২০ টেস্ট ও ৩৭৮ ওয়ানডের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে স্মরণীয় অনেক ইনিংসই খেলেছেন ইনজামাম-উল-হক। এসবের মধ্যে আলাদা হয়ে আছে ৬০ রানের একটা ইনিংস। যে ইনিংসটি দিয়ে ইনজামামকে চিনেছিল ক্রিকেটবিশ্ব। যা খেলেছিলেন ১৯৯২ সালের ২১ মার্চ, মানে ৩৩ বছর আগে আজকের এই দিনে।
ম্যাচের আগের রাতে ইনজামাম–উল–হকের গায়ে জ্বর। কয়েকবার বমিও করেছেন। কাঁচুমাচু মুখ করে অধিনায়ক ইমরান খানকে গিয়ে বললেন, ‘ক্যাপ্টেন, আমার অবস্থা খারাপ, কাল আমি খেলতে পারব না।’
কাল, মানে পরদিন নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল।
ইমরান মুখে একচিলতে হাসি ফুটিয়ে বললেন, ‘ইনজি, তোমার অবস্থা যত খারাপই হোক, তুমি কাল খেলছ।’
অস্থিরতা, উদ্বেগ, চাপ—এসব মানসিক অবস্থাও অনেক সময় শারীরিক উপসর্গ হয়ে প্রকাশিত হয়। ইনজামামের ‘অবস্থা খারাপ’–এর পেছনেও এসবের ভূমিকা আছে বলেই অনুমান করেছিলেন ইমরান। সেই অনুমান হয়তো সঠিকই ছিল। নইলে ইনজামাম পরদিন অমন একটা ইনিংস কীভাবে খেলেন? ৩৭ বলে ৬০ রানের যে ইনিংসে বিশ্ব ক্রিকেটে ইনজামামের সদর্প আবির্ভাবের ঘোষণা। পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে জাভেদ মিয়াঁদাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠার পথে যাত্রা শুরু।
সেই ইনিংসে যাওয়ার আগে একটা বড় প্রশ্নের উত্তর দিয়ে নেওয়া জরুরি বলে মনে হচ্ছে। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের মতো একটা ম্যাচ, যেটিতে খেলা সব ক্রিকেটারের স্বপ্ন, সেটি কেন খেলতে চাননি ইনজামাম? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যাবে কিছু সংখ্যায়—২৭, ১৪, ০, ২, ৪৮, ১৬, ১১ ও ৫।
১৯৯২ বিশ্বকাপে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন ইনজামাম.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?