১২০ টেস্ট ও ৩৭৮ ওয়ানডের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে স্মরণীয় অনেক ইনিংসই খেলেছেন ইনজামাম-উল-হক। এসবের মধ্যে আলাদা হয়ে আছে ৬০ রানের একটা ইনিংস। যে ইনিংসটি দিয়ে ইনজামামকে চিনেছিল ক্রিকেটবিশ্ব। যা খেলেছিলেন ১৯৯২ সালের ২১ মার্চ, মানে ৩৩ বছর আগে আজকের এই দিনে।

ম্যাচের আগের রাতে ইনজামাম–উল–হকের গায়ে জ্বর। কয়েকবার বমিও করেছেন। কাঁচুমাচু মুখ করে অধিনায়ক ইমরান খানকে গিয়ে বললেন, ‘ক্যাপ্টেন, আমার অবস্থা খারাপ, কাল আমি খেলতে পারব না।’

কাল, মানে পরদিন নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল।

ইমরান মুখে একচিলতে হাসি ফুটিয়ে বললেন, ‘ইনজি, তোমার অবস্থা যত খারাপই হোক, তুমি কাল খেলছ।’

অস্থিরতা, উদ্বেগ, চাপ—এসব মানসিক অবস্থাও অনেক সময় শারীরিক উপসর্গ হয়ে প্রকাশিত হয়। ইনজামামের ‘অবস্থা খারাপ’–এর পেছনেও এসবের ভূমিকা আছে বলেই অনুমান করেছিলেন ইমরান। সেই অনুমান হয়তো সঠিকই ছিল। নইলে ইনজামাম পরদিন অমন একটা ইনিংস কীভাবে খেলেন? ৩৭ বলে ৬০ রানের যে ইনিংসে বিশ্ব ক্রিকেটে ইনজামামের সদর্প আবির্ভাবের ঘোষণা। পাকিস্তানের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যান হিসেবে জাভেদ মিয়াঁদাদের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠার পথে যাত্রা শুরু।

সেই ইনিংসে যাওয়ার আগে একটা বড় প্রশ্নের উত্তর দিয়ে নেওয়া জরুরি বলে মনে হচ্ছে। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের মতো একটা ম্যাচ, যেটিতে খেলা সব ক্রিকেটারের স্বপ্ন, সেটি কেন খেলতে চাননি ইনজামাম? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়া যাবে কিছু সংখ্যায়—২৭, ১৪, ০, ২, ৪৮, ১৬, ১১ ও ৫।

১৯৯২ বিশ্বকাপে নিজের জাত চিনিয়েছিলেন ইনজামাম.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইনজ ম ম অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন

তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের। 

দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত। 

আরো পড়ুন:

রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন

টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়

প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।

তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।

গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে। 

সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। 

ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে। 

২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ