আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে একটি মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক হয়ে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক দিয়ে তালাইমারি মোড়ে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। 

আওয়ামী লীগকে নাৎসি পার্টি হিসেবে নিষিদ্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই বলে মন্তব্য করে সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলতে চাই, যেদিন আবু সাঈদের রক্তে রংপুরের জমিন লাল হয়েছে, সেদিনই আওয়ামী লীগ রাজনীতি করার অধিকার হারিয়েছে। একটি রাজনৈতিক দল যখন রাজনীতি বাদ দিয়ে গণহত্যা, গুম, খুন ও ত্রাসের রাজনীতিতে মেতে ওঠে, তখন সেটাকে নাৎসি পার্টি হিসেবে নিষিদ্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকতে পারে না।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে এই বাংলার মাটিতে যদি কোনো রাজনৈতিক দল আবির্ভাব হয়, আমরা ছাত্র-জনতা কোনোভাবেই তা বরদাস্ত করব না। জুলাইয়ের দুই হাজার শহীদের রক্তের সঙ্গে আমরা বেঈমানি করতে পারি না। অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ প্রশ্নে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নই আমরা। অবিলম্বে তাদের বিচার নিশ্চিত করুন।

আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে আরেক সাবেক সমন্বয়ক সালাউদ্দিন আম্মার বলেন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের প্রশ্ন তো আমরা ৫ আগস্টে নিশ্চিত করে ফেলেছি। আওয়ামী লীগকে আর বাংলার মাটিতে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগ যদি রাজনীতিতে ফিরে আসতে চায়, তাহলে দুই হাজার শহীদের জীবন ফিরিয়ে দিতে হবে। ত্রিশ হাজার আহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারী ভাই-বোনদের হাত-পা ফিরিয়ে দিতে হবে, দৃষ্টিশক্তি হারানো ভাই-বোনদের চোখ ফিরিয়ে দিতে হবে। আওয়ামী লীগ রাজনীতি করবে কি না, সেটি জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে।

সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক মাহায়ের ইসলাম। এ সময় বক্তব্য দেন সাবেক সমন্বয়ক নুরুল ইসলাম শহীদসহ অনেকে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব ক সমন বয়ক র জন ত আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ