হামলার ঘটনার বিচার চাইতে এসে লক্ষ্মীপুর মডেল থানায় ছাত্রদল নেতা ও তার অনুসারীদের কাছে মারধরের শিকার হয়েছেন এক ছাত্র প্রতিনিধিসহ দুইজন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২২ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। 

আহত ছাত্র প্রতিনিধির নাম ইলমান ফারাবি। অপরজনের নাম জানা যায়নি। অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার নাম জাহিদুল ইসলাম সৈকত। তিনি লক্ষ্মীপুর পৌর ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পৌর শহরের বাইশমারা এলাকায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে রিকশা ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে শিক্ষার্থী হাবিবুল্লাহ বাহারকে মারধর করে এলাকাবাসী। এ ঘটনায় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্র প্রতিনিধি ফারাবিসহ অন্য শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন। তারা সদর মডেল থানায় বিচারের জন্য জড়ো হন। থানার ভেতরেই তাদের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম সৈকতের বাকবিতাণ্ডা হয়। একপর্যায়ে জাহিদুল ইসলাম সৈকতসহ তার অনুসারীরা ছাত্র প্রতিনিধিদের মারধর করেন। এতে ফারাবিসহ দুইজন আহত হন। পরে বিচারের দাবিতে থানা গেইটে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। 

আরো পড়ুন:

মসজিদের ভেতরে কোপানের ঘটনায় আরেকজনের মৃত্যু, নিহত বেড়ে ৪ 

যুবলীগ-ছাত্রলীগের হামলায় আহত ১০, থানায় অভিযোগ

ঘটনার সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ রেজাউল হক, সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মোন্নাফ, জেলা যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক একেএম ফরিদ উদ্দিন ও লক্ষ্মীপুর শহর জামায়াতের আমির আবুল ফারাহ নিশান উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। পরে ওসির কক্ষে বৈঠকে বসেন পুলিশ ও যুবদল-জামায়াতের সিনিয়র নেতারা।

অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা জাহিদুল ইসলাম সৈকত বলেন, “রিকশা ভাড়া নিয়ে পলিটেকনিকের সামনে এক ছাত্রের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় তারা পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি বিপ্লবকে দোষারোপ করেন। তাকে ধরে এনে মারধরের হুমকি দেয় শিক্ষার্থীরা। ঘটনাটি জানতে থানায় আসলে তারা ক্ষুদ্ধ হয়ে তেড়ে আসে। এসময় তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়।

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ওসি আব্দুল মোন্নাফ বলেন, “পলিটেকনিকে সামনে ভাড়া নিয়ে শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় অটোরিকশা চালক আটক আছে। তার বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। পরের হামলার ঘটনায় সমঝোতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এরপরও যদি কেউ অভিযোগ করে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল অভ য গ জ হ দ ল ইসল ম স ছ ত রদল ন ত র ঘটন ঘটন য় ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ