বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজের ফরম্যাটে বদল, ওয়ানডে বাতিল
Published: 23rd, March 2025 GMT
বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার আসন্ন দ্বিপাক্ষিক সিরিজে বড় পরিবর্তন এসেছে। পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী যেখানে ওয়ানডে ম্যাচ থাকার কথা ছিল, সেখানে এখন শুধু টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চে ভারত ও শ্রীলঙ্কায় বসবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর। তার আগে, সেপ্টেম্বরে ভারতে অনুষ্ঠিত হবে এশিয়া কাপ, যা হবে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। এসব প্রতিযোগিতা সামনে রেখে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই মুহূর্তে ওয়ানডের চেয়ে টি-টোয়েন্টিতে বেশি মনোযোগ দেওয়া জরুরি। তাই দুই সিরিজ থেকেই ওয়ানডে ম্যাচ বাদ দেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, মে মাসে বাংলাদেশ দল পাকিস্তান সফর করবে। আগের সূচি অনুসারে তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি খেলার কথা থাকলেও নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিরিজটি হবে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।
আরো পড়ুন:
ঈশানের মেইডেন সেঞ্চুরিতে হায়দরাবাদের দুর্দান্ত জয়
বাংলাদেশের কোচ-অধিনায়ক চূড়ান্ত হবে সোমবার
এরপর, জুলাইয়ে বাংলাদেশ সফরে আসবে পাকিস্তান। তখনও তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলার কথা থাকলেও সেটিও বদলে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে পরিণত হয়েছে। মিরপুরের শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে এই ম্যাচগুলো অনুষ্ঠিত হবে ২০, ২২ ও ২৪ জুলাই।
মূলত বাংলাদেশ ও পাকিস্তান উভয় দলই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে বেশ কিছু অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের জায়গায় নতুনদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তাই টি-টোয়েন্টি দলকে আরও পরিণত করতে বেশি ম্যাচ খেলার প্রয়োজন বলে মনে করছে বোর্ড।
জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা বর্তমানে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। লিগ শেষে আগামী ১১ এপ্রিল থেকে শুরু হবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতি। প্রথম টেস্ট মাঠে গড়াবে ২০ এপ্রিল সিলেটে, আর দ্বিতীয়টি ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।