বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সিরাজগঞ্জের কলেজছাত্র আসিফ হোসাইন (১৯) হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা করা হয়েছে। এতে আসামি করা হয়েছে সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়, সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীসহ আওয়ামী লীগের ৩৭৭ নেতা-কর্মীকে।

নিহত আসিফ হোসাইনের মা আসমানী খাতুন আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিরাজগঞ্জ সদর আমলি আদালতে মামলাটি করেন।

আদালতের অতিরিক্ত কৌঁসুলি (এপিপি) হুমায়ুন কবীর আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, আদালত মামলাটি শুনানি করে এফআইআর (এজাহার) হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবীরকে নির্দেশ দিয়েছেন।

আসিফ হোসাইন সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার একডালা পুনর্বাসন মহল্লার নজরুল ইসলামের ছেলে। তিনি সিরাজগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র ছিলেন।

মামলার এজাহারে নাম উল্লেখ করা হয়েছে ৭৭ জনের। এ ছাড়া ২০০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাকিম, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল বারী, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল আহমেদ, কাজীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান, কাজীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল হান্নান, চৌহালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাই, চৌহালী উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি কামরুল হায়দার, সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমজাদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ আলী।

মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আসিফ হোসাইন ও তাঁর বন্ধু শাহীন শেখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী ছিলেন। গত বছরের ৪ আগস্ট সকালে ছাত্র সমন্বয়কদের ডাকে আসিফ হোসাইন আন্দোলনে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। শহরের চৌরাস্তা মোড়ে আন্দোলনে অংশ নেন তিনি। দুপুর পর্যন্ত আসিফ অন্য ছাত্রদের সঙ্গে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বেলা দুইটার দিকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা পিস্তল, শাটারগান, বন্দুক, হাতবোমা, পেট্রলসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে চৌরাস্তা মোড়ে এসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায়। এ সময় ছাত্র-জনতা বিভিন্ন স্থানে ছোটাছুটি করতে থাকে। এ সময় আসামিরা কলেজছাত্র আসিফ হোসাইন ও তাঁর বন্ধু শাহীন শেখকে এলোপাতাড়ি মারধর করে হত্যা করে। পরে তাঁদের লাশ সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীর বাড়ির বাথরুমে লুকিয়ে রাখে এবং গানপাউডার দিয়ে তাঁদের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর আসিফের লাশ উদ্ধার করে দীর্ঘদিন সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়। লাশটি শনাক্তের জন্য পরিবারের সদস্যদের ডিএনএ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার পর ৪ মার্চ আসিফের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ উপজ ল সদস য আওয় ম আবদ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৩৫ কিলোমিটারজুটে যানজট

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমশার থেকে দাউদকান্দি পর্যন্ত প্রায় ৩৫ কিলোমিটারজুড়ে যানজট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন মহাসড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকেরা। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ড ভ্যান উল্টে যাওয়ায় আজ বৃহস্পতিবার ভোর থেকে এ যানজট দেখা দেয়। 

হাইওয়ে পুলিশ  জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে মহাসড়কে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নূরীতলা এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ফেনী থেকে রেকার এনে কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধারের কাজ শুরু করে পুলিশ। 

সকাল সাড়ে ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মহাসড়কে যানজট দেখা গেছে। 

ঢাকাগামী রয়েল পরিবহনের চালক রমিজ উদ্দিন বলেন, সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা করে বুড়িচংয়ের নিমশার বাজারে যানজটে এক ঘণ্টা বসে থাকতে হয়েছে। ৫ মিনিট গাড়ি চললে ২০ মিনিট বসে থাকতে হয়। এভাবে ১০টা ৪০ মিনিটে চান্দিনায় পৌঁছেছি। এ সময়ে ঢাকার কাছাকাছি থাকার কথা ছিল। 

নিমশার বাজারে আটকে থাকা প্রাইভেট কারের যাত্রী তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে যানজট অথচ সড়কে হাইওয়ে পুলিশ দেখছি না। 

ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রুহুল আমিন বলেন, মহাসড়কের নূরীতলা এলাকায় উল্টে কাভার্ড ভ্যানটি আড়াআড়িভাবে পড়ে ছিল। পরে ঢাকামুখী লেনের বেশ কিছু গাড়ি উল্টো পথে ঢোকায় যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ফেনী থেকে ক্রেন এনে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। 

হাইওয়ে কুমিল্লা রিজিওনের পুলিশ সুপার অতিরিক্ত ডিআইজি মো. খাইরুল আলম সমকালকে বলেন, দুর্ঘটনার কারণেই যানজট দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনা কবলিত কাভার্ড ভ্যানটি উদ্ধার করা হয়েছে। যান চলাচল স্বাভাবিক হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ