সিরাজগঞ্জে কলেজছাত্র আসিফ হত্যার অভিযোগে আওয়ামী লীগের সাবেক দুই এমপিসহ ৩৭৭ জনের নামে মামলা
Published: 23rd, March 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সিরাজগঞ্জের কলেজছাত্র আসিফ হোসাইন (১৯) হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা করা হয়েছে। এতে আসামি করা হয়েছে সিরাজগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল জয়, সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীসহ আওয়ামী লীগের ৩৭৭ নেতা-কর্মীকে।
নিহত আসিফ হোসাইনের মা আসমানী খাতুন আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সিরাজগঞ্জ সদর আমলি আদালতে মামলাটি করেন।
আদালতের অতিরিক্ত কৌঁসুলি (এপিপি) হুমায়ুন কবীর আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, আদালত মামলাটি শুনানি করে এফআইআর (এজাহার) হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবীরকে নির্দেশ দিয়েছেন।
আসিফ হোসাইন সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার একডালা পুনর্বাসন মহল্লার নজরুল ইসলামের ছেলে। তিনি সিরাজগঞ্জ সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র ছিলেন।
মামলার এজাহারে নাম উল্লেখ করা হয়েছে ৭৭ জনের। এ ছাড়া ২০০ থেকে ৩০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাকিম, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল বারী, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রুবেল আহমেদ, কাজীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান, কাজীপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল হান্নান, চৌহালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হাই, চৌহালী উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি কামরুল হায়দার, সদর উপজেলার বাগবাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমজাদ হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ আলী।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, আসিফ হোসাইন ও তাঁর বন্ধু শাহীন শেখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী ছিলেন। গত বছরের ৪ আগস্ট সকালে ছাত্র সমন্বয়কদের ডাকে আসিফ হোসাইন আন্দোলনে যোগ দেওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হন। শহরের চৌরাস্তা মোড়ে আন্দোলনে অংশ নেন তিনি। দুপুর পর্যন্ত আসিফ অন্য ছাত্রদের সঙ্গে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বেলা দুইটার দিকে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা পিস্তল, শাটারগান, বন্দুক, হাতবোমা, পেট্রলসহ বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে চৌরাস্তা মোড়ে এসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালায়। এ সময় ছাত্র-জনতা বিভিন্ন স্থানে ছোটাছুটি করতে থাকে। এ সময় আসামিরা কলেজছাত্র আসিফ হোসাইন ও তাঁর বন্ধু শাহীন শেখকে এলোপাতাড়ি মারধর করে হত্যা করে। পরে তাঁদের লাশ সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরীর বাড়ির বাথরুমে লুকিয়ে রাখে এবং গানপাউডার দিয়ে তাঁদের লাশ পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর আসিফের লাশ উদ্ধার করে দীর্ঘদিন সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রাখা হয়। লাশটি শনাক্তের জন্য পরিবারের সদস্যদের ডিএনএ পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়ার পর ৪ মার্চ আসিফের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ উপজ ল সদস য আওয় ম আবদ ল
এছাড়াও পড়ুন:
৪৪তম বিসিএসের ৪০০ রিপিট ক্যাডার বাদ দিচ্ছে সরকার, নতুন সিদ্ধান্ত আসছে
৪৪তম বিসিএসে পুনরাবৃত্তি হওয়া ৪০০ ক্যাডারকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তারা ৪৩তম বিসিএসে বা আগের বিসিএসে যে ক্যাডারে আছেন ৪৪তম বিসিএসেও একই ক্যাডার পেয়েছিলেন। এই ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে সিদ্ধান্ত দ্রুতই হবে বলে জানিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা।
প্রথম আলোকে ওই কর্মকর্তা আজ বৃহস্পতিবার বলেন, ৪০০ ক্যাডারকে নিয়ে পিএসসির কিছু সুপারিশ আমরা পেয়েছি। এগুলো বাদ দিতে সরকার কাজ করছে। বাদ দিলে কি করা হবে তা নিয়েও কাজ করছে সরকার। এখন পিএসসিকে এ বিষয় নিয়ে একটি মতামত দিতে বলা হয়েছে। পেলেই তা পর্যালোচনা করে এ বিষয়ে প্রজ্জাপন দেওয়া হবে। এটি যাতে স্থায়ীভাবে বন্ধ হয় সেজন্য আমরা কাজ করছি।
আরও পড়ুন৪৯তম বিসিএস: অনলাইন আবেদন ও ফি জমাদানে পিএসসির নতুন নির্দেশনা৩০ জুলাই ২০২৫৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল ৩০ জুন প্রকাশিত হয়। এতে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৬৯০ জনকে নিয়োগের জন্য সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) সাময়িকভাবে মনোনীত করেছে।
প্রকাশিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ১ হাজার ৬৯০ জনের মধ্যে প্রায় ৪০০ জন প্রার্থী একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন (রিপিট ক্যাডার)। এই ৪০০ জনের তালিকা পেয়েছে পিএসসি। এই রিপিট ক্যাডার বন্ধে বিধি সংশোধন করা হচ্ছে। এ–সংক্রান্ত চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠায় পিএসসি।
পিএসসি জনপ্রশাসনের চিঠিতে বলছে, এই রিপিট ক্যাডারের ফলে নতুন ও অপেক্ষমাণ মেধাবীরা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এটি প্রশাসনিক কাঠামো ও জনসম্পদের সদ্ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করছে। এখন এটি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।
একাধিকবার বিসিএস পরীক্ষায় অংশ নিয়ে একই ক্যাডারে পুনরায় সুপারিশপ্রাপ্ত হওয়া বন্ধ করার জন্য বিদ্যমান বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বয়স, যোগ্যতা ও সরাসরি নিয়োগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা ২০১৪–এর বিধি-১৭ এর শেষে নিম্নোক্ত শর্ত যুক্ত করার প্রস্তাব করেছে পিএসসি।
আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫শর্তে কী আছে—পিএসসির চিঠিতে শর্ত হিসেবে বলা আছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিবার প্রাক্কালে, কিংবা কোনো বিসিএস পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রস্তুতকালে, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী কর্তৃক প্রদত্ত লিখিত তথ্যের ভিত্তিতে কিংবা কমিশন কর্তৃক নির্ধারিত কোনো পদ্ধতির মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে যদি কমিশনের নিকট প্রতীয়মান হয় যে এই বিধির আওতাধীন মনোনয়নযোগ্য কিংবা মনোনীত কোনো প্রার্থী একই ক্যাডার পদ, সমপদ কিংবা প্রার্থীর আগ্রহ নেই এমন কোনো সার্ভিস বা ক্যাডার পদে পুনরায় মনোনীত হইবার কারণে মনোনীত সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে যোগদান করিতে অনিচ্ছুক, এইরূপ ক্ষেত্রে কমিশন অনাগ্রহ প্রকাশকারী প্রার্থীকে এই বিধির আওতাধীন সরকারের নিকট সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিতে পারিবে; আরও শর্ত থাকে যে প্রথম শর্তাংশে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী কোনো প্রার্থীকে সুপারিশ করা হইতে বিরত থাকিবার কারণে উদ্ধৃত শূন্য পদে নিয়োগের লক্ষ্যে সুপারিশ প্রেরণ করিবার জন্য উত্তীর্ণ প্রার্থিগণের মধ্য হইতে মেধাক্রম অনুযায়ী প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক কমিশন সম্পূরক ফলাফল প্রকাশ এবং সার্ভিসে বা ক্যাডার পদে নিয়োগের জন্য সরকারের নিকট সুপারিশ প্রেরণ করিতে পারিবে;আরও অধিকতর শর্ত থাকে যে দ্বিতীয় শর্তাংশে উল্লিখিত সম্পূরক ফলাফল দ্বারা বা উহার পরিণতিতে প্রথম ঘোষিত ফলাফলে সার্ভিস বা ক্যাডার পদের জন্য মনোনীত কোনো প্রার্থীর প্রতিকূলে কোনো পরিবর্তন ঘটানো কিংবা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা যাইবে না।’
আরও পড়ুনবস্ত্র অধিদপ্তরে বড় নিয়োগ, চাকরির সুযোগ ১৯০ জনের২৯ জুলাই ২০২৫