পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে প্রথম আলো ডটকমের সহযোগিতায় চলমান ‘ফ্রেশ মিল্ক অবাক খুশির রেসিপি’ অনুষ্ঠানের কুইজ বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের প্রথম আলো কার্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রথম ২০ পর্বের ভাগ্যবান ১০ বিজয়ীকে পুরস্কৃত করা হয়।

বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন ও মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের জেনারেল ম্যানেজার (সেলস) মো.

আকতারুল আলম শাহ।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (ব্র্যান্ড) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, ব্র্যান্ড ম্যানেজার ওয়ালিউল হক ও প্রথম আলোর চিফ ডিজিটাল বিজনেস অফিসার জাবেদ সুলতান, ডিজিটাল মার্কেটিং লিড মেহবুব জাবেদ, সহকারী মহাব্যবস্থাপক রুহুল আমিন রনি প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রথম আলোর সিনিয়র কনটেন্ট ম্যানেজার খায়রুল বাবুই।

কুইজের সঠিক উত্তরদাতাদের মধ্য থেকে দৈবচয়নের ভিত্তিতে প্রতি ১০ পর্ব শেষে নির্বাচন করা হয় পাঁচজন করে ১০ বিজয়ীকে। তাঁদের মধ্যে মাইক্রোওয়েভ ওভেন জিতেছেন ঢাকার অনামিকা চৈতী ও আবদুর রহমান। ইন্ডাকশন কুকার জিতেছেন ঢাকার নাসিমা আক্তার ও সাগর আহমেদ। এ ছাড়া ২০ পর্বে বিশেষ গিফট হ্যাম্পার পেয়েছেন ঢাকার মোহাম্মদ টিউলিপ হোসাইন ও এস আর হোসেন, মনিরুজ্জামান, আমিনুল ইসলাম, ফেনীর নুরুল আফসার আল মামুন ও চট্টগ্রামের শিউলী খান।

একই সঙ্গে সব বিজয়ীর জন্য ছিল প্রথম আলোর ‘ঈদসংখ্যা ২০২৫’। ২০ পর্বের কুইজে অংশ নিয়েছেন প্রায় ৩৫ হাজার দর্শক এবং প্রতি পর্বের গড় ভিউ প্রায় ছয় লাখ।

বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রথম আলোর হেড অব অনলাইন শওকত হোসেন বলেন, ‘এ আয়োজনে আসতে পেরে আমি সত্যিই অভিভূত। পাশাপাশি পুরস্কার যাঁরা নিতে ও দিতে এসেছেন, তাঁদের প্রত্যাশাও আমাকে আনন্দিত করেছে। এমন আয়োজন অব্যাহত থাকুক এবং সবার জন্য শুভকামনা রইল।’

কুইজে অংশ নেওয়া সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের জেনারেল ম্যানেজার (সেলস) মো. আকতারুল আলম শাহ বলেন, ‘একটা আয়োজন সফল হয়, যখন সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ থাকে। কুইজে অংশগ্রহণ ও প্রতিটি পর্বের ভিউজই প্রমাণ করে এ অনুষ্ঠানের প্রতি সবার আগ্রহ ও প্রত্যাশা বাড়ছে। আমরাও চেষ্টা করেছি দর্শকের জন্য এখানে নতুন কিছু রেসিপি উপস্থাপন করতে। ফ্রেশ ইনস্ট্যান্ট ফুল ক্রিম মিল্ক পাউডার দিয়ে শুধু চা নয়, এটা দিয়ে আরও অনেক অবাক করা রেসিপি তৈরি করা যায়, সে বিষয়টিই দেখাতে চেয়েছি।’

মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার (ব্র্যান্ড) মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘প্রতিবছর আমরা এ আয়োজন করি। মূলত দর্শক ও ভোক্তাদের অংশগ্রহণই এ অনুষ্ঠানটি আয়োজনে আমাদের অনুপ্রাণিত করে। আমরাও তাই প্রতিবছর ডেজার্টের নতুন অভিজ্ঞতা দেওয়ার চেষ্টা করি।’

প্রথম আলোর চিফ ডিজিটাল বিজনেস অফিসার জাবেদ সুলতান বলেন, ‘পবিত্র রমজানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ ইফতার। সেই ইফতারের রেসিপি গতানুগতিক না হয়ে যেন ভিন্ন স্বাদের হয়, সেই অভিজ্ঞতা দিতেই আমাদের পাঠক–দর্শকদের জন্য এ আয়োজন। বিজয়ীদের অভিনন্দন।’

পুরস্কার জেতার অভিজ্ঞতা শোনান মাইক্রোওয়েভ ওভেনজয়ী ঢাকার অনামিকা চৈতী

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল র প রস ক র ব জয় দ র অন ষ ঠ ন ২০ পর ব পর ব র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

দেড়শ বছর টিকে আছে বালিকান্দি চামড়ার হাট

প্রায় দেড়শ বছর আগে মৌলভীবাজারের বালিকান্দি গ্রামে গড়ে ওঠে চামড়ার হাট। কোরবানির ঈদ এলেই মনু নদী তীরবর্তী গ্রামের এ হাটে চামড়া কেনাবেচা চলে দীর্ঘ রাত পর্যন্ত। ক্রেতা-বিক্রেতা, শ্রমিকের আনাগোনায় উৎসবমুখর থাকে বালিকান্দি বাজার। 
মৌলভীবাজার জেলায় চামড়া কেনাবেচার একমাত্র হাট বালিকান্দি বাজার। জল ও স্থলপথে যোগাযোগ সহজ হওয়ায় এটি দ্রুত বিভিন্ন এলাকায় পরিচিতি লাভ করে। স্থানীয় বাজারে চা স্টলের মালিক আব্দুল করিম জানান, তারা বাপ-দাদার আলোচনায় শুনেছেন, চার-পাঁচ পুরুষ আগে এ ব্যবসার যাত্রা শুরু। এক সময় খুব জমজমাট ছিল এ হাট। তিনিও এক সময় চামড়া কেনাবেচায় জড়িত ছিলেন। ব্যবসায় লস খাওয়ায় চায়ের দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন এখন।
জানা যায়, ১৮৬০ থেকে ১৮৭০ সালের দিকে এ বাজারের যাত্রা। এখন এ ব্যবসার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে গেছে। ট্যানারি মালিকরা টাকা আটকে রাখায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। চামড়া বেচাকেনা যখন জমজমাট ছিল, তখন ঈদকেন্দ্রিক বাজার সরব থাকত। 
স্থানীয়রা জানান, অতীতে ঈদকেন্দ্রিক মৌসুমি ব্যবসায়ীসহ শতাধিক মানুষ চামড়া কেনাবেচা করতেন। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা মাংস ছিলে লবণ লাগিয়ে বড় পুঁজির ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতেন। বড় ব্যবসায়ীরা আগেকার দিনে ঢাকার হাজারীবাগ এবং নাটোরে ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করতেন। শওকত মেম্বার, সানুর মিয়া, আনোয়ার মিয়া, মো. তারণ, মিন্টু মিয়া, সুলেমান মিয়ারা তাদের আদি পুরুষের ব্যবসার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন।
গত ৭ জুন ঈদের দিন সন্ধ্যায় সরেজমিন বালিকান্দি চামড়ার বাজারে যেতে দেখা যায় চামড়াবোঝাই ছোট-বড় ট্রাক-পিকআপ, টমটম, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভিড়ে জ্যাম লেগে গেছে। ফাঁড়ি রাস্তায় যেতে হয়েছে বালিকান্দি বাজারে। সেখানে শামিয়ানা টানিয়ে সড়কের পাশে, কোথাও সড়কের অংশজুড়ে চলছে চামড়া থেকে মাংস সরানোর কাজ। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এ কাজ করছেন।
চামড়া ব্যবসায়ী সুলেমান মিয়া জানান, ঈদের সময় বালিকান্দি বাজারে এখনও ১৫ থেকে ১৬ হাজার চামড়া কেনাবেচা হয়। এতে এক দিনে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকার বেচাকেনা হয়। এবার গরুর আকারভেদে দেড়শ থেকে ৬০০ টাকা দরে চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। চামড়া বিক্রি করতে আসা মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা তাফাজ্জুল বিন ফারুকী রাজনগরী জানান, চামড়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দেড়শ-দুইশ টাকায় প্রতি পিস চামড়া কিনেছেন। এতে ট্রাক ভাড়া ও অন্যান্য খরচ ওঠানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শওকত মিয়া মেম্বার সমকালকে জানান, ব্যবসার মজা শেষ হয়ে গেছে ২০১৩ সাল থেকে। আগে ঈদ এলেই ট্যানারি মালিকরা বকেয়া পরিশোধ করে দিতেন। এখন বছরের পর বছর যাওয়ার পরও পাওনা টাকা পরিশোধ করেন না। গত বছরের পাওনা ৫৫ লাখ টাকার মাঝে এবার ঈদের আগের দিন ট্যানারি মালিক মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এ বছর চার হাজারের বেশি চামড়ায় লবণ লাগিয়ে রেখেছেন। আরও কিছু লবণযুক্ত চামড়া কেনার জন্য দাম-দর চলছে। তিনি জানান, এ বছর বড় গরু কোরবানি দেওয়ার সংখ্যা খুব কম। ছোট চামড়ার সংখ্যাই বেশি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দেড়শ বছর টিকে আছে বালিকান্দি চামড়ার হাট