কুমিল্লায় বিএনপির দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ২০
Published: 24th, March 2025 GMT
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে বিএনপির সাংগঠনিক সভাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার চৌদ্দগ্রাম বাজারে একটি মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর সাবেক এমপি মুজিবুল হকের ব্যক্তিগত কার্যালয় দখলে নিয়ে অফিস করে স্থানীয় বিএনপি। উপজেলায় দলটির দুটি পক্ষ রয়েছে। এ কার্যালয়ে সোমবার সাংগঠনিক সভা চলাকালে স্থানীয় কামরুল হুদা পক্ষ ও হিরণ মোল্লা-জুয়েল পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।
কামরুল হুদা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি। আর সাজেদুর রহমান মোল্লা হিরণ কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা কমিটির সদস্য। সংঘর্ষে হিরণ মোল্লাসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন বলে নেতাকর্মীরা দাবি করেছেন। আহত সবাই হিরণ মোল্লার পক্ষের অনুসারী বলে জানা গেছে। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
আহত অন্যরা হলেন পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজী জোবায়ের, চিওড়া ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, যুবদল কর্মী সবুজ, বাইকগ্রামের সাইফুল, ছাত্রদল কর্মী ইউসুফ, জনি, যুবদল কর্মী ইকবাল, উজিরপুরের আইয়ুব, কালিকাপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি মো.
দক্ষিণ জেলা যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক তোফায়েল হোসেন জুয়েল বলেন, ‘বিএনপির সাংগঠনিক সভায় কামরুল হুদার পক্ষ ব্যতীত যাতে অন্য কেউ প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য তারা পাহারা বসান। আমরা নেতাকর্মীকে নিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করলে হকিস্টিক, চায়নিজ কুড়ালসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে নেতাকর্মীর ওপর হামলা করে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। আমরা সভাস্থলে প্রবেশ করতে না পেরে চলে আসি।’
দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সাজেদুর রহমান মোল্লা হিরণ বলেন, ‘নেতাকর্মীকে নিয়ে আমি সভাস্থলে প্রবেশের চেষ্টা করলে কামরুল হুদার লোকজন আমাকে লাঞ্ছিত করে এবং নেতাকর্মীর ওপর হামলা করে। আমি মিলনায়তনে প্রবেশ করতে না পেরে আবুল খায়ের মার্কেটের সামনে এসে নেতাকর্মীকে নিয়ে অবস্থান করি। সেখানেও হামলা করে।’
অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কামরুল হুদা বলেন, ‘আমাদের সভা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বাইরে হিরণ মোল্লার লোকজন ইচ্ছে করেই ঝামেলা করতে এসে আমাদের লোকজনের সঙ্গে মারামারিতে লিপ্ত হয়।’
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিলাল উদ্দিন বলেন, বিএনপির সাংগঠনিক সভায় দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়েছে। সেখানে পুলিশ মুভ করেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। এ ঘটনায় কোনও পক্ষ অভিযোগ করেনি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ স ঘর ষ ব এনপ র স ন ত কর ম প রব শ স ঘর ষ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।
‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’
আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’
গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।
জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।
বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’
গণজমায়েতে র্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।