সোমবার দুপুর ১২টা। বরিশালের শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডের ১৩ নম্বর শয্যায় শান্ত শুয়ে আছে শিশু। তার পাশে বসে আছেন এক নারী; নাম পারভীন বেগম। গত শনিবার রাতে তিনি ও তার স্বামী রুহুল আমিন নগরীর কীর্তনখোলা নদীর তীরসংলগ্ন এক পরিত্যক্ত শৌচাগার থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করেন।

পারভীন জানান, রাত ১২টার দিকে ঘরের বাইরে বেরিয়ে কান্না শুনতে পান তিনি। কান্নার আওয়াজ ধরে এগিয়ে পাশে পরিত্যক্ত একটি শৌচাগারে শিশুটিকে পড়ে থাকতে দেখেন। সেখানে মশা তার ছোট্ট শরীরটা প্রায় ঢেকে রেখেছিল। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন পারভীন ও রুহুল। এর পর গত দুই দিনেও তার মা-বাবার খোঁজ মেলেনি। শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য অনেকে হাসপাতালে এসেছেন। কিন্তু তার পিঠে একটি টিউমার রয়েছে। আর পায়ের গঠন দেখে মনে হচ্ছে শারীরিক প্রতিবন্ধী হবে। এসব কারণে বেশ কয়েক দম্পতি ফিরে গেছেন।

রুহুল আমিন কীর্তনখোলা নদীর তীরে ত্রিশ গোডাউন এলাকায় ঝালমুড়ি বিক্রি করেন। তার স্ত্রী পারভীন বিক্রি করেন ফুচকা। তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত শিশুটিকে দেখভাল করছিলেন এই দম্পতি।

হাসপাতাল থেকে ফেরার পর দুপুর ২টার দিকে মোবাইল ফোনে কল করা হলে রুহুল জানান, উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে ঢাকায় পাঠানোর কথা বলেছেন চিকিৎসকরা। তাদেরও সঙ্গে যেতে বলেছেন। কিন্তু তারা ছোট ব্যবসা করে সংসার চালান। গত দুই দিন হাসপাতালে থাকায় আয় বন্ধ। ঝালমুড়ি-ফুচকা বিক্রি না করলে তাদের সংসার চলে না। এখন ব্যবসা ছেড়ে ঢাকায় যাওয়া সম্ভব না। তাই বাধ্য হয়ে শিশুটিকে হাসপাতালে রেখে স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে গেছেন রুহুল।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা.

এ কে এম মশিউর মুনীর সমকালকে বলেন, ‘ওই শিশুকে আপাতত ওয়ার্ডের সেবিকার তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। চিকিৎসায় সুস্থ হওয়ার পর সমাজসেবা অধিদপ্তরে হস্তান্তরের কথা চলছে। তাকে সুস্থ করতে নিউরোলজি চিকিৎসা দিতে হবে। আপাতত বরিশাল হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। পুরোপুরি সুস্থ করতে ঢাকায় পাঠানো হবে।’

অনেকের ধারণা, শারীরিক সমস্যা থাকায় স্বজনরা শিশুটিকে ফেলে রেখে গেছে। হাসপাতালের সেবিকারা জানান, শিশুটির নাড়িও কাটা ছিল না। তাই ধারণা করা হচ্ছে, তার বয়স সাত দিনের বেশি হবে না।

শেবাচিম হাসপাতালে দায়িত্বরত সমাজসেবা কর্মকর্তা দিলরুবা রিচি জানান, হাসপাতাল পরিচালকের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। শিশুটি সুস্থ হলে সমাজসেবার শিশু নিবাসে হস্তান্তর করা হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বর শ ল

এছাড়াও পড়ুন:

৫ দফা দাবিতে জামায়াতের বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু

আগামী ফেব্রুয়ারিতে জুলাই সনদের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ ৫ দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামীর পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটকে এই সমাবেশ শুরু হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করছেন জামায়াতের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল। দলের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের ও সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহানগর কমিটির নেতারা সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। জামায়াতের ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

জামায়াত সূত্র জানিয়েছে, সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হবে। মিছিলটি বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ ফটক থেকে বের হয়ে পুরানা পল্টন মোড়, জাতীয় প্রেসক্লাব ও মৎস্য ভবনের পাশ দিয়ে শাহবাগ পর্যন্ত যেতে পারে।

এর আগে গত ১৫ সেপ্টেম্বর জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয় সংলগ্ন আল ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ৫ দফা দাবিতে তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি।

জামায়াতের দাবিগুলো হলো- জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

একই দাবিতে আগামীকাল ১৯ সেপ্টেম্বর দেশের সব বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ মিছিল এবং ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের সব জেলা বা উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল করবে জামায়াতে ইসলামী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ