কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বন্দবেড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যের বিরুদ্ধে ভিজিএফের স্লিপ চাওয়ায় এক নারীকে থাপ্পড় মারার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে গতকাল সোমবার ভুক্তভোগী নারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি আমলে নিয়ে গতকাল ইউএনও রৌমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেন। এর আগে গত শুক্রবার বন্দবেড় ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলামের বাড়িতে ওই ঘটনা ঘটে। থাপ্পড় মারার কারণে ওই বিধবা নারীর কানের ব্যথা বেশি হলে স্বজনেরা তাঁকে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

ভুক্তভোগী নারী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় অর্থায়নে আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দুস্থ ও অতি দরিদ্র, অসহায় পরিবারের মধ্যে ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় খাদ্যশস্য দেওয়ার জন্য বন্দবেড় ইউনিয়নের জন্য ৭ হাজার ৮০০টি কার্ড বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য ৫০০টি স্লিপ দেওয়া হয়। প্রতিটি স্লিপের বিপরীতে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। ভিজিএফের চাল বিতরণের খবর পেয়ে বাগুয়ারচর গ্রামে ওই নারী একটি স্লিপের জন্য বন্দবেড় ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলামের বাড়িতে যান। এ সময় ইউপি সদস্য তাঁকে থাপ্পড় মারেন এবং ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, ‘মেম্বারের কাছে স্লিপ চাইতে গেলে মেম্বার আমাকে বলেন, “তুই আমাকে ভোট দিস নাই। তোকে স্লিপ দেওয়া হবে না।” প্রতিবাদ করলে তিনি আমার ডান কানে থাপ্পড় মারেন এবং জোরে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন।’

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওই দিন ভিজিএফের স্লিপের জন্য অনেক মানুষের ভিড় ছিল। এ কারণে স্লিপ দিতে একটু দেরি হওয়ায় সে (ভুক্তভোগী নারী) আমার বাড়িতে এসে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তাই আমি তাঁকে বাড়ি থেকে হাত ধরে সরিয়ে দিয়েছি। আমি তাঁকে থাপ্পড় মারি নাই।’

অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে ইউএনও উজ্জ্বল কুমার হালদার বলেন, ‘এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওসিকে নির্দেশ দিয়েছি।’

রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে মৌখিকভাবে ঘটনা শুনেছি। ভিজিএফের স্লিপের লাইনের ভিড় থেকে ওই নারীকে সরিয়ে দেওয়াকে কেন্দ্র করে ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে বলে জেনেছি। তদন্ত করে তবেই ওই বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারব।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ জ এফ র স ল প র জন য সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা

রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।

এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।

তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।

মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।

পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।

তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।

পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’

জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে টর্চলাইট জ্বালিয়ে সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রাতে ‘টর্চলাইট জ্বালিয়ে’ দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ইউএনও-ওসিসহ আহত ৩০
  • পড়াশোনায় ফিরছেন দিনাজপুরের ‘ইংলিশম্যান’ হৃদয়, শেখাবেন ইংরেজি
  • আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
  • নারায়ণগঞ্জে ৩০ স্কুলে চালু হলো ‌‘মিড ডে মিল’
  • গাজীপুরে ১০ মাটি খেকোকে কারাদণ্ড
  • পাঠাগার থেকে লুট হওয়া বই ফেরত পেলো কর্তৃপক্ষ