গোয়েন্দা তথ্য ফাঁসে ক্ষুব্ধ ডেমোক্রেট নেতারা
Published: 25th, March 2025 GMT
অত্যন্ত সংবেদনশীল সামরিক পরিকল্পনা ট্রাম্পের প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ভুল করে একটি ম্যাসেজিং গ্রুপে সম্প্রচারের ঘটনায় ডেমোক্রেটদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তারা এই ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার ও আইনের লঙ্ঘন অভিহিত করে এর তদন্ত কংগ্রেসের মাধ্যমে হতে হবে বলে দাবি করেছেন।
ট্রাম্পের প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা ভুল করে একটি ম্যাসেজিং গ্রুপে ইয়েমেনের যুদ্ধ পরিকল্পনা প্রকাশ করেস। ওই গ্রুপটিতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম আটলান্টিকের প্রধান সম্পাদক জেফরি গোল্ডবার্গ অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। আটলান্টিক এ নিয়ে একটি বর্ণনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করার পর হোয়াইট হাউজ ঘটনা স্বীকার করে।
সোমবার হোয়াইট হাউজ জানায়, ইয়েমেনের হুতিদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণ শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে ঘটনাটি ঘটে।
সিনেটে ডেমোক্রেট নেতা চাক শুমার বলেছেন, “দীর্ঘ সময়ের মধ্যে আমি যে সামরিক গোয়েন্দা তথ্যের সবচেয়ে আশ্চর্যজনক লঙ্ঘনের কথা পড়েছি তার মধ্যে এটি একটি।”
“এটি কীভাবে ঘটেছে, এর ফলে কী ক্ষতি হয়েছে এবং ভবিষ্যতে আমরা কীভাবে এটি এড়াতে পারি তার পূর্ণ তদন্ত” করতে রিপাবলিকানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ক্যালিফোর্নিয়ার কংগ্রেসম্যান রো খান্না গার্ডিয়ানকে বলেন, “এটি আমাদেরকে প্রতিপক্ষের কাছে দুর্বল করে তুলেছে। আমাদের সাইবার নিরাপত্তাকে আরো গুরুত্ব সহকারে নিতে হবে।”
হাউস ইন্টেলিজেন্স কমিটির শীর্ষ ডেমোক্রেট জিম হাইমস বলেছেন, “যদি সত্য হয়, তাহলে এই পদক্ষেপগুলো জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার জন্য বিদ্যমান আইন ও বিধিমালার নির্লজ্জ লঙ্ঘন, যার মধ্যে ক্ষতিকারক উপায়ে সেবা প্রদানকারী আমেরিকানদের নিরাপত্তাও অন্তর্ভুক্ত।”
সিনেট গোয়েন্দা কমিটির শীর্ষ ডেমোক্রেট সিনেটর মার্ক ওয়ার্নার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছেন, “এই প্রশাসন আমাদের দেশের সবচেয়ে গোপন তথ্য নিয়ে দ্রুত এবং বেপরোয়াভাবে খেলছে, এবং এটি সব আমেরিকানকে কম নিরাপদ করে তুলছে।”
হাউস ডেমোক্রেটিক সংখ্যালঘু নেতা হাকিম জেফ্রিস “এই অগ্রহণযোগ্য এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন জাতীয় নিরাপত্তা লঙ্ঘনের বিষয়ে বাস্তব তদন্ত” করার আহ্বান জানিয়েছেন।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
টানা বর্ষণে বেহাল বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক, খানাখন্দে ভোগান্তি
টানা বর্ষণে পটুয়াখালী থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের প্রায় ৭১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছোট-বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। এতে ভোগান্তি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে সংশ্লিষ্ট যাত্রীদের। মহাসড়কটির একাধিক বাঁকে খানাখন্দের কারণে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকিও বাড়ছে।
মহাসড়কটিতে চলাচলকারী বাস মালিক সমিতি ও সওজের সূত্র জানা যায়, এই মহাসড়কে প্রতিদিন অন্তত দুই হাজার যানবাহন চলাচল করে। বিশেষ করে পদ্মা সেতু চালুর পর পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে কুয়াকাটাগামী যানবাহনের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়েছে। তবে বর্তমানে সড়কটির বেহাল দশার কারণে প্রতিদিনই ভোগান্তি বাড়ছে।
সংশ্লিষ্ট রুটের একাধিক চালক ও যাত্রী বলেন, ভারী বর্ষণে সড়কের পিচ নরম হয়ে গাড়ির চাপে উঠে যাচ্ছে। ফলে নতুন নতুন গর্ত তৈরি হচ্ছে। পটুয়াখালীর কয়েকটি এলাকাসহ কুয়াকাটাগামী মানুষের যাতায়াতের প্রধান সড়কটির এমন বেহাল দশায় অতিষ্ঠ তাঁরা।
শ্যামলী এনআর পরিবহনের চালক কেরামত আলী বলেন, সড়কটিতে এত গর্ত যে স্টিয়ারিং নিয়ন্ত্রণ করতে সমস্যা হচ্ছে। যাত্রীদেরও দুর্ঘটনার আতঙ্কে থাকতে হচ্ছে। তুহিন পরিবহন নামে আরেকটি বাসের চালক কাওসার হাওলাদার বলেন, দ্রুত এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ না নিলে সড়কটি আরও বেহাল হয়ে পড়বে।
সম্প্রতি মহাসড়কটি ঘুরে দেখা যায়, প্রায় প্রতি ৫০ গজ পরপরই খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে আমতলী চৌরাস্তা, মানিকঝুড়ি, শাখারিয়া, সাহেববাড়ি, আমড়াগাছিয়া, পাটুখালী, বান্দ্রা ও পখিয়া এলাকায় এসব গর্তের পরিমাণ বেশি।
বরিশাল থেকে পটুয়াখালী পর্যন্ত ভালোয় ভালোয় এসেছেন জানিয়ে কুয়াকাটাগামী যাত্রী আল আমিন, পটুয়াখালীর পর আর যেন বাস চলছে না। কিছুক্ষণ পর পর ব্রেক কষতে হচ্ছে। সড়কের অবস্থা বেহাল হওয়ায় একদিকে ঝাঁকুনি, অন্যদিকে সময়ও লাগছে বেশি। আর ঝুঁকিও অনেক বেশি।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ সালে নির্মিত এই সড়কে পদ্মা সেতু চালুর পর যানবাহনের সংখ্যা বাড়ানো হলেও অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। মহাসড়কের এই অংশ দেখভাল করে বরগুনা ও পটুয়াখালী দুই জেলার সওজ।
এ ব্যাপারে বরগুনা সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী কমারেশ বিশ্বাস বলেন, এবার দক্ষিণাঞ্চলে বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে সড়কের পিচ আলগা হয়ে যায় এবং যানবাহনের চাকায় তা সরে গিয়ে দ্রুত খানাখন্দ তৈরি হয়। প্রাথমিকভাবে ভ্রাম্যমাণ দল দিয়ে জরুরি সংস্কারের কাজ চলছে। চলতি অর্থবছরে বরাদ্দ পেলে পূর্ণাঙ্গ সংস্কার কার্যক্রম শুরু করা হবে।
সওজের পটুয়াখালী অঞ্চলে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মাসুদ করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘যত দ্রুত সম্ভব যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘবে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি।’