চট্টগ্রাম সিটির সাবেক দুই মেয়রসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ট্রাইব্যুনালের
Published: 25th, March 2025 GMT
জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের সময় চট্টগ্রাম মহানগরীতে হত্যা, নির্যাতনসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও রেজাউল করিম চৌধুরীসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল আজ মঙ্গলবার এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো.
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য আসামিরা হলেন—হেলাল আকবর চৌধুরী, নুরুল আজিম রনি, শৈবাল দাশ সুমন, আবু ছালেক, মো. এসরারুল হক, এইচ এম মিঠু, নূর মোস্তফা, দেবাশীষ পাল, মো. জমির উদ্দিন, মো. আজিজুর রহমান, জাকারিয়া দস্তগীর, মো. মহিউদ্দিন ফরহাদ ও সুমন দে। প্রসিকিউশন বলছে, এই আসামিরা সবাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া ১৫ জনের বাইরে এই মামলার আসামিদের মধ্যে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল আছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আগে থেকেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি আছে।
এ ছাড়া এই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে ইতিমধ্যে কারাগারে আছেন চট্টগ্রাম-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। এই মামলার আরেক আসামি চট্টগ্রামের যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ ফিরোজ। তিনি অন্য মামলায় গ্রেপ্তার আছেন। তাঁকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৮ এপ্রিল।
আজকের শুনানিতে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ছবি ও ভিডিও দেখে আসামিদের চিহ্নিত করা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যও পাওয়া গেছে। প্রাথমিক তদন্তের পর তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হলো।
পরে সাংবাদিকদের তাজুল ইসলাম বলেন, গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে চট্টগ্রাম মহানগরীতে যে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল, তার সিংহভাগে জড়িত ছিলেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতারা। ভিডিও ফুটেজ, লাইভ ফুটেজ, পত্রপত্রিকার মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া ১৫ আসামিকে চিহ্নিত করেছে তদন্ত সংস্থা।
ট্রাইব্যুনালে আজকের শুনানিতে আরও অংশ নেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন ও বি এম সুলতান মাহমুদ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর য় ন
এছাড়াও পড়ুন:
স্বামী-সন্তানের সঙ্গে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন, মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে বাসের চাকায় মৃত্যু নারীর
চট্টগ্রামের পটিয়ায় মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ার পর বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নারীর নাম ফজিলাতুন নেসা (২৮)। তিনি মাগুরা জেলার মহম্মদপুর থানার মহেশপুর গ্রামের আলিমুজ্জামান সুজনের স্ত্রী।
পুলিশ জানায়, স্বামীর সঙ্গে মোটরসাইকেলে গতকাল রোববার চট্টগ্রামে বেড়াতে আসেন ফজিলাতুন নেসা। তাঁদের ছয় বছর বয়সী সন্তানও সঙ্গে ছিল। গতকাল চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটের একটি বাসায় তাঁরা রাত্রিযাপন করেন। সকালে সেখান থেকে মোটরসাইকেলে করে তাঁরা বান্দরবানের উদ্দেশে রওনা দেন। আলিমুজ্জামান মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন এবং তাঁর পেছনে ছয় বছর বয়সী সন্তান হুমায়ের হাম্মাদ, এরপর ফজিলাতুন নেসা বসে ছিলেন।
সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়ার নয়াহাট এলাকায় পৌঁছায় মোটরসাইকেলটি। সেখানে সামনে থাকা একটি লেগুনা হঠাৎ সড়কে থেমে গেলে তাৎক্ষণিক মোটরসাইকেলটির ব্রেক কষেন আলিমুজ্জামান। এ সময় ফজিলাতুননেসা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়েন। এর পরপরই পেছন থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস ফজিলাতুন নেসাকে পিষ্ট করে। তাঁকে উদ্ধার করে পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল রাতে চট্টগ্রাম নগরের যে বাসাটিতে ফজিলাতুন নেসা ছিলেন, সেটি তাঁর স্বামী আলিমুজ্জামানের বন্ধু রবিউল ইসলামের। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে রবিউল ইসলামের বোন আশরিফা আহমদ ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ফজিলাতুন নেসার স্বামী নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির কনিষ্ঠ সহকারী ব্যবস্থাপক। পরিবার নিয়ে পাহাড় দেখতে বান্দরবানে বেড়াতে যাচ্ছিলেন তিনি। বেড়াতে যাওয়ার পথেই স্বামী-সন্তানের সামনে দুর্ঘটনায় তাঁর প্রাণহানি হয়েছে।
পটিয়া ক্রসিং হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট ওয়াসিম আরাফাত দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নিহত নারীর লাশ আইনি–প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। লেগুনা ও বাসের চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি।