কৃষি শিল্পের মতো পোলট্রি খাতে বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন খামারিরা। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত খামারিরা সরকারের কাছে নগদ প্রণোদনা চেয়েছেন। 

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএসে বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসিয়েশন (বিপিআইএ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খামারিরা এ দাবি তুলে ধরেন।  

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিপিআইএর সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মো.

মহসিন বলেন, বর্তমানে একটি ডিমের উৎপাদন খরচ প্রায় ১১.৬৪ টাকার কাছাকাছি। কিন্তু বাজারে বিক্রি করতে হচ্ছে ৯ টাকা ১০ পয়সায়। সে হিসাবে প্রতি ডিমে একজন ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারির লোকসান দাঁড়ায় ২.৫৪ টাকা। লোকসানে ডিম বিক্রি অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে হাজার হাজার সাধারণ খামারি তাঁদের খামার বন্ধ করে দিতে বাধ্য হবেন। অনেক ছোট খামারি লোকসানের বোঝা টানতে না পেরে উৎপাদনে থাকা ডিম পাড়া মুরগি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে রমজান পরবর্তী মাসগুলোতে ডিমের উৎপাদন ও যোগানের ভারসাম্য নষ্ট করবে। পোলট্রি ফার্মিং ও ডিম মুরগির বিপণনের সঙ্গে জড়িত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর লাখ লাখ মানুষ বেকার হয়ে পড়বেন। অন্যদিকে ভোক্তা বেশি দামে ডিম ক্রয়ের ঝুঁকিতে পড়বেন। 

সংবাদ সম্মেলনে প্রান্তিক খামারিদের রক্ষায় কয়েকটি দাবি জানানো হয়। দাবি গুলোর মধ্যে রয়েছে- ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের জরুরি ভিত্তিতে নগদ আর্থিক প্রণোদনা, বিদ্যুৎ বিলে ২০ শতাংশ ছাড়, প্রতি রমজান মাসে ডিম সংরক্ষণ, ডিম-মুরগির যৌক্তিক দাম পুনঃনির্ধারণ ও জাতীয় পোলট্রি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড গঠন করা।

বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ এসোসয়িশেনের সভাপতি শাহ হাবিবুল হকের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি খন্দকার মনির আহম্মেদ, প্রচার সম্পাদক তোফাজ্জাল হোসেন, পোলট্রি প্রোডাকশন এন্ড সাপ্লাই চেইন বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ অঞ্জন মজুমদার, পোলট্রি খামারি জাহিদ হোসেন জোর্য়াদার প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম রগ র ড ম

এছাড়াও পড়ুন:

মানুষের ‘দ্বিতীয় ঘুম’এর যুগ সম্পর্কে কতটা জানেন

তেলের বাতি, গ্যাসের বাতি এবং বৈদ্যুতিক বাতি ক্রমে সভ্যতায় যোগ হয়েছে। এর আগে মানুষ প্রাকৃতিক আলোর সঙ্গে মানিয়ে জীবন যাপন করতো। প্রাক-শিল্প যুগের সমাজে ‘দ্বিতীয় ঘুম’-এর অভ্যাস ছিলো মানুষের। 

দ্বিতীয় ঘুম বলতে ঐতিহাসিকভাবে প্রচলিত এমন এক ধরনের ঘুমের ধরণকে বোঝায়, যেখানে মানুষ রাতে একটানা আট ঘণ্টা না ঘুমিয়ে ঘুমকে দুটি ভাগে ভাগ করে নিত। একে দ্বি-পর্যায়ের ঘুম বা খণ্ডিত ঘুম বলা হয়। দেখা যেত যে— সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পর মানুষজন বিছানায় যেত এবং প্রায় ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত। 

আরো পড়ুন:

রক্তস্বল্পতা দূর করতে এই শাক খেতে পারেন

টানা ৬ মাস রাতের খাবার দেরিতে খেলে যা হয়

প্রথম ঘুমের পর তারা প্রায় এক ঘণ্টা জেগে থাকত। এই সময়ে বাড়ির হালকা কাজ করা, প্রার্থনা করা, পড়াশোনা করা, প্রতিবেশীদের সাথে গল্প করা বা অন্তরঙ্গ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার মতো কাজগুলো করতো।

তারা আবার বিছানায় ফিরে যেত এবং ভোরের আলো ফোটা পর্যন্ত আরও ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা ঘুমাত, যাকে ‘দ্বিতীয় ঘুম’ বা ‘ভোরের ঘুম’ বলা হত।

গত দুই শতাব্দী ধরে সামাজিক জীবনে আসা পরিবর্তনের কারণে মানুষের দ্বিতীয় ঘুমের অদৃশ্য হয়ে গেছে। যেসব কারণে মানুষ দ্বিতীয় ঘুমের অভ্যাস হারিয়ে ফেলেছে, তার একটি হলো ‘কৃত্রিম আলো ব্যবহার।’
১৭০০ এবং ১৮০০ এর দশকে, প্রথমে তেলের বাতি, তারপর গ্যাসের আলো এবং অবশেষে বৈদ্যুতিক আলো রাতকে আরও ব্যবহারযোগ্য করে তুলেছে। ফলে রাতও মানুষের কাছে জাগ্রত সময়ে পরিণত হতে শুরু করে। 

সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ পরে ঘুমাতে যাওয়ার পরিবর্তে, মানুষ প্রদীপের আলোতে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেগে থাকতে শুরু করে। জৈবিকভাবে, রাতে উজ্জ্বল আলো আমাদের অভ্যন্তরীণ ঘড়িগুলোকে (আমাদের সার্কাডিয়ান ছন্দ) পরিবর্তন করে এবং কয়েক ঘণ্টা ঘুমের পরে আমাদের শরীরকে জাগ্রত করার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। 

ঘুমানোর আগে সাধারণ ‘ঘরের’ আলো মেলাটোনিনকে দমন করে এবং বিলম্বিত করে। শিল্প বিপ্লব কেবল মানুষের কাজ করার পদ্ধতিই নয় বরং তারা কীভাবে ঘুমায় তাও বদলে দিয়েছে। 

২০১৭ সালে বিদ্যুৎবিহীন মাদাগাস্কান কৃষি সম্প্রদায়ের ওপর করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে লোকেরা এখনও বেশিরভাগ সময় দুই ভাগে ঘুমায়, প্রায় মধ্যরাতে ঘুম থেকে ওঠে।

সূত্র: ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ