ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস দেওয়ার দাবি এনসিপির
Published: 25th, March 2025 GMT
আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগেই পোশাকশ্রমিকসহ সব খাতের শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও পূর্ণ বোনাস পরিশোধ করার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ ছাড়া শ্রমিকদের আন্দোলনে পুলিশি হামলারও নিন্দা জানিয়েছে তরুণদের নতুন এই দল।
আজ মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এনসিপি এসব কথা বলেছে। দলের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিটি পাঠিয়েছেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কয়েক দিন ধরে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন কলকারখানায় বেতন-বোনাসের জন্য শ্রমিকেরা আন্দোলন করছেন। শ্রম ভবনের সামনেও শ্রমিকেরা অবস্থান করছেন। এর মধ্যে ‘স্টাইল ক্রাফটস লিমিটেডের’ শ্রমিকদের ১৪ মাসের মজুরি বকেয়া রয়েছে। আন্দোলনরত অবস্থায় স্ট্রোকে ‘স্টাইল ক্রাফটসের’ কর্মকর্তা রাম প্রসাদ সিং জনির মৃত্যু হয়েছে। একই স্থানে তিন মাসের বকেয়া মজুরির দাবিতে ‘অ্যাপারেলস ইকো প্লাস লিমিটেডের’ শ্রমিকেরা আন্দোলন করছেন। এ ছাড়াও এক মাসের বকেয়া বেতন ও লে-অফ ক্ষতিপূরণের দাবিতে রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনের সামনে ভালুকার রোর ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকেরা অবস্থান করছেন।
শুধু পোশাকশ্রমিক নয়, সিলেটের কালাগুল, বুরজান, ছড়াগানসহ চারটি চা-বাগানের শ্রমিকেরা ১৪ সপ্তাহ ধরে মজুরি ও ৮ সপ্তাহ ধরে রেশন পাচ্ছেন না—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি বলেছে, সরকারকে দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে শ্রমিকের সমস্যার সুরাহা করতে হবে। শ্রমিকের জীবনের সংকটকে আড়াল করা যাবে না। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের অন্যতম অংশীজন শ্রমিকেরা। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার রক্তের ওপর দাঁড়িয়েই ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার পতন নিশ্চিত হয়েছে। ফলে সামনের বাংলাদেশ শ্রমজীবী জনতাকে অন্তর্ভুক্ত করেই এগিয়ে যাবে।
ঈদের আগেই সব শ্রমিকের বেতন-বোনাস পরিশোধ করার দাবি জানিয়ে এনসিপির বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশের শ্রম খাতকে সংস্কারের মাধ্যমে পুর্নগঠন করা এখন সময়ের চাহিদা। একই সঙ্গে ন্যায্য দাবিতে শ্রমিকের আন্দোলনে পুলিশি হামলার নিন্দা জানাই আমরা। পুলিশকে আমরা ফ্যাসিস্ট আমলের পুলিশের ভূমিকায় দেখতে চাই না।’ বিজ্ঞপ্তি অবিলম্বে অন্তর্বর্তী সরকারকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শ্রমিকদের মজুরিবিষয়ক সব ন্যায্য দাবিদাওয়া পূরণ করার দাবি জানায় এনসিপি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন করছ ন অবস থ এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে
জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।
আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি সভায়’ এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।
তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। এসব সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল