আসন্ন ঈদুল ফিতরের আগেই পোশাকশ্রমিকসহ সব খাতের শ্রমিকদের বকেয়া বেতন ও পূর্ণ বোনাস পরিশোধ করার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এ ছাড়া শ্রমিকদের আন্দোলনে পুলিশি হামলারও নিন্দা জানিয়েছে তরুণদের নতুন এই দল।

আজ মঙ্গলবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এনসিপি এসব কথা বলেছে। দলের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তিটি পাঠিয়েছেন এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাত।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কয়েক দিন ধরে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন কলকারখানায় বেতন-বোনাসের জন্য শ্রমিকেরা আন্দোলন করছেন। শ্রম ভবনের সামনেও শ্রমিকেরা অবস্থান করছেন। এর মধ্যে ‘স্টাইল ক্রাফটস লিমিটেডের’ শ্রমিকদের ১৪ মাসের মজুরি বকেয়া রয়েছে। আন্দোলনরত অবস্থায় স্ট্রোকে ‘স্টাইল ক্রাফটসের’ কর্মকর্তা রাম প্রসাদ সিং জনির মৃত্যু হয়েছে। একই স্থানে তিন মাসের বকেয়া মজুরির দাবিতে ‘অ্যাপারেলস ইকো প্লাস লিমিটেডের’ শ্রমিকেরা আন্দোলন করছেন। এ ছাড়াও এক মাসের বকেয়া বেতন ও লে-অফ ক্ষতিপূরণের দাবিতে রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ ভবনের সামনে ভালুকার রোর ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকেরা অবস্থান করছেন।

শুধু পোশাকশ্রমিক নয়, সিলেটের কালাগুল, বুরজান, ছড়াগানসহ চারটি চা-বাগানের শ্রমিকেরা ১৪ সপ্তাহ ধরে মজুরি ও ৮ সপ্তাহ ধরে রেশন পাচ্ছেন না—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি বলেছে, সরকারকে দায়িত্বশীল অবস্থান থেকে শ্রমিকের সমস্যার সুরাহা করতে হবে। শ্রমিকের জীবনের সংকটকে আড়াল করা যাবে না। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের অন্যতম অংশীজন শ্রমিকেরা। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার রক্তের ওপর দাঁড়িয়েই ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার পতন নিশ্চিত হয়েছে। ফলে সামনের বাংলাদেশ শ্রমজীবী জনতাকে অন্তর্ভুক্ত করেই এগিয়ে যাবে।

ঈদের আগেই সব শ্রমিকের বেতন-বোনাস পরিশোধ করার দাবি জানিয়ে এনসিপির বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘বাংলাদেশের শ্রম খাতকে সংস্কারের মাধ্যমে পুর্নগঠন করা এখন সময়ের চাহিদা। একই সঙ্গে ন্যায্য দাবিতে শ্রমিকের আন্দোলনে পুলিশি হামলার নিন্দা জানাই আমরা। পুলিশকে আমরা ফ্যাসিস্ট আমলের পুলিশের ভূমিকায় দেখতে চাই না।’ বিজ্ঞপ্তি অবিলম্বে অন্তর্বর্তী সরকারকে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে শ্রমিকদের মজুরিবিষয়ক সব ন্যায্য দাবিদাওয়া পূরণ করার দাবি জানায় এনসিপি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন করছ ন অবস থ এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যানসারে আক্রান্ত ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট বলসোনারো

ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর শরীরে ত্বকের ক্যানসার শনাক্ত হয়েছে। বমি ও নিম্ন রক্তচাপের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর পরীক্ষা-নিরীক্ষায় তার শরীরে ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে। বর্তমানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।

আরো পড়ুন:

৬ বছর পর ব্রাজিলকে হারিয়ে বিশ্বকাপ প্লে-অফে বলিভিয়া

মারাকানায় ব্রাজিলের বড় জয়

প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার একদিন পর তার ত্বকের ক্যানসারের প্রাথমিক ধাপ ধরা পড়ে।

বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে, তার ত্বকের পরীক্ষা করে ‘স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা’ শনাক্ত হয়েছে।এটি ত্বকের মাঝারি মাত্রার ক্যানসার, যা সবচেয়ে হালকা ও সবচেয়ে আক্রমণাত্মক ধাপের মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে।

চিকিৎসকরা বলেছেন যে, নিয়মিত পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে তার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। ৭০ বছর বয়সী বলসোনারো গত মঙ্গলবার বমি এবং নিম্ন রক্তচাপের কারণে ব্রাসিলিয়ার একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তবে ক্যানসারের বিষয়টি গত রবিবারের পরীক্ষায় ধরা পড়ে, যখন তার বুক ও হাতে থাকা ক্ষতস্থানের টিস্যু অপসারণ করা হয়েছিল।

তার অনকোলজিস্ট ক্লাউদিও বিয়ারোলিনি জানিয়েছেন, বলসোনারোর ক্যানসার ‘ইন সিটু’ ধাপে রয়েছে, অর্থাৎ অস্বাভাবিক কোষগুলো এখনো ছড়িয়ে পড়েনি। অস্ত্রোপচারই এর চিকিৎসার জন্য যথেষ্ট হবে। বর্তমানে বলসোনারোর শরীরে সেলাই ও ব্যান্ডেজ রয়েছে, যা দুই সপ্তাহের মধ্যে খোলা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বুধবার তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন, যেখানে তিনি গৃহবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

বলসোনারো ২০২২ থেকে ২০২৩ সালে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার আগেই গৃহবন্দি ছিলেন। সম্প্রতি তাকে ২৭ বছর তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

বিচারপতি আলেকজান্দ্রে দে মোরেসের নির্দেশ অনুযায়ী, গৃহবন্দিত্বে থাকলেও চিকিৎসা জরুরি হলে তিনি বাসার বাইরে যেতে পারেন। তবে প্রতিবারই তার আইনজীবীদের আদালতে চিকিৎসা সংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হয়।

বলসোনারোর সমর্থকরা তার স্বাস্থ্য পরিস্থিতিকে যুক্তি হিসেবে তুলে ধরছেন, যাতে তিনি কারাগারে না গিয়ে বাড়িতেই সাজা ভোগ করতে পারেন। তাদের দাবি, কারাগারে নিলে তার শারীরিক জটিলতা বা দুর্ব্যবহারের ঝুঁকি বাড়বে।

তার জ্যেষ্ঠ পুত্র সিনেটর ফ্লাভিও বলসোনারো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, “আমার বাবা আগেও কঠিন লড়াই লড়ে জয়ী হয়েছেন। এবারও ভিন্ন কিছু হবে না।”

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ