Samakal:
2025-09-18@05:00:07 GMT

ঈদের কেনাকাটা হলো না বেলালের

Published: 25th, March 2025 GMT

ঈদের কেনাকাটা হলো না বেলালের

স্ত্রীকে ফোন করে বলেছিলেন, ঈদুল ফিতরের ছুটিতে বাড়ি আসবেন। আদরের দুই মেয়ে ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করবেন। তা আর হলো না। নৌ দুর্ঘটনায় চিরতরে ছুটি নিলেন বিজিবি সদস্য বেলাল হাসান। তাঁর বাড়িতে চলছে মাতম। 
গত সোমবার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কাজিয়াতল গ্রামে বেলালের লাশ দাফন করা হয়েছে। দেড় বছরের আনহা বিন হাসান ও ৮ বছর বয়সী আন নাফি নামে তাঁর দুই মেয়ে রয়েছে। 
জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় রোহিঙ্গাবোঝাই নৌযান ডুবে যায় কক্সবাজারের টেকনাফে বঙ্গোপসাগরে। সে সময় নারী-শিশুসহ ২৫ রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এ সময় নিখোঁজ হন বিজিবি সদস্যসহ কিছু রোহিঙ্গা। গত রোববার দুপুরে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ গোলারচর এলাকায় বঙ্গোপসাগর থেকে নিখোঁজ বিজিবি সদস্য বেলাল হাসানের লাশ উদ্ধার করা হয়।
বিজিবি সদস্য বেলালের স্ত্রী রোকসানা খানম বলেন, ‘কথা ছিল– ২৫ মার্চ ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসবেন। বাড়িতে ঈদ করবেন। এখন আমাকে অথৈ সাগরে ভাসিয়ে চিরকালের জন্য ছুটি নিয়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। দুটি অবুঝ শিশু সন্তান নিয়ে আমি এখন কোথায় দাঁড়াব? কীভাবে তাদের লেখাপড়া করাব?’
গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের শোকে বাড়ির উঠোনে তাঁর মা উপস্থিত লোকজনের কাছে ছেলের স্মৃতিচারণ করে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। বাবা বজলুর রহমান যেন বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের মৃত্যুটা রহস্যজনক মনে হচ্ছে। অনেক দেরিতে খবর পেলাম কেন?’
ভুক্তভোগীর ভাই নাজমুল হাসান বলেন, ‘শনিবার বিকেলে বিজিবি থেকে আমাদের বাড়িতে দু’জন লোক আসেন। তারা জানান, আমার ভাই বেলাল হাসান শুক্রবার রাতে টেকনাফে রোহিঙ্গা উদ্ধার করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। তাঁকে এখনও পাওয়া যায়নি।’ তাঁর ভাষ্য, রোববার দুপুরে তারা কুমিল্লা বিজিবি ক্যাম্পে যাওয়ার পরপর খবর আসে, রাখাইন এলাকায় তাঁর ভাইয়ের লাশ পাওয়া গেছে।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রহমান জানান, সরকারিভাবে কোনো নির্দেশনা পেলে তাঁর পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক

অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।

বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক। 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী

‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত

সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।

প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের  প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।

জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।

আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে  বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।

লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ