কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে কলেজের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল নেতা আশিক খাঁ খুনের ঘটনায় দুই বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করেছে জেলা বিএনপি। সোমবার জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মীর কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

দলীয় পদ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতারা হলেন– কটিয়াদী উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আশিকুজ্জামান নজরুল এবং উপজেলার চান্দপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জ জজ কোর্টের এপিপি অ্যাডভোকেট রিয়াজুল ইসলাম সেবক।

এদিকে বিএনপির দুই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও স্থানীয় বিএনপি নেতারা। কটিয়াদী পৌর বিএনপির সভাপতি আশরাফুল হক দাদন বলেন, জেলা কমিটি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোনো নেতার অপরাধের দায় দল নেবে না। আশিক হত্যায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন তিনি। 

জেলা বিএনপির সিদ্ধান্তে সন্তোষ জানিয়ে কটিয়াদী উপজেলা বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মুমুরদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন সাবেরী বলেন, বিএনপি নেতা আশিকুজ্জামান নজরুল ও রিয়াজুল ইসলাম সেবকের নেতৃত্বে ছাত্রদল কর্মী আশিকের ওপর হামলা হয়। পুলিশ ও হাজার হাজার মানুষের সামনেই ওই ছাত্রদল নেতাকে খুন করা হয়।

কটিয়াদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তহসিবুল হাসিব বলেন, আশিক ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। তাঁকে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই নেতাকে শাস্তি দেওয়ায় জেলা বিএনপি নেতাদের অভিনন্দন জানান তিনি।

গত শনিবার কটিয়াদীর চাতল বাগহাটা স্কুল অ্যান্ড কলেজের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে করা একটি অভিযোগের ভিত্তিতে বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক মো.

লোকমান মুন্সী ও সেকশন অফিসার মো. আহাদ খান সরেজমিন তদন্ত করতে প্রতিষ্ঠানে যান।

এ সময় পরিদর্শকদের উপস্থিতিতে বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আশিকুজ্জামান নজরুল, অ্যাডভোকেট রিয়াজুল ইসলাম সেবক ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আলী হায়দার বাবুলের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান চন্দনের লোকজনের ওপর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় মুমুরদিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আশিক খাঁ নিহত ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের দুই কর্মকর্তা, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।

এ ঘটনায় নিহত ছাত্রদল নেতা আশিকের মা রিতা আক্তার বাদী হয়ে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও চান্দপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিসহ ২৯ জনকে আসামি করে কটিয়াদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

কটিয়াদী থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি অ্যাডভোকেট আলী হায়দার বাবুল ও আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ছ ত রদল ন ত ব এনপ র স ছ ত রদল র ল ইসল ম উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার

স্বাধীনতার পর যারাই দেশ চালিয়েছে, তারা সবাই হিন্দুদের ব্যবহার করে শুধু নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার।

আজ শুক্রবার খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাধীনতা চত্বরে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু কমিটির উদ্যোগে হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন। তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাগ্যোন্নয়ন ও ডুমুরিয়া-ফুলতলাসহ দেশের সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নে এখন প্রয়োজন ইসলামি সরকার। যাঁরা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে ভয়-হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকিতে হিন্দুরা আর ভয় পাবে না। হিন্দুদের বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

গোলাম পরওয়ার বলেন, ৫৪ বছর যারা দেশ চালিয়েছে তারা সন্ত্রাস, দখলদারি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে হিন্দুদের শোষণ করেছে। জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের নির্মূল করা হবে। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, আমরা সেই পরিবর্তন আনতে চাই। লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। একটি দলই বাকি—জামায়াতে ইসলামী, তার প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয়ের বিষয়টি তুলে ধরে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিবর্তনের বার্তা দিয়েছে, আগামীতেও সেই বার্তা জনগণ দেবে।’

চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে দেড় হাজার শহীদ ও ৪০ হাজার আহতের কথা উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট দিয়েই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।

উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি বাবু কৃষ্ণ নন্দীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি দেব প্রসাদ মন্ডলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহসভাপতি আবুল খায়ের, শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন, শরাফপুর সর্বজনীন পূজা মন্দিরের গোঁসাই সাধু প্রমথ গাইন, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সহসভাপতি হরিদাস মন্ডল, কানাই লাল কর্মকার ও প্রশান্ত কুমার মন্ডল, কোষাধ্যক্ষ গৌতম কুমার মন্ডল, পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুভাষ সরদার, মাগুরখালী ইউনিয়ন সহসভাপতি সুজিৎ কুমার সরকার, ধামালিয়া ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুন্ডু, রুদাঘয়া ইউনিয়ন সভাপতি বিপ্লব সরকার, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার, খর্ণিয়া ইউনিয়ন সভাপতি নারায়ণ রাহা, মাগুরঘোনা ইউনিয়ন সভাপতি বিশ্বনাথ দাস, সাহস ইউনিয়ন সভাপতি তন্ময় মন্ডল, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি নিরঞ্জন রায়, রংপুর ইউনিয়ন সভাপতি তরুন কুমার মন্ডল, শোভনা ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির মহিলা সম্পাদক প্রিয়ংকা মন্ডল, মাগুরখালী ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ কুমার সরকার, আটলিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অনিমেষ মন্ডল, গুটুদিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মনোরঞ্জন মন্ডল, শরাফপুর ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস, শোভনা ইউনিয়ন সভাপতি স্বদেশ হালদার, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অরুন কুমার আচার্য প্রমুখ।

হিন্দু সম্মেলন ঘিরে ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে বর্ণিল মিছিল এসে জমায়েত হয়। সমাবেশ শেষে একটি গণমিছিল ডুমুরিয়া সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

হিন্দু সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, নতুন প্রজন্মের প্রথম ভোট দাঁড়িপাল্লার পক্ষে হোক। আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ারকে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করতে সবার প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
মতুয়া সংঘের সভাপতি সুদীপ্ত কুমার সুন্দর মন্ডল বলেন, ‘আমরা আর সংখ্যালঘু বলে পরিচয় শুনতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশি। স্বাধীনতার পর কোনো সরকার হিন্দুদের দাবিতে কাজ করেনি। এবার প্রমাণ হবে, হিন্দু মানেই একটি নির্দিষ্ট দল নয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঝিনাইদহে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৫, এলাকায় উত্তেজনা
  • ছাত্রদলের কমিটি নেই ১৪ মাস, স্থবির কার্যক্রম
  • মামলায় ঝুলে গেছে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন
  • গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন সিলেট-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আদিবা হোসেন
  • সম্মেলনের প্রায় তিন মাস পর রাজশাহী মহানগর বিএনপির আংশিক কমিটি
  • হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার