স্ত্রীকে ফোন করে বলেছিলেন, ঈদুল ফিতরের ছুটিতে বাড়ি আসবেন। আদরের দুই মেয়ে ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঈদের কেনাকাটা করবেন। তা আর হলো না। নৌ দুর্ঘটনায় চিরতরে ছুটি নিলেন বিজিবি সদস্য বেলাল হাসান। তাঁর বাড়িতে চলছে মাতম। 

গত সোমবার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কাজিয়াতল গ্রামে বেলালের লাশ দাফন করা হয়েছে। দেড় বছরের আনহা বিন হাসান ও ৮ বছর বয়সী আন নাফি নামে তাঁর দুই মেয়ে রয়েছে। 

জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় রোহিঙ্গাবোঝাই নৌযান ডুবে যায় কক্সবাজারের টেকনাফে বঙ্গোপসাগরে। সে সময় নারী-শিশুসহ ২৫ রোহিঙ্গাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এ সময় নিখোঁজ হন বিজিবি সদস্যসহ কিছু রোহিঙ্গা। গত রোববার দুপুরে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ গোলারচর এলাকায় বঙ্গোপসাগর থেকে নিখোঁজ বিজিবি সদস্য বেলাল হাসানের লাশ উদ্ধার করা হয়।

বিজিবি সদস্য বেলালের স্ত্রী রোকসানা খানম বলেন, ‘কথা ছিল– ২৫ মার্চ ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসবেন। বাড়িতে ঈদ করবেন। এখন আমাকে অথৈ সাগরে ভাসিয়ে চিরকালের জন্য ছুটি নিয়ে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। দুটি অবুঝ শিশু সন্তান নিয়ে আমি এখন কোথায় দাঁড়াব? কীভাবে তাদের লেখাপড়া করাব?’

গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ছেলের শোকে বাড়ির উঠোনে তাঁর মা উপস্থিত লোকজনের কাছে ছেলের স্মৃতিচারণ করে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। বাবা বজলুর রহমান যেন বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলের মৃত্যুটা রহস্যজনক মনে হচ্ছে। মনে হয়, কিছু গোপন করা হয়েছে। অনেক দেরিতে আমরা খবর পেলাম কেন?’

ভুক্তভোগীর ভাই নাজমুল হাসান বলেন, ‘শনিবার বিকেলে বিজিবি থেকে আমাদের বাড়িতে দু’জন লোক আসেন। তারা জানান, আমার ভাই বেলাল হাসান শুক্রবার রাতে টেকনাফে রোহিঙ্গা উদ্ধার করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন। তাঁকে এখনও পাওয়া যায়নি।’ তাঁর ভাষ্য, রোববার দুপুরে তারা কুমিল্লা বিজিবি ক্যাম্পে যাওয়ার পরপর খবর আসে, রাখাইন এলাকায় তাঁর ভাইয়ের লাশ পাওয়া গেছে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুর রহমান জানান, সরকারিভাবে কোনো নির্দেশনা পেলে তাঁর পরিবারকে সহযোগিতা করা হবে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

সবকিছু সহ্য করে তিনি আজীবন আমার পাশে থেকেছেন: বাঁধন

মানুষ বছরের একটি দিন বাবার জন্য আলাদা করে রাখতে চায়, যেমনটা রাখা হয় মায়ের জন্য। এই বিশেষ দিনটি আমাদের মনে করিয়ে দেয়, জীবনের প্রতিটি ধাপে বাবার অবদান কতটা গভীর। আজ বাবা দিবসে বাবা প্রকৌশলী আমিনুল হককে নিয়ে কিছু না বলা কথা বলেছেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন।

তিনি লিখেছেন, “আমার বাবা আমার সুপারহিরো। তিনি আমাকে ভালোবাসা আর বিশ্বাসে এমনভাবে বড় করেছেন যে, আমি যদি কখনো চাঁদ চাইতাম, তিনি বলতেন, ‘অপেক্ষা কর-আমি নিয়ে আসছি।’ আমি তার মূল্যবোধ, শক্তি এবং অটল সাহসের মাঝে বড় হয়েছি।”

তিনি আরও লিখেছেন, ‘আমার জীবনের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ মানুষ তিনি-যিনি আমাকে নিঃশর্তভাবে ভালোবাসেন। তার মতো সৎ এবং দেশপ্রেমিক মানুষ আমি আর কখনো দেখিনি।’

বাবার সঙ্গে তার মতের পার্থক্যও আছে বলে জানালেন এই অভিনেত্রী। তার কথায়, ‘আমাদের মাঝে মতপার্থক্য আছে-সবসময় একমত হই না। তবু আমাদের সম্পর্কে যে জিনিসটি কখনো বদলায়নি, সেটা হলো পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা।’

শৈশব থেকে আজ পর্যন্ত বাঁধনকে নিয়ে অনেক কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তার বাবাকে। তবুও সব মেনে নিয়ে পাশে থেকেছেন তিনি।

বাঁধনের ভাষ্য, ‘আমি কখনোই একেবারে নিয়মমাফিক বা আদর্শ মেয়ে ছিলাম না। শৈশব থেকে আজ অবধি আমি জানি, আমার কারণে তাকে অনেক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। আমি ছিলাম একগুঁয়ে, আবেগপ্রবণ, কখন কী করি বলা যায় না-তবুও সবকিছু সহ্য করে তিনি আজীবন আমার পাশে থেকেছেন।’

সব শেষে বাবাকে ধন্যবা জানিয়ে বাঁধন লিখেছেন, ‘তুমি যেমন, তেমনি থাকার জন্য ধন্যবাদ আব্বু। আমি তোমাকে এত ভালোবাসি-যা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ