প্রধান উপদেষ্টা আগে ভারত যেতে চাইলেও সাড়া মেলেনি: দ্য হিন্দুকে শফিকুল আলম
Published: 26th, March 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সবার আগে ভারত সফরে যেতে চাইলেও দেশটি থেকে সাড়া মেলেনি বলে জানিয়েছেন তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। মঙ্গলবার ভারতের ‘দ্য হিন্দু’কে তিনি বলেন, ‘চীন সফর চূড়ান্ত করার অনেক আগে ড. ইউনূস ভারতে যেতে চেয়েছিলেন। গত ডিসেম্বরে ভারতকে বার্তা পাঠানো হলেও দুঃখের বিষয়, তারা ইতিবাচক সাড়া দেয়নি।’
চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বুধবার চীন পৌঁছেছেন ড.
গত চার মাসের মধ্যে ড. ইউনূস দ্বিতীয় সরকারপ্রধান, যিনি দক্ষিণ এশিয়া থেকে চীন সফর করছেন। গত ডিসেম্বরে চার দিনের সফরে চীন গিয়েছিলেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা। চীন থেকে ফিরে ড. ইউনূস ব্যাংককে যাবেন বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে।
আগামী ৩ ও ৪ এপ্রিল সে সম্মেলনে ড. ইউনূস চান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করতে। প্রেস সচিব বলেন, ‘অনেক দিন আগেই ইচ্ছা প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকার ভারতকে বার্তা দিয়েছে। কিন্তু বৈঠক নিয়ে ভারত এখনও কিছু জানায়নি।’
তিনি বলেন, ‘সফরে চীনের বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করবেন। তিনি বাংলাদেশকে ব্যবসাবান্ধব দেশ হিসেবে পরিচিত করাতে চান। এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে চান, যাতে বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশ নিয়ে আগ্রহী হন। বহু দেশ নানা কারণে চীনা বিনিয়োগ নিয়ে শঙ্কিত। বাংলাদেশ সে সুযোগ গ্রহণ করতে চায়। চীনা বিনিয়োগকারীদের স্বাগত জানাতে বাংলাদেশ প্রস্তুত।’
গত বছর সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ইর সঙ্গে ড. ইউনূসের সাক্ষাৎ হয়। ওয়াং ই সেই সময় ড. ইউনূসকে ‘চীনের পুরোনো বন্ধু’ আখ্যা দেন। প্রধান উপদেষ্টাও চীনকে বাংলাদেশে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের প্যানেল তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
গত মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে ড. ইউনূস জানিয়েছেন, বাংলাদেশকে দ্রুত দক্ষিণ এশিয়ার ‘গ্রোথ ইঞ্জিন’ হিসেবে তিনি প্রতিষ্ঠিত করতে চান। ড. ইউনূস বলেছেন, কুমিরা থেকে টেকনাফ পর্যন্ত বিস্তীর্ণ সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
প্রেস সচিব জানান, ড. ইউনূসকে মালয়েশিয়াও দ্বিপক্ষীয় সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে এবং তিনি তা গ্রহণ করেছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
কমলার বইয়ে ‘পর্দার অন্তরালের গল্প’
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের অভিজ্ঞতা নিয়ে বই লিখেছেন সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। স্মৃতিচারণামূলক বইটির তিনি নাম দিয়েছেন ‘হান্ড্রেড অ্যান্ড সেভেন ডেজ’ বা ‘১০৭ দিন’। বইটিতে গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ‘পর্দার অন্তরালের গল্প খোলামেলাভাবে তুলে ধরেছেন’ কমলা।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার কমলা হ্যারিস নিজেই নতুন বইয়ের কথা জানান। বইটির প্রকাশক বিশ্বখ্যাত মার্কিন প্রকাশনা সংস্থা সাইমন অ্যান্ড শুস্টার। আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর বইটি বাজারে আসবে বলে জানিয়েছেন বিগত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস।
বইটি হাতে নিয়ে করা একটি ভিডিও বার্তা নিজের ভেরিফায়েড ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে পোস্ট করেছেন কমলা হ্যারিস। সেখানে বলেন, ‘মাত্র এক বছরের কিছুটা বেশি সময় আগে আমি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য নিজের নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছিলাম। ১০৭ দিন আমি পুরো দেশ ভ্রমণ করি। আমাদের ভবিষ্যতের জন্য লড়াই করি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আধুনিক ইতিহাসে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত নির্বাচনী প্রচার ছিল এটি।’
কমলা হ্যারিস যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ও একমাত্র নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট। ২০২৪ সালের ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে হেরে যান তিনি। এরপর জনপরিসরে কার্যত তাঁকে তেমন একটা দেখা যায়নি। এর মধ্যে কমলা এই বইয়ের ঘোষণা দিলেন।
অনেকটা নাটকীয়ভাবে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হয়েছিলেন কমলা হ্যারিস। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আবারও ডেমোক্র্যাটদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ৮২ বছর বয়সী বাইডেনের শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে দলের মধ্যে প্রশ্ন তৈরি হয়। অনেক ডেমোক্র্যাট নেতা এর সমালোচনা শুরু করেন। এর মধ্যে গত বছরের জুলাইয়ে বাইডেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াই থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলে প্রার্থী হন কমলা।
ক্যালিফোর্নিয়া থেকে নির্বাচিত সাবেক মার্কিন সিনেটর কমলা ভিডিও বার্তায় জানান, নির্বাচন নিয়ে বইটিতে ‘খোলামেলাভাবে’ লিখেছেন তিনি। আরও বলেছেন, বইটি পড়লে বিগত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারের ‘পর্দার অন্তরালের অনেক বিষয়’ সম্পর্কে জানতে পারবেন পাঠকেরা।
কমলা হ্যারিস তাঁর ইনস্টাগ্রাম পোস্টে লিখেছেন, ‘প্রচার নিয়ে বিশ্ব যা দেখেছে, সেটা ছিল কেবল গল্পের একটি অংশ মাত্র। এই বই আমাদের সেই নির্বাচনী লড়াই ফিরে দেখা নিয়ে নয়। আমার সেই সময়ের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার খোলামেলা বিবরণ তুলে ধরেছি এখানে। আমি বিশ্বাস করি, আমি সেই সময় যা দেখেছি, যা শিখেছি ও সামনে এগিয়ে যেতে যা প্রয়োজন সেসব অন্য সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নেওয়ার একটা মূল্য রয়েছে। এই বইটি লেখার সময় আমার মনে একটি সত্য বারবার ফিরে এসেছে। আর সেই সত্যটা হলো—কখনো কখনো লড়াইয়ের জন্য সময় প্রয়োজন।’
বইয়ের আগে আরও একটি ঘোষণা দেন কমলা। গত বুধবার তিনি জানান, আগামী বছর ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর নির্বাচনে অংশ নেবেন না। তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ২০২৮–এর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কমলা হ্যারিসের আবার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা ‘উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না’।