গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর বিভাজন স্বৈরাচারের পুনরুত্থান ঘটাবে
Published: 27th, March 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ৩১ বিশিষ্ট নাগরিক। গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর এ বিভাজন স্বৈরাচারের পুনরুত্থান ঘটাবে বলে সতর্ক করেছেন তাঁরা।
আজ বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।
বিবৃতিতে নাগরিকেরা বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি যে অন্তর্বর্তী সরকার, গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলসমূহ এবং দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীকে একে অপরের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দায়িত্বজ্ঞানহীন ও উসকানিমূলক অপতথ্য এবং ভুয়া তথ্য সমাজ ও রাজনৈতিক পরিসরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে, যা গণতন্ত্রকামী শক্তিগুলোর মধ্যে বিভাজনের বীজ রোপণ করতে পারে। এ ধরনের বিভাজন কেবল গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রক্রিয়াকেই হুমকিতে ফেলবে না, বরং পতিত স্বৈরাচারের রাজনীতির পুনরুত্থানও ঘটাতে সহায়তা করবে।
এ পরিস্থিতি এড়াতে অন্তর্বর্তী সরকার ও গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে। এর মধ্যে রয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সূচির ঘোষণা; নির্বাচনী ব্যবস্থার জন্য ও গণতন্ত্র সুসংহতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম সংস্কারবিষয়ক ঐকমত্য ও বাস্তবায়ন; গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি সর্বসম্মত সংস্কার কর্মসূচি প্রণয়ন, যা নির্বাচনের পর বাস্তবায়ন করা হবে, যেন পতিত স্বৈরশাসকের ব্যবহৃত জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাসহ সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে জনগণের সেবায় পুনর্গঠিত করা যায়; কোনোভাবেই পতিত স্বৈরশাসকের শক্তির সঙ্গে আপস করবে না মর্মে সব গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি এবং পতিত স্বৈরশাসক এবং তার সহযোগী ও সংগঠনগুলোর, বিশেষত আওয়ামী লীগের বিচার।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে আছেন বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, গবেষক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গণতন ত র র জন ত ক ব ভ জন
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব