অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনৈতিক দল ও সশস্ত্র বাহিনীকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ৩১ বিশিষ্ট নাগরিক। গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর এ বিভাজন স্বৈরাচারের পুনরুত্থান ঘটাবে বলে সতর্ক করেছেন তাঁরা।

আজ বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।

বিবৃতিতে নাগরিকেরা বলেন, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি যে অন্তর্বর্তী সরকার, গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলসমূহ এবং দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনীকে একে অপরের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে এক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দায়িত্বজ্ঞানহীন ও উসকানিমূলক অপতথ্য এবং ভুয়া তথ্য সমাজ ও রাজনৈতিক পরিসরে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারে, যা গণতন্ত্রকামী শক্তিগুলোর মধ্যে বিভাজনের বীজ রোপণ করতে পারে। এ ধরনের বিভাজন কেবল গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রক্রিয়াকেই হুমকিতে ফেলবে না, বরং পতিত স্বৈরাচারের রাজনীতির পুনরুত্থানও ঘটাতে সহায়তা করবে।

এ পরিস্থিতি এড়াতে অন্তর্বর্তী সরকার ও গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোকে জাতীয় ঐক্য ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয় বিবৃতিতে। এর মধ্যে রয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সূচির ঘোষণা; নির্বাচনী ব্যবস্থার জন্য ও গণতন্ত্র সুসংহতকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম সংস্কারবিষয়ক ঐকমত্য ও বাস্তবায়ন; গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি সর্বসম্মত সংস্কার কর্মসূচি প্রণয়ন, যা নির্বাচনের পর বাস্তবায়ন করা হবে, যেন পতিত স্বৈরশাসকের ব্যবহৃত জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাসহ সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে জনগণের সেবায় পুনর্গঠিত করা যায়; কোনোভাবেই পতিত স্বৈরশাসকের শক্তির সঙ্গে আপস করবে না মর্মে সব গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিশ্রুতি এবং পতিত স্বৈরশাসক এবং তার সহযোগী ও সংগঠনগুলোর, বিশেষত আওয়ামী লীগের বিচার।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে আছেন বিশিষ্ট আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, রাজনৈতিক বিশ্লেষক জাহেদ উর রহমান, গবেষক মো.

খান সোবায়েল বিন রফিক, অর্থনীতিবিদ ও লেখক জ্যোতি রহমান, স্থপতি মার্জিয়া মিথিলা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণতন ত র র জন ত ক ব ভ জন

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকের আলোচনা ও ঐকমত্যের সূচনাকে স্বাগত জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)। দলটি বলেছে, আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, জনগণ শুধু কথায় নয়, বাস্তবে সংস্কার ও বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতির পদক্ষেপ দেখতে চায়।

শুক্রবার জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব ও সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।

তারা বলেন, এই উচ্চপর্যায়ের সংলাপ দেশে রাজনৈতিক সমঝোতা ও জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের কাঙ্ক্ষিত অভিপ্রায় অনুযায়ী রাষ্ট্র সংস্কার, শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এবং গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠার পথে এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

বিবৃতিতে নেতারা বলেন, অধ্যাপক ইউনূস এবং তারেক রহমানের বৈঠক ও বিবৃতিতে আগামী বছরের পবিত্র রমজানের আগেই একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ এবং তার পূর্বশর্ত হিসেবে কাঙ্ক্ষিত সংস্কার ও ফ্যাসিস্ট সরকারের বিচারের প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি অর্জনের ঘোষিত প্রত্যয়ে রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, গণমানুষের রক্তস্নাত গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম দাবি- গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাঠামোগত মৌলিক সংস্কার এবং গণহত্যাকারী ফ্যাসিবাদী শক্তির বিচারের ব্যবস্থা। এই বিষয় দুটির দৃশ্যমান অগ্রগতিই কেবল একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ভিত্তি রচনা করতে পারে।

রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সমাজের শ্রমজীবী, কর্মজীবী ও পেশাজীবীদের মতামত, আকাঙ্ক্ষা ও অংশগ্রহণে রাষ্ট্রীয় রাজনীতির মৌলিক সংস্কারের লক্ষ্যে দ্রুত ‘জাতীয় সনদ’ প্রণয়নের আহ্বান জানায় জেএসডি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে জনগণের হিস্যা কোথায়
  • প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন: ফখরুল
  • ইউনূস-তারেকের বৈঠক দেশের মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা, আশার আলো
  • বর্তমান সংকটে হবস, রবীন্দ্রনাথ ও অমর্ত্য সেন যেখানে প্রাসঙ্গিক
  • ড. ইউনূস ও তারেকের বৈঠক জাতির জন্য স্বস্তির বার্তা: ১২ দলীয় জোট
  • লন্ডনে ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠককে স্বাগত জানাল জেএসডি