বাবা অর্থনৈতিকভাবে খুব সচ্ছল ছিলেন না। তবু ঈদ এলে নতুন জামা দেওয়ার চেষ্টা করতেন। কোনো কোনো সময় তা-ও পারতেন না। এ জন্য মন খারাপ হতো। এখন বুঝতে পারেন, যতটা না তাঁদের মন খারাপ হতো, সন্তানদের নতুন জামা দিতে না পারায় মা–বাবার বেশি খারাপ লাগত। আসলে নেওয়ার চেয়ে পরিবারকে দিতে পারার মধ্যেই বেশি আনন্দ। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারাটাই বেশি আনন্দের।

কথাগুলো বলছিলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার একটি ডাইং কারখানায় সহকারী সুপারভাইজার মো.

জুয়েল (৩০)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ডে তাঁর সঙ্গে কথা হয়। নোয়াখালীর চর আলেকজান্ডারে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন।

ঈদযাত্রার অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে জুয়েল ফিরে যান শৈশবে। তিনি জানান, শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে যখন উপার্জন করতে শুরু করেছেন, তখনই তাঁর ঈদের উপলব্ধি বদলে গেছে। শৈশবে ঈদের উপহার না পেলে যতটা যন্ত্রণা হতো, বড় হওয়ার পর পরিবারকে পছন্দমতো দিতে না পারলে তার চেয়ে বেশি মন খারাপ হয়।

জুয়েলের ঈদভাবনার কথা শোনার সময় পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর সহকর্মী মো. রাহীম। জুয়েলের আলাপে মাথা নাড়িয়ে সায় দিচ্ছিলেন তিনি। মা–বাবা, চাচা-ভাতিজার জন্য ঈদের উপহার নিয়ে তিনি নরসিংদীতে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। অর্থনৈতিক দৈন্যদশায় উচ্চমাধ্যমিক শেষ করতে না পারা রাহীম জুয়েলের সঙ্গে ফতুল্লার মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডাইং কারখানায় অপারেটর সহকারীর কাজ করেন।

রাহীম বলেন, তাঁর কাছে এখনো ঈদ মানে হাতে মেহেদি দেওয়া। মা–বাবাকে সালাম করে তাঁদের কাছ থেকে সালামি নেওয়া। তাই প্রতিবারই কষ্ট করে হলেও গ্রামে ঈদ করতে যান।

তৈরি পোশাক কারখানার এই দুই শ্রমিক জানান, মার্চ মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের কারখানা ছুটি হয়েছে। সব মিলিয়ে আট দিনের ছুটি পেয়েছেন। সময়মতো বেতন, বোনাস ও লম্বা ছুটি এবার তাঁদের ঈদের আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছে।

তবে নিজেরা বেতন-বোনাস পেলেও অনেক শ্রমিক বেতন না পাওয়ায় তাঁদের এখনো আন্দোলন করতে হচ্ছে বলে জানান। জুয়েল বলেন, ‘সারা বছর আমরা নানাভাবে কষ্ট করে দিন কাটাই। আশা থাকে ঈদ-পার্বণে পরিবার নিয়ে আনন্দ-উৎসব কাটানোর। পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর। কিন্তু যখন বেতন–বোনাস হয় না, তখন শ্রমিকদের আর ঈদ বলতে কিছু থাকে না।’

জুয়েল ও রাহীম জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে গাড়ির টিকিট পেতে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে নরসিংদীর টিকিটের জন্য ১০ টাকা ও নোয়াখালীর জন্য প্রতিটি টিকিটে ৫০ টাকা বেশি দিতে হয়েছে তাঁদের।

বৃহস্পতিবার বিকেলের পর সাইনবোর্ড ও শিমরাইল মোড়ে আসা অধিকাংশ শ্রমিকই জুয়েল, রাহীমের মতো নারায়ণগঞ্জের তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। ঈদের লম্বা ছুটি পেয়ে তাঁরা প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে ফিরছেন। পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোটাই তাঁদের ঈদের আনন্দ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র ঈদ করত আনন দ

এছাড়াও পড়ুন:

আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার

আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। 

শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।  

গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।

এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার বিকেলে র‌্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে। 

পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএনপি কি জামায়াতকে চাপে রাখার কৌশলে
  • সোনারগাঁ উপজেলা জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের কমিটি গঠন
  • ৮নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন
  • আড়াইহাজারে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কমিটি গঠন
  • মুক্তিপণ না পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিকে হত্যা
  • ইসলামী আন্দোলনের বাবুরাইল ইউনিট কমিটি গঠন
  • পরিবার নিয়ে চীন ভ্রমণে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সদস্যরা
  • নারায়ণগঞ্জে ফ্যাসিবাদদের পুনর্বাসনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে : আবদুল্লাহ
  • আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার