পোশাকশ্রমিকদের ঈদভাবনা: নেওয়ার চেয়ে পরিবারকে দিতে পারাই বেশি আনন্দের
Published: 27th, March 2025 GMT
বাবা অর্থনৈতিকভাবে খুব সচ্ছল ছিলেন না। তবু ঈদ এলে নতুন জামা দেওয়ার চেষ্টা করতেন। কোনো কোনো সময় তা-ও পারতেন না। এ জন্য মন খারাপ হতো। এখন বুঝতে পারেন, যতটা না তাঁদের মন খারাপ হতো, সন্তানদের নতুন জামা দিতে না পারায় মা–বাবার বেশি খারাপ লাগত। আসলে নেওয়ার চেয়ে পরিবারকে দিতে পারার মধ্যেই বেশি আনন্দ। পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে পারাটাই বেশি আনন্দের।
কথাগুলো বলছিলেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার একটি ডাইং কারখানায় সহকারী সুপারভাইজার মো.
ঈদযাত্রার অভিজ্ঞতা বলতে গিয়ে জুয়েল ফিরে যান শৈশবে। তিনি জানান, শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে যখন উপার্জন করতে শুরু করেছেন, তখনই তাঁর ঈদের উপলব্ধি বদলে গেছে। শৈশবে ঈদের উপহার না পেলে যতটা যন্ত্রণা হতো, বড় হওয়ার পর পরিবারকে পছন্দমতো দিতে না পারলে তার চেয়ে বেশি মন খারাপ হয়।
জুয়েলের ঈদভাবনার কথা শোনার সময় পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন তাঁর সহকর্মী মো. রাহীম। জুয়েলের আলাপে মাথা নাড়িয়ে সায় দিচ্ছিলেন তিনি। মা–বাবা, চাচা-ভাতিজার জন্য ঈদের উপহার নিয়ে তিনি নরসিংদীতে গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। অর্থনৈতিক দৈন্যদশায় উচ্চমাধ্যমিক শেষ করতে না পারা রাহীম জুয়েলের সঙ্গে ফতুল্লার মেট্রো নিটিং অ্যান্ড ডাইং কারখানায় অপারেটর সহকারীর কাজ করেন।
রাহীম বলেন, তাঁর কাছে এখনো ঈদ মানে হাতে মেহেদি দেওয়া। মা–বাবাকে সালাম করে তাঁদের কাছ থেকে সালামি নেওয়া। তাই প্রতিবারই কষ্ট করে হলেও গ্রামে ঈদ করতে যান।
তৈরি পোশাক কারখানার এই দুই শ্রমিক জানান, মার্চ মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধের পর বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁদের কারখানা ছুটি হয়েছে। সব মিলিয়ে আট দিনের ছুটি পেয়েছেন। সময়মতো বেতন, বোনাস ও লম্বা ছুটি এবার তাঁদের ঈদের আনন্দ বাড়িয়ে দিয়েছে।
তবে নিজেরা বেতন-বোনাস পেলেও অনেক শ্রমিক বেতন না পাওয়ায় তাঁদের এখনো আন্দোলন করতে হচ্ছে বলে জানান। জুয়েল বলেন, ‘সারা বছর আমরা নানাভাবে কষ্ট করে দিন কাটাই। আশা থাকে ঈদ-পার্বণে পরিবার নিয়ে আনন্দ-উৎসব কাটানোর। পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোর। কিন্তু যখন বেতন–বোনাস হয় না, তখন শ্রমিকদের আর ঈদ বলতে কিছু থাকে না।’
জুয়েল ও রাহীম জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে গাড়ির টিকিট পেতে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে নরসিংদীর টিকিটের জন্য ১০ টাকা ও নোয়াখালীর জন্য প্রতিটি টিকিটে ৫০ টাকা বেশি দিতে হয়েছে তাঁদের।
বৃহস্পতিবার বিকেলের পর সাইনবোর্ড ও শিমরাইল মোড়ে আসা অধিকাংশ শ্রমিকই জুয়েল, রাহীমের মতো নারায়ণগঞ্জের তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। ঈদের লম্বা ছুটি পেয়ে তাঁরা প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে ফিরছেন। পরিবারের মুখে হাসি ফোটানোটাই তাঁদের ঈদের আনন্দ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র র ঈদ করত আনন দ
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে ইসলামী আন্দোলনের পরিচিতি সভা ও শপথ গ্রহণ
মুক্তির মূলমন্ত্র ইসলামী শাসনতন্ত্র, শুধু নেতা নয় নীতির পরিবর্তন চাই পীরসাহেব চরমোনাই এই স্লোগানকে সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মোগড়াপাড়া ইউনিয়ন কমিটির পরিচিতি সভা ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান (৩০ জুলাই) বুধবার বিকেলে মোগড়াপাড়া গোহাট্রা অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মোগড়াপাড়া ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মুহা আব্দুল লতিফ এর সভাপতিত্বে মুহা. জয়নাল আবেদিন এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে (নারায়ণগঞ্জ -৩) সোনারগাঁও আসনের হাতচপাখা মার্কার পদপ্রার্থী মুহা ফারুক আহমাদ মুন্সি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মোগড়াপাড়া ইউনিয়ন মুজাহিদ কমিটির সদর হাজী মুহা আলী আহম্মদ মুন্সি, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সহ-সভাপতি মাওঃ আবুল কালাম আজাদী।
এসময় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মোগড়াপাড়া ইউনিয়নের কমিটিকে সপথ বাক্য পাঠ করান প্রধান অতিথি।