ওসিসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মারধর চাঁদাবাজির মামলা
Published: 28th, March 2025 GMT
মারধর ও চাঁদাবাজির অভিযোগে মুরাদনগর থানার ওসিসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১১ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি করা হয়। মামলাটি করেন নবীপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কালামের ছোট ভাই মেহেদী হাসান।
প্রধান আসামি ওসি জাহিদুর রহমান, ২ নম্বর আসামি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুরাদনগর উপজেলার সমন্বয়ক ওবায়দুল হক সিদ্দিক। এজাহারে আরও ২৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সমন্বয়ক ওবায়দুল হক সিদ্দিকীসহ অন্য আসামিরা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। ওসি জাহিদুর রহমান আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী এবং অনুগত কর্মকর্তা। বাদীর ভাই শ্রমিকদল নেতা আবুল কালাম পেশায় অটোরিকশার চালক। গত ২৪ মার্চ সমন্বয়ক ওবায়দুল হক সিদ্দিকীসহ এজাহারে উল্লেখ করা অন্যরা শ্রমিকদল নেতা আবুল কালামের কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। তবে শ্রমিকদল নেতা আবুল কালাম চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে প্রতিবাদ করেন। সে সময় সমন্বয়ক ওবায়দুল হক মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমানকে ফোন করে ঘটনা জানান। খবর পেয়ে ওসি জাহিদুর রহমান একদল পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে শ্রমিকদল নেতা আবুল কালামকে আটক করে ধরে থানায় নিয়ে যায়।
এজাহারে অভিযোগ করা হয়, শ্রমিকদল নেতা আবুল কালামের ভাই মেহেদী হাসান মুরাদনগর থানায় গিয়ে আবুল কালামকে ছেড়ে দিতে ওসিকে অনুরোধ করেন। এ সময় মেহেদীর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন ওসি জাহিদুর রহমান। মেহেদী ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে হুমকি দেন ওসি জাহিদুর রহমান। পরে আবুল কালামের আটকের খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন মুরাদনগর থানায় উপস্থিত হলে ওসি জাহিদুর রহমান হ্যান্ডমাইকে ঘোষণা দিয়ে মুরাদনগর থানা চত্বরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটায়। এ সময় সমন্বয়ক ওবায়দুল হক সিদ্দিকীসহ তার সঙ্গে থাকা অন্যরা বাদী মেহেদী হাসানকে পিটিয়ে আহত করে।
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান সমকালকে বলেন, ‘মামলার বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনও কোনো কাগজ পাইনি। মামলা হলে আইনিভাবে মোকাবিলা করা হবে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ হ দ র রহম ন ম র দনগর থ ন
এছাড়াও পড়ুন:
নরসিংদীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিতে বৃদ্ধ নিহত
নরসিংদীতে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত পাঁচজন। আজ বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটার দিকে সদর উপজেলার মুরাদনগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম মো. ইদন মিয়া (৬০)। তিনি মুরাদনগর এলাকার বাসিন্দা। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে মোস্তাকিম (৩০) ও আবুল হোসেন (৬০) নামের দুজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ, স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা ও হতাহত ব্যক্তিদের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্টের পর আলোকবালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অধিকাংশ নেতা-কর্মী আত্মগোপনে গেলে সেখানে বিএনপির দুটি পক্ষকে সক্রিয় হতে দেখা যায়। একটি পক্ষে ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক শাহ আলম চৌধুরী এবং আরেক পক্ষে সদ্য বহিষ্কৃত সদস্যসচিব আবদুল কাইয়ুম মিয়া নেতৃত্ব দেন। মেঘনা নদী থেকে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলাসহ নানা অভিযোগে সম্প্রতি দলীয় পদ থেকে বহিষ্কৃত হন আবদুল কাইয়ুম। স্থানীয় বিএনপির রাজনীতিতে তাঁর সক্রিয় থাকার বিষয়টি মানতে পারছিল না শাহ আলম পক্ষ।
অভিযোগ আছে, আবদুল কাইয়ুমকে ঠেকাতে শাহ আলম চৌধুরীর ইন্ধন ও হস্তক্ষেপে আওয়ামী নেতা-কর্মীদের আবার এলাকায় ফেরানোর পরিকল্পনা করা হয়। এর অংশ হিসেবে আজ ভোর পাঁচটার দিকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে এলাকায় ফিরতে শুরু করে আত্মগোপনে থাকা স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী। এ খবর পেয়ে আবদুল কাইয়ুমের সমর্থকেরা বাধা দেয়। এ সময় উভয় পক্ষ টেঁটা, আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে ইদন মিয়াসহ অন্তত ছয়জন গুলিবিদ্ধ হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে ইদন মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ফরিদা গুলশানারা কবীর। তিনি জানান, ইদন মিয়াকে বুকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আনায় হয়। ওই সময় তিনি মৃত ছিলেন। মরদেহ এই হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে শাহ আলম চৌধুরী ও আবদুল কাইয়ুম মিয়ার ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমদাদুল হক বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।