সিগন্যাল কেলেঙ্কারির ঘটনায় গ্রুপ চ্যাটে চালাচালি হওয়া বার্তা সংরক্ষণ করার আদেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক ফেডারেল বিচারক। ওই গ্রুপ চ্যাটে থাকা হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের প্রতি এ আদেশ দেন তিনি। ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে চালানো একটি সামরিক হামলার আগেই বিষয়টি নিয়ে গ্রুপ চ্যাটে আলাপ করেছিলেন ওই কর্মকর্তারা। সিগন্যাল নামের একটি অ্যাপে হওয়া কথোপকথন ফাঁস করে প্রকাশিত একটি বিস্ফোরক প্রতিবেদনের পর ওই বিচারক এ আদেশ দিলেন।

মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট বিচারক জেমস বোসবার্গ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা দলের সদস্যদের ১১ থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে সিগন্যাল অ্যাপের মাধ্যমে পাঠানো ও পাওয়া বার্তা সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন।

নির্দলীয় ও অলাভজনক সংস্থা আমেরিকান ওভারসাইটের দায়ের করা একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে। ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, সিগন্যাল অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় নথিবিষয়ক আইন (ফেডারেল রেকর্ডস ল) লঙ্ঘন করেছেন।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আনা কেলি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন প্রযোজ্য সব রেকর্ড-রক্ষণ আইন মেনে চলছে ও ভবিষ্যতেও মেনে চলবে।’

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী আটলান্টিক প্রথম ওই চ্যাট গ্রুপের অস্তিত্বের কথা জানিয়েছিল। এটি বলেছে, ওই গ্রুপ চ্যাটে এমনভাবে বার্তাগুলো পাঠানো হয়েছে, যাতে একটি নির্দিষ্ট সময় পর সেগুলো অদৃশ্য হয়ে যায়। এ কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে বার্তাগুলো অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে।

বিচারক বোসবার্গ শুনানিতে বলেন, ‘কোনো অন্যায়ের তালাশ নয়, বরং কোনো বার্তা যাতে হারিয়ে না যায়, সে জন্যই এ আদেশ দেওয়া হয়েছে।’

গত সোমবার আটলান্টিকের সম্পাদক জেফ্রি গোল্ডবার্গ জানিয়েছেন, তাঁকে অসাবধানতাবশত সিগন্যাল অ্যাপের গ্রুপ চ্যাটে যুক্ত করা হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওই গ্রুপ চ্যাটে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎসও রয়েছেন বলে মনে হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

পা পিছলে ট্রেনের নিচে সবজি বিক্রেতা, চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু

চলন্ত ট্রেনের সামনে দিয়ে দৌড়ে যাচ্ছেন এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি। পাশাপাশি দুটি ট্রেন তুলনামূলক কম গতিতে চলছিল। হঠাৎ একটি ট্রেনের সামনে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যান তিনি। ট্রেনটি চলে যায় তাঁর শরীরের ওপর দিয়ে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

নিহত ব্যক্তির নাম জালাল উদ্দিন ওরফে জালু (৪০)। তিনি ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে চরআলগী ইউনিয়নের নিধনিয়া চর ব্যাপারী পাড়ার বাসিন্দা ও পেশায় সবজি বিক্রেতা ছিলেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। এর আগে গতকাল রাত ৮টা ৪০ মিনিটের দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর রেলস্টেশন এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি।

দুর্ঘটনার পর জালাল উদ্দিনকে প্রথমে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা বিজন মালাকার।

স্বজনেরা জানিয়েছেন, জালাল উদ্দিন এলাকায় কৃষিকাজ করেন এবং সেখান থেকে কৃষিপণ্য নিয়ে গাজীপুরের শ্রীপুরে বিক্রি করেন। তিনি প্রায়ই ট্রেনে চেপে শ্রীপুর যান এবং রাতের ট্রেনে বাড়ি ফেরেন। গতকাল দুপুরে শাকসবজি নিয়ে ট্রেনে শ্রীপুর যান। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জগামী ব্রহ্মপুত্র এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে ধরতে রাত পৌনে ৯টার দিকে তিনি দৌড় দেন। এ সময় ট্রেনটি শ্রীপুর স্টেশনে প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে যাচ্ছিল। সেটি ধরতে গিয়ে পাশের রেললাইনে থাকা ঢাকাগামী মহুয়া এক্সপ্রেসের ট্রেনের নিচে পড়ে যান জালাল উদ্দিন।

নিহত ব্যক্তির প্রতিবেশী ও গফরগাঁও কৃষক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ব্যাপারী জানান, আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে জানাজা শেষে জালাল উদ্দিনকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ দুর্ঘটনায় তাঁর পরিবার একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিকে হারাল।

ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকতার হোসেন বলেন, স্বজনদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশটি পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ বিষয়ে রেলওয়ে পুলিশ তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন শ্রীপুর থানার ওসি মহম্মদ আবদুল বারিক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ