সিগন্যাল গ্রুপের কথোপকথন সংরক্ষণ করতে ট্রাম্পের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের আদালতের নির্দেশ
Published: 28th, March 2025 GMT
সিগন্যাল কেলেঙ্কারির ঘটনায় গ্রুপ চ্যাটে চালাচালি হওয়া বার্তা সংরক্ষণ করার আদেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক ফেডারেল বিচারক। ওই গ্রুপ চ্যাটে থাকা হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের প্রতি এ আদেশ দেন তিনি। ইয়েমেনে হুতিদের বিরুদ্ধে চালানো একটি সামরিক হামলার আগেই বিষয়টি নিয়ে গ্রুপ চ্যাটে আলাপ করেছিলেন ওই কর্মকর্তারা। সিগন্যাল নামের একটি অ্যাপে হওয়া কথোপকথন ফাঁস করে প্রকাশিত একটি বিস্ফোরক প্রতিবেদনের পর ওই বিচারক এ আদেশ দিলেন।
মার্কিন ডিস্ট্রিক্ট বিচারক জেমস বোসবার্গ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা দলের সদস্যদের ১১ থেকে ১৫ মার্চের মধ্যে সিগন্যাল অ্যাপের মাধ্যমে পাঠানো ও পাওয়া বার্তা সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন।
নির্দলীয় ও অলাভজনক সংস্থা আমেরিকান ওভারসাইটের দায়ের করা একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে। ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, সিগন্যাল অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় নথিবিষয়ক আইন (ফেডারেল রেকর্ডস ল) লঙ্ঘন করেছেন।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র আনা কেলি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসন প্রযোজ্য সব রেকর্ড-রক্ষণ আইন মেনে চলছে ও ভবিষ্যতেও মেনে চলবে।’
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাময়িকী আটলান্টিক প্রথম ওই চ্যাট গ্রুপের অস্তিত্বের কথা জানিয়েছিল। এটি বলেছে, ওই গ্রুপ চ্যাটে এমনভাবে বার্তাগুলো পাঠানো হয়েছে, যাতে একটি নির্দিষ্ট সময় পর সেগুলো অদৃশ্য হয়ে যায়। এ কারণে আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে বার্তাগুলো অদৃশ্য হয়ে যেতে পারে।
বিচারক বোসবার্গ শুনানিতে বলেন, ‘কোনো অন্যায়ের তালাশ নয়, বরং কোনো বার্তা যাতে হারিয়ে না যায়, সে জন্যই এ আদেশ দেওয়া হয়েছে।’
গত সোমবার আটলান্টিকের সম্পাদক জেফ্রি গোল্ডবার্গ জানিয়েছেন, তাঁকে অসাবধানতাবশত সিগন্যাল অ্যাপের গ্রুপ চ্যাটে যুক্ত করা হয়েছিল। ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের ওই গ্রুপ চ্যাটে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়ালৎসও রয়েছেন বলে মনে হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত
এছাড়াও পড়ুন:
গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় অপু গ্রেপ্তার
রাজধানীর গুলশানে সাবেক এমপি শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির মামলায় এজাহারনামীয় আসামি বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদ্য বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর ওয়ারী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে গুলশানে ৫০ লাখ টাকা চাঁদাবাজির ঘটনায় গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জানে আলম অপুকে ওয়ারী থেকে ডিবির ওয়ারী বিভাগের সদস্যরা গ্রেপ্তার করেছেন। তাকে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে।
গত ১৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে একটি চক্র রাজধানীর গুলশানের ৮৩ নম্বর রোডে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক সংসদ সদস্য শাম্মী আহমেদের বাসায় গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের নেতৃত্বে ছিলেন জানে আলম অপু ওরফে কাজী গৌরব অপু এবং আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ। এ সময় শাম্মী আহমেদ দেশের বাইরে থাকায় তার স্বামী সিদ্দিক আবু জাফরকে জিম্মি করে ভয় দেখানো হয়।
চক্রটি বাসায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে প্রথম ধাপে ১০ লাখ টাকা আদায় করে নেয়। এর মধ্যে ৫ লাখ টাকা ভাগ পান অপু এবং বাকি ৫ লাখ পান রিয়াদ। চাঁদার দ্বিতীয় কিস্তি আনতে ২৬ জুলাই সন্ধ্যায় আবারও গুলশানের ওই বাসায় গেলে চক্রের পাঁচ সদস্যকে আটক করে পুলিশ। তারা হলেন- আব্দুর রাজ্জাক বিন সুলাইমান ওরফে রিয়াদ, ইব্রাহীম হোসেন মুন্না, সাকদাউন সিয়াম, সাদমান সাদাব এবং আমিনুল ইসলাম। তাদের সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদে ছিলেন। গ্রেপ্তারের পরপরই তাদেরকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
এদিকে, চাঁদাবাজির এ ঘটনায় গুলশান থানায় দায়ের করা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ছয় আসামি ও অজ্ঞাত ১০-১২ জন সমন্বয়ক পরিচয়ে ১৭ জুলাই সকালে আমার গুলশান-২ নম্বরের বাসায় আসে। যার মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক রিয়াদ ও কাজী গৌরব অপু আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে ৫০ লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার দাবি করে। তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা আমাকে আওয়ামী লীগের দোসর আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তারের হুমকি দেখায়। একপর্যায়ে আমি বাধ্য হয়ে ১০ লাখ টাকা দিই। পরে ১৯ জুলাই রাতে রিয়াদ ও অপু আমার বাসায় এসে ধাক্কাধাক্কি করে, যা আমি পুলিশকে ফোন করে জানাই। এ সময় অভিযুক্তরা সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, ২৬ জুলাই শনিবার বিকেলে রিয়াদের নেতৃত্বে আসামিরা আমার বাসার সামনে এসে আমাকে খুঁজতে থাকে। আমি বাসায় না থাকায় বাসার দারোয়ান আমাকে ফোন করে বিষয়টি জানায়। এ সময় আসামিরা তাদের দাবিকৃত আরো ৪০ লাখ টাকা না দিলে আমাকে পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করানো হবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
ঢাকা/এমআর/রফিক