চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদর বাজারের দুই কাপড় ব্যবসায়ী সহোদরকে প্রকাশ্যে ধারালো দা দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করেছে দুর্বৃত্তরা। জায়গার বিরোধ ও পূর্বশত্রুতারে জেরে আজ শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলা সদর বাজারের কাপড়পট্টি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত ওই দুই ব্যবসায়ীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আহত সফিকুল ইসলাম প্রধান (৬২) ও তাঁর ভাই বাদল প্রধানের (৪২) বাড়ি উপজেলার বাইশপুর গ্রামে। তাঁরা উপজেলা সদর বাজারের কাপড়ের ব্যবসায়ী। সফিকুল ইসলাম প্রধান ওই বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি। হামলাকারী ব্যক্তিদের বাড়িও বাইশপুর গ্রামে।

পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী, ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম প্রধান ও তাঁর ভাই বাদল প্রধানের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের গ্রামের হেলাল উদ্দিন ও তাঁর লোকদের জায়গা নিয়ে বিরোধ চলছে। আজ সকালে বাইশপুর গ্রামে সফিকুলের বাড়ির কাছে খালে একটি ট্রলার ভিড়াতে যান হেলাল উদ্দিন ও তাঁর লোকজন। এতে বাধা দিলে ওই দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। এই ঘটনা এবং জায়গার বিরোধের জেরে বেলা আড়াইটার দিকে উপজেলা সদর বাজারে সফিকুল ও তাঁর ভাই বাদলের কাপড়ের দোকানের সামনে এসে গালাগাল দেন হেলাল উদ্দিন ও তাঁর লোকজন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে পুনরায় বাগ্‌বিতণ্ডা লেগে যায়। একপর্যায়ে হেলাল ও তাঁর লোকেরা ধারালো দা দিয়ে সফিকুল ও বাদলকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এতে তাঁদের হাত, মাথা, বুক, পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ রক্তাক্ত হয়। তাঁদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। স্বজন ও আশপাশের ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে উদ্ধার করে আহত ব্যক্তিদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে।

পরিবার জানিয়েছে, জায়গার বিরোধ ও পূর্বশত্রুতার জেরে হত্যার উদ্দেশ্যেই সফিকুল ও বাদলের ওপর এ হামলা চালানো হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য হেলাল উদ্দিনের মুঠোফোন নম্বরে কল দেওয়া হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এলাকাবাসী জানান, ঘটনার পর তাঁরা গা-ঢাকা দিয়েছেন।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

সালেহ আহাম্মদ বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পূর্বশত্রুতা ও জায়গার বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে থানায় একটি হত্যাচেষ্টা মামলা প্রক্রিয়াধীন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সদর ব জ র ব যবস য় র ল কজন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘জামাই-শ্বশুরের’ দোকানে চা–পান করতে আসেন দূরের লোকজনও

কবির হোসেন (৩৬) ও তাঁর শ্বশুর সোলেমান মোল্লা (৫৫) মিলে বছর পাঁচেক আগে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান দেন। জামাতা-শ্বশুরের যৌথ অর্থায়ন ও ব্যবস্থাপনায় চলছে চায়ের দোকানটি। দুজনে মিলে প্রতিদিন গড়ে বিক্রি করেন প্রায় ৩০০ কাপ দুধ-চা। প্রতিদিন গড়ে তিন হাজার টাকার চা বিক্রি হয় দোকানটিতে।

নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ প্রতিদিন এখানে ‘খাঁটি দুধের চা’ পান করতে আসেন। গাভীর দুধ দিয়ে জামাতা-শ্বশুরের হাতের পরম যত্নে বানানো সুস্বাদু ওই দুধ-চা স্থানীয় লোকজনের কাছে বেশ সমাদৃত। দূর থেকেও অনেকে আসেন চা–পান করতে। স্থানীয়ভাবে এটি ‘জামাই-শ্বশুরের’ চায়ের দোকান হিসেবে পরিচিত। দোকান থেকে উপার্জিত আয় দিয়েই চলছে তাঁদের সংসার।

চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলা সদরের কলেজগেট এলাকায় চায়ের ওই দোকানের অবস্থান। জামাতা কবির হোসেনের বাড়ি উপজেলার পৈলপাড়া গ্রামে। কবিরের শ্বশুর সোলেমান মোল্লার বাড়ি উপজেলার নবকলস গ্রামে।

সম্প্রতি এক সকালে ওই চায়ের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের ভিড়। ছোট্ট পরিসরে সাজানো টুল-টেবিলে বসে চা–পান করতে করতে আড্ডা দিচ্ছেন তাঁরা। রাজনৈতিক ও সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা ও তর্ক চলছে সেখানে। ক্রেতাদের চা পরিবেশনায় ব্যস্ত শ্বশুর-জামাতা।

কাজের ফাঁকে কথা হয় তাঁদের সঙ্গে। কবির হোসেন বলেন, তাঁর একমাত্র শ্যালক মানসিক প্রতিবন্ধী। তাঁর শ্বশুরের আর কোনো ছেলে না থাকায় তাঁকেই (কবির) ছেলে মনে করেন তিনি। তাঁর বাবা মারা গেছেন অনেক আগে। এ জন্য শ্বশুরকেই বাবার আসনে বসিয়েছেন। পাঁচ বছর আগে দুজনে মিলে ভাড়া করা এই চায়ের দোকানটি দিয়েছেন। নিজে সাতটি গাভী পালনপালন করেন। ওই গাভীর দুধ দিয়ে চা তৈরি করে বিক্রি করেন তাঁরা। তিনি ও তাঁর শ্বশুর পালা করে দোকানে বসেন এবং চা বিক্রি করেন। উপজেলা সদর ও আশপাশের এলাকা ছাড়াও চাঁদপুর জেলা শহর ও মতলব উত্তর উপজেলা থেকেও লোকজন এই দোকানে আসেন চা–পান করতে।

ক্রেতাদের হাতে দুধ-চা তুলে দিচ্ছেন কবির হোসেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মেঘনায় মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আগামীকাল
  • ‘জামাই-শ্বশুরের’ দোকানে চা–পান করতে আসেন দূরের লোকজনও