ভূমিকম্পের টালমাটাল সময়ে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের একটি হাসপাতালে সন্তান জন্ম দিয়েছেন এক থাই নারী। গত শুক্রবার তিনি যখন সন্তান প্রসব করছিলেন, তখন ভূমিকম্পের দরুন হাসপাতালের শয্যা প্রচণ্ডভাবে দুলছিল।

গত শুক্রবার মিয়ানমারে ৭ দশমিক ৭ তীব্রতার ভূমিকম্পে অসংখ্য ভবন ও স্থাপনা ধসে পড়েছে। সেই ভূমিকম্পে দুলে উঠেছিল থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককও। এ সময় বিভিন্ন হাসপাতালের রোগীদের ভবন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। নিরাপত্তার স্বার্থে অনেক রোগীকে হাসপাতালে নিচতলায় আবার অনেককে ভবনের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

ব্যাংককের বাসিন্দা অন্তঃসত্ত্বা কানথং সায়েনমুয়াংসিন (৩৬) নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তবে হাসপাতাল ভবন দুলে ওঠার পর তিনি লেবার রুমে (প্রসবকক্ষ) চলে যান।

পরে পুলিশ জেনারেল হাসপাতালের কর্মীরা কানথংকে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামিয়ে নিচ্ছিলেন। এ সময় তাঁর শরীর থেকে পানি বের হচ্ছিল। তিনি আশঙ্কা করছিলেন, সিঁড়িতেই না তাঁর সন্তান প্রসব হয়ে যায়।

গতকাল শনিবার কানথং বলছিলেন, ‘আমি পেটের সন্তানকে বলছিলাম, তুমি এখন বের হয়ে এসো না।’

কানথং বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘তারপর আমাকে হাসপাতালের একটি শয্যায় শোয়ানো হয়। হাসপাতালের কর্মীরা আমাকে চারদিক থেকে ঘিরে রাখেন। সেখানেই আমি সন্তানের জন্ম দিয়েছি। সন্তানের জন্মের সময় সবকিছু দুলছিল। পুরো বিষয়টি আমার জন্য ছিল এক বড় ধাক্কা।’

কানথং যখন হাসপাতালে এই পরিস্থিতির মধ্যে, তখন তাঁর স্বামী ছিলেন কাজে। তিনি সময়মতো হাসপাতালে আসতে পারেননি।

কন্যাসন্তানের জন্মের পর কানথংয়ের মনে স্বস্তি আসে। তাঁর সন্তানের জন্মের পরপরই ভূমিকম্পও থেমে যায়। তাঁর চোখেমুখেও খুশির ভাব আসে।

কানথং ও তাঁর স্বামী কন্যাশিশুর একটি নামও রেখেছেন—মিনক। তাঁরা এখনো সন্তানের পুরো নাম রাখেননি। তবে ভূমিকম্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো নাম রাখার পরিকল্পনা তাঁদের নেই।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ ম কম প র

এছাড়াও পড়ুন:

মঙ্গলবার কুয়াকাটায় রাস উৎসব, গঙ্গা স্নান বুধবার

প্রায় ২০০ বছর ধরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মদনমোহন সেবাশ্রম মন্দির ও কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরে পৃথক আয়োজনে রাস উৎসব পালন করে আসছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। এবছরও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে হবে এ উৎসব। রাস উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ায় বসছে ৫ দিনব্যাপী মেলা। 

কলাপাড়ায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, শেষ সময়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে মন্দিরের আঙ্গিনাসহ রাধা ও কৃষ্ণের ১৭ জোড়া প্রতিমা।

মঙ্গলবার পূর্ণিমা তিথিতে রাত ৯টা ২২ মিনিটে অধিবাসের মধ্যে দিয়ে শুরু হবে রাস পূজার আনুষ্ঠানিকতা। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা ৭টা ৬ মিনিটে এ তিথি শেষ হবে। সেদিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে কুয়াকাটা সৈকতে গঙ্গা স্নান করবেন পুণ্যার্থীরা। এর পর মন্দিরের আঙ্গিনায় রাধা-কৃষ্ণের যুগল প্রতিমা দর্শন করবেন তারা। তাই, দুই মন্দিরেই ১৭ জোড়া প্রতিমা বানানো হয়েছে। প্যান্ডেল সাজানোর কাজ শেষ। চলছে লাইটিং ও সাজসজ্জার কাজ। 

এ উৎসব উপলক্ষে কলাপাড়ার মন্দির প্রাঙ্গণ, কুয়াকাটার মন্দির প্রাঙ্গণ ও সৈকতে অস্থায়ীভাবে বসছে শতাধিক পোশাক, প্রসাধনী, খেলনা ও গৃহস্থালী সামগ্রীর দোকান। কুয়াকাটায় তিন দিনব্যাপী উৎসব হলেও কলাপাড়ায় এ উৎসব চলবে পাঁচ দিন। এসব দোকানে অন্তত ৩০ লাখ টাকার পণ্য বিক্রির আশা করছেন আয়োজকরা। 

কলাপাড়ার শ্রী শ্রী মদনমোহন সেবাশ্রমের রাস উদযাপন কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার হাওলাদার বলেছেন, আজকের মধ্যেই আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। হিন্দু ধর্মালম্বীদের এ উৎসব হলেও এখানে ৫ দিনব্যাপী মেলায় সব ধর্মের মানুষের আগমন ঘটে। আমাদের মন্দির প্রাঙ্গণে অন্তত ৭০টি দোকান বসেছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে রাস উৎসব সম্পন্ন হবে। 

কুয়াকাটার রাধা-কৃষ্ণ মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন মন্ডল বলেছেন, আগামীকাল রাতভর মন্দির প্রাঙ্গণে ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলবে। পরদিন সকালে গঙ্গা স্নান হবে। লাখো পুণ্যার্থীর আগমনের আশা করছি আমরা। বুধবারও গঙ্গা স্নান হবে। উৎসব উপলক্ষে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাউসার হামিদ বলেছেন, রাস উৎসব উপলক্ষে কুয়াকাটায় ১ লাখ পুণ্যার্থী সমাগমের আশা করছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, শান্তিপূর্ণভাবে এ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। 

ঢাকা/ইমরান/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ