ভূমিকম্পের টালমাটাল সময়ে সন্তানের জন্ম দিলেন থাই নারী
Published: 30th, March 2025 GMT
ভূমিকম্পের টালমাটাল সময়ে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের একটি হাসপাতালে সন্তান জন্ম দিয়েছেন এক থাই নারী। গত শুক্রবার তিনি যখন সন্তান প্রসব করছিলেন, তখন ভূমিকম্পের দরুন হাসপাতালের শয্যা প্রচণ্ডভাবে দুলছিল।
গত শুক্রবার মিয়ানমারে ৭ দশমিক ৭ তীব্রতার ভূমিকম্পে অসংখ্য ভবন ও স্থাপনা ধসে পড়েছে। সেই ভূমিকম্পে দুলে উঠেছিল থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককও। এ সময় বিভিন্ন হাসপাতালের রোগীদের ভবন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। নিরাপত্তার স্বার্থে অনেক রোগীকে হাসপাতালে নিচতলায় আবার অনেককে ভবনের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
ব্যাংককের বাসিন্দা অন্তঃসত্ত্বা কানথং সায়েনমুয়াংসিন (৩৬) নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন। তবে হাসপাতাল ভবন দুলে ওঠার পর তিনি লেবার রুমে (প্রসবকক্ষ) চলে যান।
পরে পুলিশ জেনারেল হাসপাতালের কর্মীরা কানথংকে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামিয়ে নিচ্ছিলেন। এ সময় তাঁর শরীর থেকে পানি বের হচ্ছিল। তিনি আশঙ্কা করছিলেন, সিঁড়িতেই না তাঁর সন্তান প্রসব হয়ে যায়।
গতকাল শনিবার কানথং বলছিলেন, ‘আমি পেটের সন্তানকে বলছিলাম, তুমি এখন বের হয়ে এসো না।’
কানথং বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘তারপর আমাকে হাসপাতালের একটি শয্যায় শোয়ানো হয়। হাসপাতালের কর্মীরা আমাকে চারদিক থেকে ঘিরে রাখেন। সেখানেই আমি সন্তানের জন্ম দিয়েছি। সন্তানের জন্মের সময় সবকিছু দুলছিল। পুরো বিষয়টি আমার জন্য ছিল এক বড় ধাক্কা।’
কানথং যখন হাসপাতালে এই পরিস্থিতির মধ্যে, তখন তাঁর স্বামী ছিলেন কাজে। তিনি সময়মতো হাসপাতালে আসতে পারেননি।
কন্যাসন্তানের জন্মের পর কানথংয়ের মনে স্বস্তি আসে। তাঁর সন্তানের জন্মের পরপরই ভূমিকম্পও থেমে যায়। তাঁর চোখেমুখেও খুশির ভাব আসে।
কানথং ও তাঁর স্বামী কন্যাশিশুর একটি নামও রেখেছেন—মিনক। তাঁরা এখনো সন্তানের পুরো নাম রাখেননি। তবে ভূমিকম্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো নাম রাখার পরিকল্পনা তাঁদের নেই।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ভ ম কম প র
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপির উদ্বেগ আদালত অবমাননার শামিল: ইশরাক
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র পদ নিয়ে ইশরাক হোসেনের মামলা, রায় এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তৎপরতা নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উদ্বেগ প্রকাশের বিষয়টিকে আদালত অবমাননার শামিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন। তিনি বলেছেন, এনসিপি আইনের ব্যাখ্যা এবং আইন সম্পর্কে অজ্ঞ থাকায় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করছে। একই সঙ্গে বিজ্ঞ আদালতের আদেশকে অবমাননা করেছে।
বুধবার রাতে এক প্রতিবাদলিপিতে ইশরাক হোসেনের পক্ষে তাঁর আইনজীবী রফিকুল ইসলাম এ কথা বলেছেন। এর আগে গতকাল বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিল এনসিপি।
দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হওয়া নিয়ে এনসিপির উদ্বেগের বিষয়টি উল্লেখ করে ইশরাক হোসেনের পক্ষে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে তাঁর আইনজীবী বলেন, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির কারণ নিয়ে এনসিপির বক্তব্য একেবারেই শিশুসুলভ। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় যেকোনো মামলায় দ্রুত নিষ্পত্তির বিজ্ঞ আদালতের একটি সহজাত ক্ষমতা। তা ছাড়া ২০২০ সালে দায়ের করা মামলাটি ২০২৫ সালে নিষ্পত্তি হয়েছে। এটি দীর্ঘ পাঁচ বছরের অধিক সময় অতিক্রান্ত হয়েছে, যা মোটেও সংক্ষিপ্ত সময় নয়; বরং মোকদ্দমাটি আরও আগেই নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন ছিল।
নির্বাচনী মামলার নিষ্পত্তি সংক্ষিপ্ত সময়ে হওয়া উচিত উল্লেখ করে প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়, এনসিপির এ জাতীয় বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল। এ ছাড়া এ-সংক্রান্ত যে বক্তব্য দিয়েছে, তার সম্পূর্ণ আইনি অজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ। মামলার তদবিরকারক বাদীর ইচ্ছা অনুযায়ী যে কেউ হতে পারে বিধায় বিজ্ঞ আদালত হলফনামা গ্রহণ করেছেন, যা সম্পূর্ণ আইন মেনেই করা হয়েছে। এ ছাড়া আদালত কোনো প্রকার বিচার-বিশ্লেষণ করেননি বলে যে বক্তব্য এনসিপি দিয়েছে, তা এককথায় তাদের জ্ঞানের স্বল্পতারই বহিঃপ্রকাশ এবং আদালত অবমাননার শামিল।
প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়, ‘আদালত যথাযথ আইন মেনেই রায় প্রদান করেন। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি ন্যায়বিচার হয়নি বলে মনে করে, তাহলে উচ্চ আদালতে আপিল করার সুযোগ আছে এবং তার বক্তব্য ওই উচ্চ আদালতে রাখারও সুযোগ আছে। এভাবে প্রেসনোট দিয়ে বক্তব্য প্রদান দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করা ও বিজ্ঞ আদালতকে অবমাননা ছাড়া কিছুই নয়।’
২০২০ সালে অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ফল বাতিল করে সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে বিএনপি নেতার ইশরাক হোসেনকে গত ২৭ মার্চ মেয়র ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন আদালত। এর এক মাস পর আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গেজেট প্রকাশের পর এটি বর্তমানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এই মন্ত্রণালয় থেকে শপথ গ্রহণের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা। তবে কবে নাগাদ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে, সে বিষয়টি নিয়ে এখন ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে।
নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী আগামী ১৫ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।