নবীজি (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি রমজানের রোজা রাখে, তারপর শাওয়াল মাসে ছয়টি রোজা রাখে, সে যেন সারা বছর রোজা রাখছে। (ইবনে মাজাহ, হাদিস: ২,৪৩৩)
‘সারাবছর রোজা রাখা’র পুণ্যের ব্যাখ্যা অন্য হাদিসে এভাবে পাওয়া যায়—সাওবান (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘রমজানের রোজা দশ মাসের রোজার সমতুল্য আর (শাওয়ালের) ছয় রোজা দুই মাসের রোজার সমান। সুতরাং এ হলো এক বছরের রোজা।’ অপর রেওয়ায়েতে আছে, ‘যে ব্যক্তি রমজানের রোজা শেষ করে ছয় দিন রোজা রাখবে সেটা তার জন্য পুরো বছর রোজা রাখার সমতুল্য।’ (মুসনাদে আহমদ, ৫/২৮০; দারেমি, হাদিস: ১,৭৫৫)
আরও পড়ুনমহানবীর (সা.) হাঁটা-চলার ধরন১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
শাওয়ালের রোজা কীভাবে রাখবেন
এ রোজা মাসের শুরু-শেষ-মাঝামাঝি সব সময় রাখা যায়। শাওয়ালের ছয় রোজার ক্ষেত্রে বিধান কী হবে, এগুলো কি ধারাবাহিভাবে রাখা জরুরি, নাকি বিরতি দিয়েও রাখতে পারবে—এ-বিষয়টি নিয়ে নানা বিভ্রান্তি দেখা যায়।
শাওয়ালের রোজা একত্রে ধারাবাহিক রাখা জরুরি নয়। একত্রে বা ভিন্ন-ভিন্ন উভয়ভাবে আদায় করা যায়। তবে যত দ্রুত রাখা যায় তত কল্যাণ। তবে দ্রুত আদায় না করলেও কোনও সমস্যা নেই।
ইমাম নববী (রহ.) বলেছেন, শাওয়ালের ছয় রোজা আদায় করা মোস্তাহাব এবং ধারাবাহিকভাবে একসঙ্গে মাসের শুরুতে আদায় করা মোস্তাহাব। যদি ভিন্ন-ভিন্নভাবে রাখা হয় অথবা শাওয়াল চলে যাওয়ার পরে রাখা হয় তবুও তা বৈধ হবে।
আরও পড়ুনযেমন ছিল মহানবীর (সা.) ইফতার১০ মার্চ ২০২৫রমজানের কাজা হলে
যার ওপর রমজানের রোজা কাজা আছে সে আগে কাজা সম্পন্ন করবে তারপর শাওয়ালের রোজায় ব্রতী হবে। রাসুলের (সা.) বলেছেন, ‘যে রমজানের রোজা রাখবে’, অর্থাৎ পুরোপুরি সম্পন্ন করবে। আর যার ওপর কাজা রয়ে গেছে সে তো রোজা পুরোপুরি সম্পন্ন করেছে বলে গণ্য হবে না, যতক্ষণ সেই কাজা আদায় না করে।’ (ইবনে কুদামাহ, আল-মুগনি, ৪/৪৪০)
তাছাড়া ওয়াজিব আদায়ের দায়িত্ব পালন নফল আদায়ের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বেরও দাবিদার।
আরও পড়ুন যেমন ছিল মহানবীর (সা.) সাহরি১১ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: রমজ ন র র জ বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
কৌশলগত নেতৃত্ব বিকাশে জোর সেনাপ্রধানের
কৌশলগত নেতৃত্ব বিকাশের মাধ্যমে জাতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার আহ্বান জানিয়েছেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। তিনি বলেছেন, এই নেতৃত্বই দেশকে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুর সেনানিবাসের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজে তিন সপ্তাহব্যাপী স্ট্র্যাটেজিক লিডারশিপ প্রশিক্ষণ ক্যাপস্টোন কোর্সের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। সেনাপ্রধান ক্যাপস্টোন ফেলোদের মধ্যে সনদ বিতরণ করেন।
এই কোর্সে জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, সিনিয়র চিকিৎসক, প্রকৌশলী, বিজ্ঞানী, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, কূটনীতিক, সাংবাদিক এবং বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ সর্বমোট ৪৫ জন ফেলো অংশগ্রহণ করেন।
সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান জাতি গঠনের সমসাময়িক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কৌশলগত নেতৃত্বের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি দেশের সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও কার্যকর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করার জন্য গতিশীল ও সংস্কারমুখী নেতৃত্বের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন।
দ্রুত পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আলোকপাত করে সেনাপ্রধান বলেন, বিদ্যমান পরিবর্তনশীল ভূরাজনীতি, প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও নতুন জাতীয় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ক্যাপস্টোন কোর্স কৌশলগত অন্তর্দৃষ্টি, সহযোগিতা ও জ্ঞানভিত্তিক নেতৃত্ব গড়ে তুলতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এনডিসি কমান্ড্যান্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক বলেন, ‘ক্যাপস্টোন কোর্স জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, বস্তুনিষ্ঠ সংলাপ ও একীভূত চিন্তাধারার বিকাশ ঘটানোর লক্ষ্যে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। এতে অংশগ্রহণকারীদের সক্রিয়, চিন্তাশীল ও সশ্রদ্ধ অংশগ্রহণ তাদের কৌশলগত ও মননশীল চিন্তাভাবনার বিকাশ ঘটিয়েছে এবং বিভিন্ন সংস্থার নেতৃবৃন্দের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ের মেলবন্ধন তৈরি করতে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে।’
ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ক্যাপস্টোন কোর্স ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ পরিচালিত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কোর্স। এই কোর্সের লক্ষ্য কৌশলগত সচেতনতা বৃদ্ধি, সূক্ষ্ম চিন্তাভাবনার বিকাশ, আন্তসংস্থার সহযোগিতা বৃদ্ধি করা এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থার নেতৃত্ব পর্যায়ে জাতীয় নিরাপত্তা ও উন্নয়নবিষয়ক সমন্বিত ধারণা গড়ে তোলা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সশস্ত্র বাহিনী ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, এনডিসির ফ্যাকাল্টি ও স্টাফ অফিসার এবং জাতীয় পর্যায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।