বিশ্বকাপে জায়গা পেতে যে পরিকল্পনার কথা জানালেন জ্যোতি
Published: 2nd, April 2025 GMT
নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলতে আগামীকাল (৩ এপ্রিল) পাকিস্তান যাচ্ছে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল। লাহোরে অনুষ্ঠিতব্য এই টুর্নামেন্টে নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দিতে প্রস্তুত টাইগ্রেসরা। দেশ ছাড়ার আগে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি জানিয়েছেন দলের লক্ষ্যের কথা। তিনি চান ব্যাটাররা দায়িত্বশীল ইনিংস খেলুক এবং বোলাররা ইকোনোমিক্যাল বোলিং করুক।
বুধবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জ্যোতি বলেন, ‘পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত খেলা হয়, তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তুলনামূলকভাবে কম ম্যাচ খেলেছি। তবে এবার বাছাইপর্বে তাদের মুখোমুখি হওয়ার আগে আমাদের থাইল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ আছে, যা আমাদের ভালো প্রস্তুতির সুযোগ করে দেবে।’
সাফল্যের জন্য ব্যাটারদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। তিনি বলেন, ‘প্রথমদিকে যদি আমরা একটা মোমেন্টাম তৈরি করতে পারি, তাহলে তা দলের জন্য ইতিবাচক হবে। আমাদের ব্যাটিং পারফরম্যান্স ভালো করতে হবে।’
পাকিস্তানের পিচ ব্যাটিং সহায়ক হলেও বাংলাদেশ দলের বোলারদের সামর্থ্য নিয়ে আত্মবিশ্বাসী জ্যোতি। তিনি বলেন, ‘আমাদের বোলাররা সবসময় দুর্দান্ত পারফর্ম করে। ব্যাটিং-বান্ধব উইকেটে আমাদের বোলাররা যেন ভালো বোলিং করতে পারে, সেটাই লক্ষ্য।’
সাম্প্রতিক সিরিজগুলোর উদাহরণ টেনে জ্যোতি বলেন, ‘বিদেশের উইকেটে ভালো পারফর্ম করার জন্য বোলারদের অনেক পরিশ্রম করতে হয়। দেশে স্পিন-বান্ধব উইকেটে সঠিক জায়গায় বল ফেললেই উইকেট আসে, কিন্তু দেশের বাইরে তা কঠিন। তাই আমরা পরিকল্পনা করেছি, উইকেটের পেছনে ছুটে না গিয়ে যেন ইকোনোমিক্যাল বল করতে পারি।’
আগামী ৫ এপ্রিল থেকে লাহোরে শুরু হবে ছয় দলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব। এখান থেকে সেরা দুটি দল মূল বিশ্বকাপে জায়গা করে নেবে। বাছাইপর্ব শুরুর আগেও প্রস্তুতি ম্যাচ আছে বাংলাদেশের। বাংলাদেশ দল তাদের প্রথম ম্যাচ খেলবে ১০ এপ্রিল, প্রতিপক্ষ থাইল্যান্ড। এরপর ১৩ এপ্রিল আয়ারল্যান্ড, ১৫ এপ্রিল স্কটল্যান্ড, ১৭ এপ্রিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ১৯ এপ্রিল স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে গ্রুপ পর্ব শেষ করবে টাইগ্রেসরা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ছ ইপর ব ব শ বক প আম দ র উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।
তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।
ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।
প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।
তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।
এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।
তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।
চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।
এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।
এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।
অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।