আব্বাসি খলিফা মামুন তার দুই ছেলেকে জ্ঞানার্জনের জন্য পাঠিয়েছিলেন সেকালের বিখ্যাত পণ্ডিত ইমাম ফাররা (রহ.)-এর কাছে। দুই শাহজাদা তাঁর কাছ থেকে দিনরাত জ্ঞান আহরণ করতে থাকে। একদিন ইমাম ফাররা (রহ.) কোনো প্রয়োজনে বাইরে বেরোচ্ছিলেন। দুই ছাত্র শিক্ষকের জুতা এগিয়ে দিতে দৌড়ে এলো। এ নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়। কেউ শিক্ষকের পাদুকা বহনের সৌভাগ্য ছাড়তে রাজি নয়। অবশেষে তারা সম্মত হলো, প্রত্যেকে একটি করে জুতা এগিয়ে দেবে। হলোও তাই। দুজনই একটি করে জুতা শিক্ষকের পায়ের দিকে এগিয়ে দিল।
এ সংবাদ খলিফা মামুনের কাছে পৌঁছালে ইমাম ফাররা (রহ.
ইমাম ফাররা (রহ.) বললেন, ‘মুসলিম জনসাধারণের খলিফা হিসেবে আপনার চেয়ে অধিক সম্মানিত কোনো ব্যক্তির কথা তো আমার জানা নেই।’
খলিফা বললেন, ‘কেন নয়? যার জুতা এগিয়ে দিতে সিংহাসনের ভাবী অধিকারী দুই শাহজাদা প্রাণপণ চেষ্টা করে এবং প্রত্যেকে একটি করে জুতা এগিয়ে দিয়ে তাদের বিবাদের ফয়সালা করে, তার চেয়ে অধিক মর্যাদাবান আর কে আছে?’
ইমাম ফাররা (রহ.) বললেন, ‘জাহাঁপনা, আমি তাদের বারণ করতে চেয়েছিলাম; কিন্তু আমার আশঙ্কা হলো, এতে তাদেরকে মহৎ কাজের প্রতিযোগিতায় বাঁধা দেওয়া হবে। তাদের বঞ্চিত করা হবে!’ একটু দম নিয়ে আবার বললেন, ‘আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) সম্পর্কে বর্ণনা এসেছে, রাসুল (সা.)-এর দুই নাতি হাসান ও হুসাইন (রা.) যখন সফরে বের হতে চাইতেন, তখন তিনি তাদের বাহনের পাদানি ধরে রাখতেন। উপস্থিত এক ব্যক্তি ইবনে আব্বাস (রা.)-কে বললেন, ‘আপনি এ দুই তরুণের বাহনের পাদানি টেনে ধরছেন; অথচ আপনি তাদের চেয়ে কত বড়!’ ইবনে আব্বাস (রা.) বললেন, ‘চুপ কর নির্বোধ, গুণীর কদর তো গুণীই বোঝে।’’
খলিফা মামুন বললেন, ‘আপনি যদি তাদের বারণ করতেন, তাহলে আমি বরং আপনাকে দোষারোপ করতাম। এতে তাদের মর্যাদা বহুগুণে বেড়েছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত, তারা তাদের যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছে। এতে তাদের বুদ্ধিমত্তা প্রমাণিত হলো। মানুষ যত বড় হোক, তার শাসনকর্তা, পিতামাতা এবং ওস্তাদের সামনে বিনীত থাকবে, তাদের চেয়ে তারা বড় নয়।’
সূত্র: তারিখে বাগদাদ : ১৪/১৫০)
আরও পড়ুনতওবা যেভাবে করা যায়১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বলল ন
এছাড়াও পড়ুন:
কনসার্টের জন্য কত পারিশ্রমিক নেন অরিজিৎ
তাঁর সংগীতের সফর শুরু হয়েছিল মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জ থেকে। আজ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে রয়েছেন তাঁর অনুরাগীরা। মাত্র ৩৮ বছর বয়সে অরিজিৎ সিং ভারতের অন্যতম আলোচিত শিল্পী। তবে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি কনসার্টে গাওয়ার জন্য বেশি পারিশ্রমিক নেন। আসলে কত পারিশ্রমিক নেন গায়ক?
সম্প্রতি সুরকার মন্টি শর্মা পিংকভিলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন অরিজিতের পারিশ্রমিক নিয়ে। তিনি বলেন, ‘একটা সময় পরে অনেক কিছুর বিবর্তন হয়েছে। আগে গোটা একটা গান আমরা দুই লাখ রুপিতে শেষ করতাম। এর মধ্যে গোটা অর্কেস্ট্রা, ৪০ জন বেহালা বাদক, আরও অনেক কিছু থাকত। তারপর ধীরে ধীরে গানপ্রতি নিজের জন্য ৩৫ হাজার রুপি নিতে থাকলাম।’
এরপরই অরিজিতের প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। মন্টি বলেন, ‘অরিজিৎ যখন আসত, তখন টানা ছয় ঘণ্টা আমার সঙ্গে একটা গান নিয়ে বসত। এখন ও একটি অনুষ্ঠানের জন্য দুই কোটি রুপি নেয়। তাই ওকে নিয়ে অনুষ্ঠান করতে হলে দুই কোটিই দিতে হবে। আগে তো মানুষ বেতারে ও টিভিতেও গান শুনত। কিন্তু এখন তাদের কাছে ইউটিউব আছে। এখন গান শোনার মাধ্যম অনেক বড়। তাই অর্থের পরিমাণও এখন বেড়েছে। তাই এখন যদি ১৫-২০ লাখ টাকা দিয়ে একটা গান করি, তা হলে ৯০ শতাংশ স্বত্ব কিনে নেয় অডিও সংস্থা। এই অডিও সংস্থাগুলো এখন আয় করছে।’
আরও পড়ুনযার গানে মুগ্ধ অরিজিৎ সিং, কে এই এনজেল নূর? ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫