Samakal:
2025-09-18@02:56:43 GMT

ধ্বংসস্তূপে বাঁচার আকুতি 

Published: 4th, April 2025 GMT

ধ্বংসস্তূপে বাঁচার আকুতি 

ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আকুতি জানাচ্ছিলেন ৪১ বছর বয়সী নারী নান সিন হেইন। ২১ বছর বয়সী ছেলেকে বাঁচাতে পাঁচ দিন ধরে ধসে পড়া ভবনের সামনে সাহায্যের আশায় বসে আছেন তিনি। যদিও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ভবনটিতে শুরু হয়নি উদ্ধারকাজ। হেইনের ভাষ্য, আমি বিশ্বাস করি আমার সন্তান বেঁচে আছে। যদিও এটা সত্য যে, ওর বেঁচে থাকার আশা খুবই কম। কিন্তু আজকের মধ্যে যদি উদ্ধার করা যায়, আমি হয়তো ওকে জীবিত ফিরে পাব। 

শুধু হেইন নয়, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থলের কাছে পুরো মান্দালয় শহরে ধ্বংসস্তূপ থেকে এমনভাবে উদ্ধারের আকুতি জানানো হচ্ছে। ভূমিকম্পবিধ্বস্ত মিয়ানমারে পর্যাপ্ত উদ্ধার তৎপরতার অভাবে প্রাণে বেঁচে গিয়েও মৃত্যু এড়াতে পারছেন না আটকে পড়া মানুষ। অপ্রতুল সাহায্যে বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করতে হচ্ছে আহতদের। বাসস্থান, চিকিৎসা সামগ্রীর সঙ্গে অনেক এলাকায় যুক্ত হয়েছে খাদ্য ও নিরাপদ পানির অভাব। 

বিবিসি জানিয়েছে, ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে মান্দালয় শহরের উত্তর ও মধ্যাংশের প্রতিটি রাস্তায় কমপক্ষে একটি ভবন সম্পূর্ণভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া প্রায় প্রতিটি ভবনের দেয়ালে গভীর ফাটল দেখা গেছে। শহরের প্রধান হাসপাতালের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় গুরুতর আহত রোগীদেরও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। 

বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মিয়ানমারে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৮৫ জনে। ভূমিকম্পের আগেও রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছিল মিয়ানমারে। ভূমিকম্পের পর আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন জানালেও পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক তলানিতে থাকায় সাহায্য আসতে সময় লেগেছে। বাংলাদেশ, ভারত, চীন এবং রাশিয়াসহ কয়েকটি দেশ সহায়তা করলেও তা নিতান্তই অপ্রতুল। 

আধুনিক প্রযুক্তি ও লোকবল সীমিত হওয়ায় চলমান উদ্ধারকাজে বিপুলসংখ্যক লোক আটকা পড়া জায়গাগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। যেমন মান্দালয়ের স্কাই ভিলা কনডোমিনিয়াম কমপ্লেক্স এবং উ হ্লা থেইন বৌদ্ধ বিহার। সেখানকার অবস্থা সম্পর্কে ভারতীয় উদ্ধারকারী দলের নেতা নীরাজ সিং জানিয়েছেন, বৌদ্ধ একাডেমি ‘প্যানকেকের মতো’ এক স্তরের ওপর আরেক স্তর পড়ে ধ্বংস হয়ে গেছে। তাঁর মতে, এখানে জীবিতদের পাওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। 

মিয়ানমারের সামরিক সরকার বলছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৮৫ জনে পৌঁছেছে, আহত ৪ হাজার ৭১৫ জন এবং এখনও নিখোঁজ ৩৪১ জন। তবে উদ্ধারকারীরা এখনও অনেক স্থানে পৌঁছাতে না পারায় হতাহতের প্রকৃত সংখ্যা সম্পর্কে সঠিকভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়।

মিয়ানমারে এই ধ্বংসযজ্ঞের ওপর নতুন বিপর্যয় হিসেবে উপস্থিত হয়েছে ভূমিকম্পের আফটার শক। ভূমিকম্প-পরবর্তী গত পাঁচ দিনে প্রায় ৭০ বার আফটার শকের তথ্য দিয়েছে দেশটির মেটিওরোলজি এবং হাইড্রোলজি বিভাগ। এখন পর্যন্ত হওয়া এসব আফটার শকের রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ২.

৮ থেকে ৭.৫। 

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে কাজ করছে উদ্ধারকারী ও মেডিকেল দল
মিয়ানমারের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় বাংলাদেশের উদ্ধারকারী ও মেডিকেল দলের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল দেশটির রাজধানী নেপিদোতে জুবু থিরি টাউনশিপ এবং নেপিদো এলাকার কয়েকটি ভবনে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। গতকাল আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

আইএসপিআর জানায়, অভিযানে মিয়ানমারের স্থানীয় প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিস বিভাগ সর্বাত্মক সহায়তা করছে। এ ছাড়া, উদ্ধারকারী দলের জন্য খাদ্য ও পানি সরবরাহ করে মানবিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেন মিয়ানমারের স্থানীয় লোকজন। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ভ ম কম প ভ ম কম প র

এছাড়াও পড়ুন:

দাবি মেনে নেওয়ায় অনশন ভাঙলেন জবি শিক্ষার্থীরা

দাবি মেনে নেওয়ায় ৩২ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজ্জাম্মুল হক ও অন্যান্য শিক্ষকরা আন্দোলনকারীদের জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙান। গতকাল মঙ্গলবার শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবিতে দুপুর থেকে রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেছিলেন। 

আরো পড়ুন:

যবিপ্রবিসাসের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

জানুয়ারি থেকে বিশেষ বৃত্তি পাবেন জবি শিক্ষার্থীরা

শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- শিক্ষার্থীদের সম্পূরক বৃত্তি কার্যকর হওয়ার নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা; জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ; ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি দিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে আধুনিক সুবিধা ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু।

অনশনকারী বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) সদস্য সচিব শাহিন মিয়া বলেন, “আমাদের দাবি ছিল বৃত্তি প্রদানের নির্দিষ্ট তারিখ, জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা এবং লাইব্রেরিতে সুবিধা বৃদ্ধি। প্রশাসন এগুলো মেনে নিয়েছে। কিছুটা ধোঁয়াশা থাকলেও আমরা আস্থা রেখে অনশন ভেঙেছি।”

বাগছাসের মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস শেখ বলেন, “আমাদের দীর্ঘদিনের ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নিয়ে স্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা আশা করি, প্রশাসন প্রতিশ্রুতিগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বাস্তবায়ন করবে। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন স্বপ্নের দুয়ার উন্মোচিত হবে।”

অনশনকারী শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এমকেএম রাকিব বলেন, “প্রশাসন আমাদের তিন দফা দাবি মেনে নিয়েছে, এতে আমরা সন্তুষ্ট। আশা করি, শিক্ষার্থীরা দ্রুতই তাদের কাঙ্ক্ষিত বৃত্তি পাবে এবং অন্যান্য ক্যাম্পাসের মতো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়েও নির্বাচনের আমেজ তৈরি হবে।”

অনশনে অংশ নিয়েছিলেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস), ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় দুই দশক পর এবারই প্রথমবারের মতো জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলো।

ঢাকা/লিমন/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ