অন্য ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে কী আচরণ করব
Published: 4th, April 2025 GMT
আল্লাহর নবী (সা.) অমুসলিমদের সঙ্গে কেমন আচরণ করতেন, সে-সম্পর্কে জাবের (রা.) বর্ণনা করেন, ‘একদিন আমাদের পাশ দিয়ে একটি লাশ নিয়ে যাচ্ছিল। দেখে রাসুল (সা.) দাঁড়িয়ে গেলেন। তার দেখাদেখি আমরাও দাঁড়ালাম। জিজ্ঞেস করলাম, ‘আল্লাহর রাসুল, এটা তো এক ইহুদির লাশ। রাসুল (সা.) বললেন, ‘যখন কোনো লাশ নিতে দেখবে, তখন দাঁড়াবে।’ (বুখারি, হাদিস: ১৩১১)
ইসলাম অমুসলিমের সঙ্গে সুন্দর, সদয় ও সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ করতে নির্দেশ দেয়। কোরআনে আছে, ধর্মের ব্যাপারে যারা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেনি এবং তাদের প্রতি মহানুভবতা প্রদর্শন ও ন্যায়বিচার করতে আল্লাহ তোমাদের নিষেধ করেন না। আল্লাহ তো ন্যায়পরায়ণদের ভালোবাসেন। (সুরা মুমতাহিনা, আয়াত: ৮)
মদিনা সনদের একটি ধারা ছিল—প্রত্যেকে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে এবং মদিনা রাষ্ট্রকে হেফাজত করবার জন্য একে অপরকে সহযোগিতা করবে। মুসলমানদের ওপর বহিঃশত্রু আক্রমণ করলে মুসলমানদের পক্ষ হয়ে ইহুদিরা লড়বে, ইহুদিদের ওপর আক্রমণ হলে মুসলমানরা মদিনা রাষ্ট্রকে হেফাজত করবার জন্য ইহুদিদের পক্ষ হয়ে বহিঃশত্রূ মোকাবিলা করবে।
আরও পড়ুনআত্মহত্যা অনুচিত ও মহাপাপ২২ জানুয়ারি ২০২৫এ রকম আরও অনেক চুক্তি ছিল, যা থেকে বোঝা যায়, যে ভূখণ্ডে বিভিন্ন ধর্ম-গোত্রের মানুষ একত্রে বসবাস করে, সেখানে নিরাপত্তার ক্ষেতে একে অন্যের সহযোগী হবে।
ইসলামের বিধান হলো, ভিন্ন ধর্মের উপাসনালয়ে সাধারণ অবস্থায় তো বটেই, যুদ্ধাবস্থায়ও হামলা করা যাবে না। কোনো উপাসনালয় জ্বালিয়ে দেওয়া যাবে না। রাসুল (সা.
অমুসলিমের বাড়িতে আসা-যাওয়া করতে এবং তার থেকে বৈধ, হালাল খাবারও গ্রহণ করতে বাধা নেই। রাসুল (সা.) নিজে অমুসলিমদের ঘরে খাবার খেয়েছেন এবং তিনি নিজেও তাদের খাইয়েছেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.)-এর ঘটনা। একদিন তার ঘরে একটি বকরি জবাই করা হলো। খাবার রান্না হলে তিনি তার দাসকে জিজ্ঞেস করলেন, আমাদের ইহুদি প্রতিবেশীকে কি খাবার দিয়েছ?’ এরপর তিনি বললেন, ‘আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, প্রতিবেশীর বিষয়ে জিবরাইল (আ.) আমাকে এত উপদেশ দিচ্ছিলেন, আমি মনে করছিলাম, তিনি হয়তো তাদের ওয়ারিশই বানিয়ে দেবেন।’ (তিরমিজি হাদিস: ১,৯৪৩)
আরও পড়ুনআল্লাহর রহমত হিসেবে বৃষ্টি আসে ০৩ জানুয়ারি ২০২৫রাসুল (সা.) ভিন্ন ধর্মের মানুষকে প্রাপ্য সম্মান দিতেন। একজন অবিশ্বাসী নেতাকে যুদ্ধবন্দি হিসেবে এনে মসজিদে নববীর খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখা হলো। রাসুল (সা.) এসে দেখেন, তার হাত শক্ত করে বাঁধা, এতে তার কষ্ট হচ্ছে। তিনি বললেন, তার বাঁধন হালকা করে দাও। সাহাবিরা তা-ই করলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২,২৯১)
অমুসলিমদের অন্যায়ভাবে হত্যা করা নিষেধ। যেসব অমুসলিম মুসলিম দেশে জিম্মি হিসেবে (মুসলিম রাষ্ট্রের আইন মেনে) বসবাস করে, তাদের তাদের আঘাত করা অন্যায়। হাদিসে আছে, ‘যে ব্যক্তি কোনো অমুসলিম নাগরিককে হত্যা করল, সে জান্নাতের সুগন্ধিও পাবে না, অথচ তার সুগন্ধি ৪০ বছরের রাস্তার দূরত্ব থেকেও পাওয়া যায়।’ (বুখারি হাদিস: ৩,১৬৬)
আরও পড়ুনঋণ থেকে মুক্তির জন্য যে আমল করবেন২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আল ল হ
এছাড়াও পড়ুন:
অফিসে প্রেম করার আগে জেনে রাখুন
আমরা যাঁরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করি, তাঁদের দিনের বড় একটি অংশ সহকর্মীদের সঙ্গেই কাটে। আসা–যাওয়া আর ঘুমের সময়টুকু বাদ দিলে দেখা যাবে, পরিবারের সদস্যদের চেয়ে তাঁদের সঙ্গেই কাটছে বেশি সময়। স্বাভাবিকভাবেই সহকর্মীদের সঙ্গে একধরনের সম্পর্ক তৈরি হয়ে যায়, তাঁরা হয়ে ওঠেন বন্ধু, মনের কথা ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গী। কখনো কখনো এই সম্পর্ক পেশাগত সীমারেখাও ছাড়িয়ে যায়।
প্রশ্ন হলো, সহকর্মীদের সঙ্গে আচরণের ক্ষেত্রে এই সীমারেখা কোথায় টানতে হবে? অফিসে বা বাইরে বিপরীত লিঙ্গের সহকর্মীর সঙ্গে কোন কথাটা বলা যাবে, কোন ঠাট্টাটা করা যাবে, মোটের ওপর কতটা মেলামেশা করা যাবে?
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে কোল্ডপ্লের কনসার্ট দেখতে গিয়ে অন্তরঙ্গ অবস্থায় ক্যামেরায় ধরা পড়েন মার্কিন সফটওয়্যার সংস্থা অ্যাস্ট্রোনোমার প্রধান নির্বাহী অ্যান্ডি বায়রন ও সংস্থাটির এইচআর প্রধান ক্রিস্টিন ক্যাবট। যাঁদের দুজনেরই রয়েছে আলাদা পরিবার। তাঁদের সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই অফিসের ক্ষেত্রে সহকর্মীর সঙ্গে সম্পর্ক কেমন হবে, একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিদের মধ্যের সম্পর্ক নৈতিকতার কোন মানদণ্ড মেনে চলবে, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
সহকর্মীর সঙ্গে কেমন আচরণ করবেন সেসব নিয়ে প্রতিটি ভালো অফিসেই আচরণবিধি থাকে