Samakal:
2025-09-18@03:03:06 GMT

আমরা এখনও এশিয়ায় শীর্ষে

Published: 5th, April 2025 GMT

আমরা এখনও এশিয়ায় শীর্ষে

কম বয়সে মেয়ের বিয়ে দিলে যৌতুকও দিতে হয় কম। তাই অভিভাবকরা মেয়েদের বাল্যবিয়ে দিতে উৎসাহিত হন। বগুড়া ও জামালপুর অঞ্চলে পরিচালিত এ জরিপে দেখা যায়, যেখানে ১৬ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দিলে গড়ে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দিতে হচ্ছে, সেখানে মেয়ের বয়স ১৬ থেকে ১৮ বছর হলে যৌতুকের টাকার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৮০ হাজার এবং মেয়ের বয়স ১৮ থেকে ১৯ বছর হলে মা-বাবাকে দিতে হচ্ছে গড়ে এক লাখ টাকা। : পপুলেশন কাউন্সিলের অ্যাকসেলারেটিং অ্যাকশন টু অ্যান্ড চাইল্ড ম্যারিজ ইন বাংলাদেশ প্রকল্পের জরিপের ফল

চিত্র এক: নোয়াখালী জেলার কবিরহাট সরকারি কলেজে প্রথম বর্ষে পড়ছে শাহীনুর বেগম। বয়স ১৭। লেখাপড়া শেষ করে কী করবে– জিজ্ঞেস করলে শাহীনুর জানায়, ‘সংসার করব হয়তো। মা-বাবা ছেলে দেখছে বিয়ের জন্য। আমার বেশির ভাগ বান্ধবীই স্কুলে থাকতে বিয়ে হয়ে গেছে। আমাকে কলেজে ভর্তি করা হয়েছে। কারণ আমার এখনও বিয়ে হয়নি। বিয়ে হলে হয়তো লেখাপড়াও বন্ধ হয়ে যাবে।’
চিত্র দুই: নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ দলিত কলোনির ঋষি সম্প্রদায়ের মেয়েদের ১২ থেকে ১৩ বছরের মধ্যেই বিয়ে হয়ে যায়। কারণ মেয়েরা বেশির ভাগ স্কুলে যায় না। ছেলেরা তাদের প্রথাগত কাজ শুরু করে অল্প বয়সে। তারা খুব তাড়াতাড়ি বিয়েও করে। এ ছাড়া কলোনির মধ্যে সবার কাছাকাছি থাকা ও কমন ওয়াশরুম ব্যবহার, উৎসব অনুষ্ঠান সব একসঙ্গে হয়। ফলে ছেলেমেয়েদের মধ্যে যোগাযোগ বেশি হয়। ফলে কম বয়সে নিজেরাই বিয়ে করে অথবা পালিয়ে বিয়ে করে।
চিত্র তিন: কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী ও মিঠামইন উপজেলার বেশির ভাগ স্কুলের ছাত্রীর দশম শ্রেণিতে ওঠার আগেই বিয়ে হয়ে যায়। দেখা যায়, ঈদ বা বড় কোনো ছুটির পর ছাত্রী কমে যায় স্কুলে। কারণ বড় ছুটিতে এ বিয়েগুলো হয়। মাদ্রাসার ছাত্রীদের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা আরও বেশি। 
সমাজে নারীর অবস্থান উন্নতি যে হয়নি, তা নয়। নারীরা এখন সব ধরনের কাজেই অংশ নিচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র নারীরা এখনও পিতৃতন্ত্রের ফাঁদ থেকে বের হতে পারেননি। জন্ম, বিয়ে, বহু সন্তানের মা হওয়া, অল্প বয়সে রোগে, রক্তস্বল্পতায় ভোগে মৃত্যু– এটিই মোটামুটি তাদের নিয়তি। পাশাপাশি বেড়েছে জনপরিসরে নারীর চলাচলের অনিরাপত্তা। নারী শিক্ষার্থীর ঝরে পড়া ও বাল্যবিয়ে বন্ধ না হওয়ার একটা বড় কারণ কন্যাশিশুর নিরাপত্তাহীনতা। নারীর ওপর ধর্ষণ, অপহরণ বা অপবাদসহ অন্যান্য শারীরিক নির্যাতন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হলে বাল্যবিয়ের অভিশাপ থেকে বের হওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এসব পরিস্থিতি মেয়েশিশুর বাল্যবিয়ের হার আশঙ্কাজনক বাড়িয়ে দেয়।
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ে হয় এমন দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম। এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে। গত ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে প্রকাশিত ইউনিসেফ, ইউএনউইমেন এবং প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের একটি যৌথ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ‘গার্লস গোলস: হোয়াট হ্যাজ চেঞ্জড ফর গার্লস? অ্যাডলসেন্ট গার্লস রাইটস ওভার থার্টি ইয়ার্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বাংলাদেশে ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী নারীর মধ্যে ৫১ দশমিক ৪ শতাংশেরই বিয়ে হয়েছে ১৮ বছর হওয়ার আগে।
দেশের হাওর ও চরাঞ্চলের মতো অনগ্রসর এলাকায় বাল্যবিয়ের প্রবণতা বেশি। বাল্যবিয়ে নিরোধে সরকারের করা জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের গতি ধীর। সম্প্রতি নিউইয়র্কে অনুষ্ঠেয় কমিশন অন দ্য স্ট্যাটাস অব উইমেনের (সিএসডাব্লিউ-৬৯) উনিশতম অধিবেশনে বাংলাদেশের দলিত নারীর প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন চা বাগানের দলিত নেত্রী তামান্না সিং বাড়াইক। তিনি বলেন, ‘১৯৯৯ বেইজিং ঘোষণা’য় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নারীর সার্বিক উন্নয়নে যেসব অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছিল, সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ১৬টি লক্ষ্যের অর্ধেকও পূরণ করতে পারেনি কোনো দেশ। বিশ্বের অনেক দেশ তাদের কিশোরী মেয়েদের বিকাশের জন্য বিনিয়োগ করে শুধু ব্যক্তিগত বা পারিবারিক পর্যায়েই নয়, দেশের সার্বিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ব্যাপক সুফল লাভ করেছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। কেননা এখানে প্রতিনিয়তই নানা বৈষম্য, সহিংসতা, বাল্যবিয়ে, শিক্ষার সুযোগের ঘাটতি এবং সুযোগ স্বল্পতার সঙ্গে লড়াই করতে হচ্ছে কিশোরীদের।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞ ড.

আইনুন নাহার বলেন, ‘বাল্যবিয়ে আমাদের সমাজ, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির সঙ্গে এমনভাবে যুক্ত হয়ে গেছে, কেবল আইন করে এ থেকে বের হওয়া মুশকিল। কারণ, এটির একদিকে আছে দারিদ্র্য, অন্যদিকে কাঠামোগত বৈষম্য। এলাকাভেদে, শ্রেণিভেদে এই হারের পার্থক্য হয়ে থাকে। যেমন– অপেক্ষাকৃত ধনী, শিক্ষিত পরিবারে বাল্যবিয়ে কম হয়; আবার দরিদ্র ও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাল্যবিয়ের হার বেশি। কারণ সেখানে মেয়েকে পরিবারের বোঝা মনে করা হয়। সেই সঙ্গে নিরাপত্তার অভাবেও মেয়েদের তাড়াতাড়ি বিয়ে হয়ে যায়। হাওরাঞ্চলে মেয়েরা বছরের ছয় মাস ঘরে বসে থাকে। তারা গার্মেন্টসে বা বাসাবাড়ির কাজেও ঢাকায় আসে না। ফলে বসিয়ে বসিয়ে মেয়েকে কে খাওয়াবে! মেয়ের বয়স যত বেশি হবে তত বেশি যৌতুক দিতে হবে। তাই তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে ঘাড়ের বোঝা নামান মা-বাবা।’
সাতক্ষীরা, বরিশাল অঞ্চলে ভিন্নচিত্র। এখানে মেয়েশিশুর শিক্ষার হার বেশি হলেও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মেয়েদের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যায়, মুখে দাগ পড়ে যায়। ফলে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিতে চান মা-বাবা।
জাতীয় প্রতিষেধক ও সামাজিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের (নিপসম) সহযোগী অধ্যাপক সাথী দস্তিদার বলেন, ‘বাল্যবিয়ের কারণে কী যে হয় না সেটি বলা মুশকিল। মা-বাবার দারিদ্র্য বা সামাজিক নিরাপত্তার কারণে অথবা ছেলেমেয়ের নিজের ইচ্ছাতেই হয়তো বাল্যবিয়ে হয়েছে। এর ফল ভয়াবহ। বাল্যবিয়ের ফলে মেয়েটি অল্প বয়সে মা হয়। এটি মা ও সন্তানদের সামগ্রিক স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও বিকাশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। শারীরিক ও মানসিকভাবে অপরিণত হওয়ার কারণে সন্তান জন্মদানের সময় মা ও শিশুর মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। অনেক ক্ষেত্রে গর্ভধারণজনিত নানা সমস্যা যেমন– অবস্টেট্রিক ফিস্টুলার শিকার হতে হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, ২০ থেকে ২৪ বছর বয়সী অন্তঃসত্ত্বা নারীর তুলনায় ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী অন্তঃসত্ত্বার মৃত্যুঝুঁকি থাকে পাঁচগুণ বেশি।’
২০১৭ সালের বাল্যবিয়ে নিরোধ আইনে বলা হয়, পুরুষের ক্ষেত্রে বিয়ের ন্যূনতম বয়স ২১ এবং নারীর ক্ষেত্রে ১৮। এর কম বয়সী কারও বিয়ে হলে সেটি হবে বাল্যবিয়ে। কিন্তু এখানে একটি বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘এই আইনের অন্যান্য বিধানে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বিধি দ্বারা নির্ধারিত কোনো বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্ত বয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থে, আদালতের নির্দেশ এবং পিতা-মাতা বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতিক্রমে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণক্রমে, বিবাহ সম্পাদিত হইলে উহা এই আইনের অধীন অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে না।’ অর্থাৎ ঘুর পথে আইনেও বাল্যবিয়ের বিধান নথিবদ্ধ করা আছে।
২০১৭ সালের শেষ দিকে পপুলেশন কাউন্সিলের অ্যাকসেলারেটিং অ্যাকশন টু অ্যান্ড চাইল্ড ম্যারিজ ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় করা জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে, কম বয়সে মেয়ের বিয়ে দিলে যৌতুকও দিতে হয় কম। তাই অভিভাবকরা মেয়েদের বাল্যবিয়ে দিতে উৎসাহিত হন। বগুড়া ও জামালপুর অঞ্চলে পরিচালিত এ জরিপে দেখা যায়, যেখানে ১৬ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দিলে গড়ে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দিতে হচ্ছে, সেখানে মেয়ের বয়স ১৬ থেকে ১৮ বছর হলে যৌতুকের টাকার পরিমাণ বেড়ে দাঁড়ায় ৮০ হাজার এবং মেয়ের বয়স ১৮ থেকে ১৯ বছর হলে মা-বাবাকে দিতে হচ্ছে গড়ে এক লাখ টাকা।
একটি দেশের কন্যাশিশুর নিরাপত্তা ও উন্নয়ন কার্যত সমাজের সামগ্রিক উন্নয়ন নির্দেশ করে। মেয়ে শিশুদের শিক্ষা অবৈতনিক করে দেওয়ার পর দেশে মেয়েদের শিক্ষার হার এমনকি উচ্চশিক্ষার হারও বেড়েছে। এ কথা আমরা সবাই জানি, যখন মেয়ে শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষায় থাকে, তখন তাদের বাল্যবিয়ে কম হয়। বাংলাদেশে এখনও অনেক কন্যাশিশু স্কুলে যায় না। এটা সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে আমাদের সমাজে নেতিবাচক প্রভাব রাখে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক কাবেরী গায়েন বলেন, ‘বাল্যবিয়ের একটি সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে আমাদের সমাজে। তারা রুগ্‌ণ, অসুস্থ শিশুর জন্ম দিচ্ছে। তারা পড়াশোনায় থাকছে না, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে থাকছে না। ফলে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তার যে অবদান থাকার কথা, তা সে দিতে পারছে না নাগরিক হিসেবে। সে যে শ্রমটা দিচ্ছে পরিবারে তার কোনো মূল্যায়ন থাকছে না। সংসারে তার প্রাপ্য সম্মানটুকুও থাকছে না। ফলে সে পরনির্ভরশীল হয়ে থাকছে। এতে যৌতুক, নারী নির্যাতন বাড়বে। পরবর্তী প্রজন্মে নারীর প্রতি সম্মান করা, সমতাভিত্তিক সমাজের যে চিন্তা আমরা করি, তা ভয়াবহভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।’ 

লেখক: কান্ট্রি ফোকাল পয়েন্ট-বাংলাদেশ
এশিয়া দলিত রাইটস ফোরাম (এডিআরএফ)

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম য় র বয়স বছর হল বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত

ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।

মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স। 

গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’

পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।

হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।

আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।

সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’ 

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব মাওবাদীদের
  • হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত