শান্তদের জিম্বাবুয়ে সিরজের ক্যাম্পে ছাড়তে চায় না ক্লাবগুলো
Published: 6th, April 2025 GMT
ঈদের ছুটি শেষে সরগরম দেশের ক্রিকেটাঙ্গন। ঢাকা লিগের খেলা ইতিমধ্যে গড়িয়েছে মাঠে। এর মাঝে শুরু হয়েছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের প্রস্ততি নিয়ে পরিকল্পনা।
কয়েক দিনের মাঝে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজকে ঘিরে, সিলেটে শুরু হবে জাতীয় দলের ক্যাম্প। প্রথম টেস্ট শুরুর আগে প্রায় ১০ দিন ক্যাম্প হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু একই সময়ে ঢাকা লিগ চলায় জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের এখনই ছাড়তে চায় না ক্লাবগুলো। ইতিমধ্যে আবাহনী-মোহামেডান বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) অনুরোধ করেছে, শেষ সময় পর্যন্ত ক্রিকেটার ধরে রাখার ব্যাপারে।
ক্লাব সূত্র থেকে রাইজিংবিডি বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হয়েছে। ক্লাবের চাওয়া ক্রিকেটাররা, শেষ মুহুর্তে ক্যাম্পে যোগ দিক। ইতি মধ্যে বিসিবিকে চিঠিও দিয়েছে ক্লাব দুটি।
আরো পড়ুন:
ওয়াসিম-ইমরান পারলে তাসকিন কেন পারবে না, সুজনের প্রশ্ন
লাহোরকে চ্যাম্পিয়ন করানোর চ্যালেঞ্জ রিশাদের
আবাহনীতে আছেন টেস্ট দলের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক আর নাহিদ রানার মতো প্রথম সারির ক্রিকেটার। মোহামেডানে আছেন মেহেদী হাসান মিরাজ, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, মুশফিকুর রহিম ও তাইজুল ইসলামরা।
তারা যদি আগেভাগে ক্যাম্পে যোগ দেন তাহলে দলের পারফরম্যান্সে প্রভাব পড়বে বলে মনে করে ক্লাবগুলো। এখন পর্যন্ত ৯ রাউন্ড শেষে শীর্ষ দুই স্থানে আছে আবাহনী ও মোহামেডান।
চলতি বছরের শুরু থেকে বাংলাদেশ ব্যস্ত সাদা বলের ক্রিকেটে। বিপিএল, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর এখন চলছে ঢাকা লিগে। পর্যাপ্ত প্রস্তুতি না নিয়ে মাঠে না নামকে প্রভাব পড়তে পারে পারফরম্যান্সে।
প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্নে মেহেদী হাসান মিরাজ বলেন, “দেখুন আমরা ডিপিএলের ভেতরে আছি অনেক দিন থেকে। এটা ওয়ানডে টেস্টের মতোই প্রায়। টি-টোয়েন্টি না কিন্তু, যে এসেই মারতে হবে। আমরা টেস্টের আগে ১০ দিনের সময় পাবো। ঐ সময়ে আমরা নিজেদেরকে প্রস্তুত করে নিতে পারব।“
২০ এপ্রিল থেকে সিলেটে শুরু হবে জিম্বাবুয়ে সিরিজের প্রথম টেস্ট। ২৮ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট হবে চট্টগ্রামে।
ঢাকা/রিয়াদ/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।
তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।
ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।
প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।
তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।
এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।
তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।
চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।
এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।
এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।
অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।