ভোলার সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ও চরসামাইয়া ইউনিয়নে পানিতে ডুবে তিন শিশু মারা গেছে। আজ রোববার দুপুর ১২টার দিকে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। থানা–পুলিশ, স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ও ভোলা সদর হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সাহাদাৎ মো. হাচনাইন পারভেজ বলেন, সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মো.

কামালের মেয়ে তামান্না (১৩) ও মো. মহিউদ্দিনের ছেলে তানজিল (৮) আজ দুপুর ১২টার দিকে এবং ভেলুমিয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ফরাজিকান্দি গ্রামের মো. রুবেল চৌধুরীর ছেলে মো. জিসান (৬) আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পানিতে ডুবে মারা যায়। এসব ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।

মারা যাওয়া তামান্নার মামাতো ভাই মো. হাবিবুর রহমান বলেন, মাছ চাষ করার জন্য বাড়ির পাশের পুকুরে খাল থেকে পানি প্রবেশ করাচ্ছিলেন লোকজন। এ সময় মো. মহিউদ্দিনের ছেলে তানজিল সেখানে খেলতে গিয়ে স্রোতের মুখে ডুবে যায়। তাকে উদ্ধার (বাঁচাতে) করতে গিয়ে তামান্না ঝাঁপ দিয়ে ডুবে যায়। তানজিল সাঁতার না জানলেও তামান্না সাঁতার জানত। দুজনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। তামান্না মা–বাবার একমাত্র মেয়ে। তানজিলের এক বোন আছে।

মৃত জিসানের চাচা মিলন চৌধুরী জানান, তাঁর চাচাতো ভাই রুবেল চৌধুরী মিরবাজারে চায়ের দোকানে আর মা ঘরের কাজে ব্যস্ত ছিলেন। ঘরের পাশেই পুকুর। সেই পুকুরঘাটে জিসানরা দুই ভাইবোন গোসল করতে যায়। ঘাট থেকে পিছলে জিসান পানিতে পড়ে গেলে বড় বোন চিৎকার করে। কিন্তু ঘরের পাশে স মিল চালু থাকায় চিৎকারের শব্দ মায়ের কানে পৌঁছায়নি। লাশ ভেসে উঠলে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ